আল্লাহর বিচারালয়ে নেতার জওয়াবদিহি একজন সাধারণ মুমিনের জওয়াবদিহির চেয়ে কঠোরতর হবে । এই জওয়াবদিহি সম্পর্কে সত্যকার অর্থে কোন সচেতন ব্যক্তি নেতৃত্বের পদ লাভের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করবে, এটা স্বাভাবিক নয় । যদি কোন ব্যক্তির কথা আচরণ থেকে প্রমাণিত হয় যে নেতৃত্ব পদের প্রতি তার লোভ রয়েছে তাহলে বুঝতে হবে যে সেই ব্যক্তি ব্যাধিগ্রস্ত ।
একমাত্র আত্মপুজারী বা স্বার্থান্ধ ব্যক্তিই ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্ব পদ লাভের জন্য প্রার্থী হতে পারে । এই ধরনের কোন ব্যক্তি যাতে ইসলামী সংগঠনের কোন পদ পেতে না পারে সেই ব্যাপারে আল্লাহ রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সদা-সতর্ক ছিলেন ।
আরবী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ, নেতৃত্ব পদ প্রার্থী হয়ো না । কারণ প্রার্থী না হয়ে নেতৃত্ব প্রদত্ত হলে তুমি এই ব্যাপারে সহযোগীতা পাবে । আর প্রার্থী না হয়ে নেতৃত্ব প্রদত্ত হলে তুমি এই ব্যাপারে সহযোগীতা পাবে । আর প্রার্থী পয়ে নেতৃত্ব পদ পেলে তোমার ওপরই যাবতীয় দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দয়া হবে ।” সহীহ মুসলীম
আরবী
“আল্লাহর শপথ, আমরা এমন কোন লোকের ওপর এই কাজের দায়িত্ব অর্পণ করবো না যে এর জন্য প্রার্থী হয় বা অন্তরে এর আকর্ষণ পোষণ করে ।” সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম
পদ-লোভী সাধারণত: পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব পদে আসীন হবার চেষ্টা করে । কিন্তু এই লোভ যখন মাত্রাতিরিক্ত হয় তখন সে পরোক্ষ ভূমিকা বাদ দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে নেমে পড়ে । নিজেকে নেতা ঘোষণা করে সে লোকদেরকে তার নিকট বাইয়াত হওয়ার আহব্বান জানায় ।
খুলফায়ে রাশিদিনের পর মুসলিম উম্মাহ এই ধরণের দু:খজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছ । স্বঘোষিত নেতাদের হাতে পড়ে মুসলিম উম্মাহকে বহু দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ।
মুসলিম উম্মাহ যে পরবর্তী যুগগুলোতে এই ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে আল্লাহ তার রাসূলকে হয়(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাহাবীগণকে এই সম্পর্কে অবিহিত করেছেন । এই ধরনের পরিস্থিতির মুকাবিলা করার জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া বাঞ্ছনীয় তাও তিনি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন । আল্লাহর রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
আরবী
“অচিরেই আমর পরে বেশ কিছু সংখ্যক খালীফা হবে ।” সাহাবীগণ বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল, তখনকার জন্য আমাদের প্রতি আপনার কী নির্দেশ ?,” - সহীহ মুসলিম
আরবী
“এবং কেউ যদি নেতার নিকট বাইয়াত করে, তার হাত রেখে এবং তার নিকট অন্তরের অর্ঘ নিবেদন করে, তাহলে সে যেন সাধ্যমতো আনুগত্য করে । অপর কোন ব্যক্তি যদি মুকাবিলায় আত্মপ্রকাশ করে তাহলে অপর জনের ঘাড় মটকে দাও ।” -সহীহ মুসলিম
আল্লাহর রাসূলের(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই বাণী থেকে বুঝা গেল যে, পদলোভী ব্যক্তিকে নেতৃত্ব পদে বরণ করে নেয়া যাবে না । তেমনিভাবে ইসলামী সংগঠন বা রাষ্ট্রের জনসমর্থনপুষ্ঠ একজন আমীর বর্তমান থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় কোন ব্যক্তিকে আমার স্বীকার করা যাবে না। স্বীকার করাতো দূরে থাক, এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহর রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
পদ লোভী ব্যক্তি দল বা রাষ্ট্রের নেতৃত্ব পদ লাভ করলে সে তা বিনাশই করে ছাড়ে তদুপরি সে তার আখিরাতেও বরবাদ করে।এই সকেই আল্লাহ রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেছেন।
আরবী
অচিরেই তোমরা নেতৃত্ব পদের অভিলাশী হয়ে পড়বে। আর কিয়ামাতের দীন এটা তোমাদের জন্য লজ্জা ও দুঃখের কারণ হবে।-(সহীহুল বুখারী)
অধ্যায়-০৫ : ইসলামী সংগঠনে পদলোভীর স্থান
☼→
ইসলামী সংগঠন
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: