১৯৪৫ সালের ২১ এপ্রিল পূর্ব পাঞ্জাবের পাঠানকোটস্থ দারুল ইসলামে প্রদত্ত বক্তৃতা।
ভূমিকা :
- নেতৃত্বের পরিবর্তন ইসলামী আন্দোলনের চুড়ান্ত লক্ষ্য।
- মুসলমানগণ এ লক্ষ্য সম্পর্কে সম্যক অবগত নয়।
- ফাসেক লোকের নেতৃত্ব পৃথিবীর সকল অশান্তির কারণ।
- এ অবস্থা থেকে বাঁচার উপায় ফাসেক লোকদের থেকে সৎ ও যোগ্য লোকদের নিকট নেতৃত্বের হস্তাস্তর।
নেতৃত্বের গুরুত্ব :
- মানব জীবনের শান্তি স্বস্তি ও নিরাপত্তা নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল।
- একটি গাড়ি ও সমাজের ক্ষেত্রে ড্রাইভার ও নেতার দায়িত্ব একই রকম।
- নেতৃত্ব সৎ হলে পাপ নি:শেষ না হলেও বিকশিত হয় না।
- অসৎ নেতৃত্বের কারণে জাতীয় জীবনে চরিত্রের অবনতি ঘটে।
- অসংখ্য ধর্ম নেতার বংশে নাস্তিকের জন্ম হয় আবার নাস্তিকের বংশে আস্তিক নেতৃত্ব তৈরী হয়।
সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা :
- সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা আল্লাহর নির্দেশ।
- দুনিয়ার সব মানুষ ইচ্ছা এবং অনিচ্ছায় হোক নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর দাস।
- ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠন অপরিহার্য।
নেতৃত্বের ব্যপারে খোদায়ী নিয়ম :
- কোন পবিত্র কাজে সফলতা সহজসাধ্য নয়।
- নেতৃত্বই বিপ্লবের চরম উদ্দেশ্য। দোয়া দ্বারা এর পরিবর্তণ হয় না।
- মানুষের মধ্যকার দুটি পারস্পরিক বিপরীত ধর্মী দিক আছে:
- মানবিক সত্ত্বা বা নৈতিক সত্ত্বা
- স্বাভাবিক বা পাশবিক সত্ত্বা
- নৈতিক সত্ত্বা পাশবিক সত্ত্বাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
মানুষের উত্থান পতন নৈতিক চরিত্রের উপর নির্ভরশীল :
- মানুষের সামষ্টিক সাফল্য বস্তুনিষ্ঠ ও নৈতিক শক্তির উপর নির্ভরশীল।
- মানুষের জীবনে মূল সিদ্ধান্তগ্রহণকারী শক্তি হচ্ছে নৈতিক শক্তি।
- মানুষকে মানুষ বলা হয় তার নৈতিক গুণের জন্য।
- নৈতিকতার প্রধান দুটি দিক
- মৌলিক মানবিক চরিত্র
- ইসলামী নৈতিক চরিত্র
মৌলিক মানবীয় চরিত্রের বিশ্লেষণ :
- মৌলিক মানবিক চরিত্রের উপর মানুষের নৈতিক সত্তার ভিত্তি স্থাপিত হয়।
- মৌলিক মানবিক চরিত্রের উদহারণ
- ইচ্ছা শক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের শক্তি
- প্রবল বাসনা
- উচ্চাশা
- নির্ভীক সাহস
- সহিষ্ণুতা
- দৃঢ়তা
- ত্যাগ তিতিক্ষা ও সাধনা
- উদ্দেশ্যের জন্য উৎসর্গ করার প্রবণতা
- সতর্কতা ও দূরদৃষ্টি
- আত্মসম্মান জ্ঞান
- সত্যপ্রিয়তা ও উদারতা
- ওয়াদা পূর্ণ করা
- এ সমস্ত গুণ মানুষের সফলতার নিয়ামক শক্তি
ইসলামী নৈতিকতা :
- ইসলামী নৈতিকতা মৌলিক মানবীয় চরিত্রের পরিপূরক
- ইসলাম মৌলিক মানবীয় চরিত্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করে সঠিক ভিত্তির উপর সুদৃঢ় করে জীবনের প্রান্তসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত করে।
- দায়ীর সকল চিন্তা খোদা নির্ধারিত গন্ডিতে আবর্তিত হয়।
- ইসলাম মৌলিক মানবীয় চরিত্রের উন্মেষ ঘটিয়ে অন্যায় প্রতিরোধ করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে।
নেতৃত্ব সম্পর্কে খোদায়ী নীতির সারকথা :
- নেতৃত্বদানকারী দলটি সমসাময়িক দল গুলোর মধ্যে যোগ্যতম বিবেচিত হবে।
- এ দলের নেতৃত্ব মৌলিক মানবীয় চরিত্রে ভূষিত এবং জাগতিক উপায় উপাদানে ব্যবহারে যোগ্য।
তবে,
- ইসলামী নৈতিকতা ও মানবীয় চরিত্রের সমন্বিত গুনের অধিকারীদের হাতে ক্ষমতা থাকবে।
- অনেকগুলি যোগ্য দলের মধ্যে সত্যনিষ্ঠ দলই ক্ষমতা প্রাপ্ত হবে।
- ব্যক্তিগতভাবে অধিকাংশ মানুষ অসৎ হলে নেতৃত্ব তাদের হাতেই থাকবে।
- কাফের ও ফাসেকি শক্তির সাথে সংঘাতের মধ্য দিয়েই দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হবে।
মৌলিক মানবীয় চরিত্র ও ইসলামী নৈতিক শক্তির তারতম্য :
- নৈতিক শক্তি বলতে মানবীয় চরিত্র হলে জাগতিক ও উপায় উপাদান বস্তুগত শক্তি অবশ্যই প্রয়োজনীয়।
- তবে, নৈতিক শক্তি বলতে মৌলিক মানবীয় চরিত্র ও ইসলামী নৈতিকতা বুঝালে বৈষয়িক ও জড় শক্তির অভাব পূরণ করা যায়।
- সাধারণ ক্ষেত্রে পূর্ণ সফলতার জন্য শুধু মৌলিক মানবীয় চরিত্রের ক্ষেত্রে ১০০% জড় শক্তির প্রয়োজন।
- তবে, ইসলামী ও মৌলিক মানবীয় চরিত্রের সমন্বয় হলে ২৫% জড় শক্তিই যথেষ্ট।
- ইসলামী ও মৌলিক মানবীয় চরিত্রের সমন্বয় না হলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে না।
ভুল ধারণার অপনোদন :
- বাহ্যিক আচার আচরণের চেয়ে আভ্যন্তরীন পরিশুদ্ধির মর্যাদা অনেক বেশী।
- সংস্কারের জন্য আভ্যন্তরীন দিকটি মূখ্য।
সংস্কারের কর্মধারা :
- আল্লাহর নিকট প্রিয় সবগুলি গুনের অধিকারী হওয়া।
- রাসূল (সা:) এর গৃহীত আন্দোলনের ধারা গ্রহণ করা।
- আভ্যন্তরীন পরিশুদ্ধির সাথে বাহ্যিক আচার আচরণের পরিশুদ্ধি করা।
- অধ্যায় ০৩ : মৌলিক মানবীয় চরিত্রের বিশ্লেষণ
- অধ্যায় ০২ : নেতৃত্বের ব্যাপারে আল্লাহর নিয়ম
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- অধ্যায় ০৮ : ভুল ধারণার অপনোদন
- অধ্যায় ০৭ : ইসলামী নৈতিকতার চার পর্যায় (ইমান-ইসলাম-তাকওয়া-ইহসান)-২
- অধ্যায় ০৬ : ইসলামী নৈতিকতার চার পর্যায় (ইমান-ইসলাম-তাকওয়া-ইহসান)-১
- অধ্যায় ০৫ : নেতৃত্ব সম্পর্কে আল্লাহর নীতির সারকথা
- অধ্যায় ০৪ : ইসলামী নৈতিকতা
3 comments:
আরে বাহ! দারুন একটা বই । ডাউনলোড করলাম। অনেক আগে এই বইটা পড়েছিলাম। তেমন একটা মনে ছিলোনা । এখন নতুন করে ঝালাই করে নিবার সুযোগ পেলাম।
নেতৃত্ব সম্পর্কে খোদায়ী নীতির সারকথা :
- নেতৃত্বদানকারী দলটি সমসাময়িক দল গুলোর মধ্যে যোগ্যতম বিবেচিত হবে।
- এ দলের নেতৃত্ব মৌলিক মানবীয় চরিত্রে ভূষিত এবং জাগতিক উপায় উপাদানে ব্যবহারে যোগ্য।
মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহিমের বেশ কয়েকটি ভাল বই রয়েছে যা উনি তার শেষ কালে লিখেছিলেন গণতন্ত্র,পুঁজিবাদ ইত্যাদির বিরোধিতা করে ও সত্যিকার নির্ভেজাল(গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদহীন) ইসলামী বিপ্লব,ইসলামী রাষ্ট্র তথা খিলাফাহ এর পক্ষ নিয়ে।বইগুলো ৮০র দশকে লেখা হলেও এখনো সময়োপযোগী।বইগুলো এখন সহজে বাজারে পাওয়া যায় না।আপনারা বইগুলো পড়ে দেখেন।বইগুলোর লিঙ্ক ১।গণতন্ত্র নয় পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব http://www.mediafire.com/?wk919ci6acp5wcx ২।প্রচলিত রাজনীতি নয় জিহাদই কাম্য http://www.mediafire.com/?0dnrhtnzvab5ifc৩।বাংলাদেশের মুসলমানরা মজলুম ও মাহরুম http://www.mediafire.com/?bixl22911gwax3l ৪। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও শুরায়ী নিজাম by মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহিম http://www.mediafire.com/?dr6sbkautvmv64g ৫।ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্যby মাওলানা আব্দুর রহিম http://www.mediafire.com/?j4b6bgtz5ab5noz