নয়ন চ্যাটার্জি নামের এই ফেসবুক পেজটি নিশ্চয়ই একটি ব্লগীয় ঐতিহ্যের ছদ্ম আইডি। আপাতত তার পরিচয়, সে কলকাতা নিবাসী একজন ব্লগার, বাংলা ভাষায় লেখালেখি করে। তবে তার লেখার ধারা কলকাতা ফোলকাতা না, নিরেট বাংলাদেশী স্মার্ট একজন ব্লগারের বৈশিষ্ট্যই প্রকাশ করে। সে যেই হোক, তার প্রতিটি লেখা খুবই চমকপ্রদ এবং সময়ের সাথে দারুন মানানসই। মাঝে একবার কি কারনে হারিয়ে গেছিলো, তখন চিন্তা করলাম তার লেখাগুলোর একটা ব্যাকয়াপ তুলে রাখিনা কেন এখানে!!
১.
“ইহুদি নারীর সাথে মুসলিমের প্রেম কাহিনী নিয়ে মিশরে বিতর্ক”
খবরটি পড়ে খুবই বিনোদিত হলাম। কারণ খবরটার সাথে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পয়েন্টে পয়েন্টে মিলিয়া গিয়াছে।খবরে (http://goo.gl/gl0snh) প্রকাশিত হয়েছে,
১) পবিত্র রমজান মাসে মিশরীয় এক ইহুদি নারীর সাথে মিশরীয় এক মুসলিম সেনা কর্মকর্তার প্রেম কাহিনীমূলক এক টিভি সিরিজ প্রচারিত হচ্ছে মিশরীয় টেলিভিশনে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র রমজান মাস হচ্ছে নাটক-সিনেমার জন্য মোক্ষম সময়। আর এই রমজানে টিভি সিরিজটার রমরমা অবস্থা।
ঠিক একইভাবে বাংলাদেশে ক্রিকেট খেলার জন্য মোক্ষম সময় হলো রমজান মাস, রমজান মাসে এদেশে ক্রিকেট খেলার রমরমা অবস্থা। এতে কারো কোন সন্দেহ নেই।
২) পরিচালক আদল বলেন, ‘মিশরে আপনি এমন অনেক ভাল ইহুদি খুঁজে পাবেন, যারা মনেপ্রাণে মিশরীয়। তারা মিশরকে খুব ভালবাসে।
ইহুদিদেরকে নিয়ে এতো ওকালতির কারণ হলো, বাংলাদেশে যেভাবে আমার সনাতনী ভ্রাতারা দেশে থেকে পাশ্ববর্তী ভারতের প্রতি আনুগত্যতা প্রকাশ করে, ঠিক সেভাবেই মিশরের ইহুদিরা মিশরের আলোবাতাসে বড় হয়ে পাশ্ববর্তী দেশ ইসরায়েলের প্রতি আনুগত্যতা প্রকাশ করে। উভয় ক্ষেত্রেই দুটি সম্প্রদায়ের ইমেজ রক্ষার্থে স্ব স্ব দেশের সুশীলদের লম্ফঝম্ফ করতে হয়।
৩) স্থানীয় এক আলোচনা সভায় মিশরীয় লেখক এটাকে অপরাধমূলক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি প্রশ্ন করছেন, একজন ইহুদি মেয়ের সাথে কিভাবে একজন মুসলিম সেনা কর্মকর্তার প্রেম হতে পারে। আর সিরিজটাতে একজন মুসলিম মেয়েকে খারাপ, অনিরাপদ এবং একজন প্রতারকের মেয়ে হিসেবে দেখানো হয়েছে।
ইহুদিদেরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখানো এবং মুসলমানদেরকে নেতিবাচক হিসেবে দেখানো, ঠিক যেভাবে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ সনাতনীদের ভালো আর মুসলমান মাত্রই সন্ত্রাসী বলে উপস্থাপন করে থাকে। স্থান ভিন্ন, ঘটনা একই।
মিশরে ইহুদিদের প্রতি মধু ঢেলে যে টিভি সিরিয়াল বানানো হয়, সেই টিভি সিরিয়ালই সবচেয়ে বেশি হিট হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয়তার কারণ, তাতে পূজা-অর্চনার আধিক্য থাকে। মিশরের মুসলমানরা হয়েছে ইহুদি, আর বাংলাদেশের মুসলমানরা হয়েছে হিন্দু।
বিপরীতে যে বই বা টিভি সিরিয়ালের পরতে পরতে মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ দেখানো হয়, সেই সিনেমা বা বই-ই আমেরিকায় বছরের পর বছর বেস্টসেলার হয়। কারণ ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের মতো বেকুব নয়।
২০১২ সালে ইরাকে মুসলমান মারার কাহিনী নিয়ে রচিত ‘আমেরিকান স্নাইপার’ বইটি এই ২০১৫ সালেও সেদেশে বেস্টসেলারের স্থান দখল করে রেখেছে। বইটির একটি মন্তব্য নিম্নরূপ-
“I don’t shoot people with Korans – I’d like to, but I don’t.”
২.
ইয়াহিয়া খান বলেছিল, মাটি চাই মানুষ নয়
আর বর্তমানে নাস্তিক আর সনাতনীরা বলে, বাংলাদেশ চাই, মুসলমান নয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের এক বামপন্থী বুদ্ধিজীবী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর একটি সাক্ষাৎকার নজরে পড়লো, যার শিরোনাম 'বাঙালি জাতীয়তাবাদের এখন আর দেয়ার কিছু নেই'। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন-
//বাঙালি জাতীয়তাবাদের পর্যায় শেষ হয়ে গেছে। আমি এ বিষয়ে বই লিখেছি, যার চতুর্থ সংস্করণ চলছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রয়োজন ছিল ১৯৭১ সালে। জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করল এবং একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলো।...
বাঙালি জাতীয়তাবাদ আছে, কিন্তু তার এখন আর দেয়ার কিছু নেই। আমার রাষ্ট্রের প্রধান সমস্যা কী? একটা হলো নদীর সমস্যা। আমাদের চুয়ান্নটি অভিন্ন নদীর প্রবাহ যে শুকিয়ে আসছে সেটা নিয়ে কি জাতীয়তাবাদীরা কথা বলছে? হিন্দির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কি তারা কথা বলছে? নরেন্দ্র মোদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দিতে বক্তৃতা দিয়ে গেলেন। পাকিস্তানের কেউ যদি উর্দুতে বক্তৃতা দিত আমরা মানতাম? অথচ মোদিকে আমরা হাততালি দিলাম।...//
সাক্ষাৎকারের শেষের প্রশ্নটি চমকপ্রদ। পত্রিকার সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেছিল
//প্রশ্ন : বাঙালি জাতীয়তাবাদী ভেটেরান বুদ্ধিজীবীদের তো শুধু সেক্যুলারিজম, মৌলবাদ এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে আগ্রহী দেখা যায় না।
সিরাজুল : বাংলাদেশ এখন সস্তা শ্রম উৎপাদনের কারখানা। তারা গার্মেন্টে কাজ করবে, গৃহভৃত্যের কাজ করবে এবং এরা সমুদ্রের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়বে, একদল চলে যাবে বিদেশে, রেমিট্যান্স পাঠাবে। সেই রেমিট্যান্স আমরা এখানে ভোগ করব, বিদেশে পাঠাব, সুইস ব্যাংকে আমাদের টাকা জমতে থাকবে। এই ভয়াবহ বিষয়গুলো নিয়ে তো বুদ্ধিজীবীরা কিছু বলছে না। তারা কেবল মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আছে।//
অর্থাৎ পাঠকেরা বুঝতেই পারছেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কেন ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ এর পর্যায় শেষ হয়ে গিয়েছে বলেছেন। একাত্তর সালে ইয়াহিয়া খান ‘মাটি চাই মানুষ নয়’ বলার কারণে পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের প্রয়োজন শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটেছিল। আর আজ বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারকবাহকেরা বলছে ‘বাংলাদেশ চাই, মুসলমান চাই না’।
মুসলমানবিরোধী অবস্থানের কারণেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারকবাহকেরা আজ হিন্দিকে মেনে নিয়েছে এবং মোদির উদ্দেশ্যে হাততালি দিচ্ছে। শেষের প্রশ্নটি লক্ষ্য করুন, বর্তমান বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির সমস্যা নিয়ে কোন কথা বলছে না। তারা পড়ে আছে মৌলবাদ নিয়ে।
কারণ দেশ ও জাতির পক্ষে কথা বললে তো আদতে মুসলমানদেরই উপকার হলো, আর বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারকবাহকেরা তা কখনোই চায় না। বিপরীতে সেক্যুলারিজম-মৌলবাদ এগুলো নিয়ে টকশো এবং ব্লগ-ফেসবুকে কচলাকচলি করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া যায়, নাস্তিক্যবাদ প্রচার করা যায়। তাই বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা সেগুলো নিয়েই মেতে আছে।
পাকিস্তান আমলে এদেশের মানুষের বাঙালি পরিচয়কে অগ্রাহ্য করার কারণে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটেছিল। আজ সেই পথ ধরে বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা যে এদেশের মানুষের মুসলমান পরিচয়কে অগ্রাহ্য করছে, তার ফলাফল কী হবে? সময়ই তা বলে দেবে।
৩.
আমি আমার পোস্টে লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশের হিন্দুরা মনেপ্রাণে ভারতীয় এবং ভারতমাতার সন্তান, এ বিষয়টি বাংলাদেশের অনেক মুসলমানই মেনে নিতে চায় না। এসব বেকুবের দল বাংলাদেশী হিন্দুদেরকে তাদের মতোই মনে করে। তাই এদের ভুল ভাঙাতে আমি অতীত ইতিহাস নিয়ে কিছু আলোচনা রাখব।
কলকাতার হিন্দুরা ঢাকা ভার্সিটি প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল, এ নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করবে না। কিন্তু ঢাকা শহরের স্থানীয় হিন্দুরাও যে ঢাকা ভার্সিটির বিরোধিতায় পিছিয়ে ছিল না, এই ইতিহাস কেউই জানে না বলা চলে। কিন্তু এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে রমেশচন্দ্র মজুমদারের আত্মজীবনী ‘জীবনের স্মৃতিদীপে’ বইতে।
রমেশচন্দ্র মজুমদার ছিলেন ১৯২১ সালে ঢাকা ভার্সিটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই তার শিক্ষক এবং ১৯৩৭ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত ঢাকা ভার্সিটির ভিসি। সুতরাং তার বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে কোন সন্দেহ থাকতে পারে না। আসুন পাঠকেরা, দেখি তিনি কী বক্তব্য দিয়েছেন-
“আশ্চর্যের বিষয় এত বড় বড় অধ্যাপক থাকা সত্ত্বেও ঢাকা শহরের হিন্দু অধিবাসীরা সাধারণতঃ বিশ্ববিদ্যালয়কে আদৌ ভালো চোখে দেখতো না। প্রথম থেকেই তাদের মনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি খুব বিদ্বেষভাব ছিল। তার একটি কারণ যে- হিন্দুরা কোনোদিনই ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করাটা পছন্দ করেনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকাটাই তাদের ইচ্ছা ছিল।” (সূত্র: জীবনের স্মৃতিদীপে, পৃষ্ঠা ১১৭, https://goo.gl/sh47CQ)
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের (গভর্নিং বডির) সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কানুন তৈরি, বাজেট পাস এবং সাধারণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সমস্ত বিষয়ের আলোচনা এবং বিতর্ক হতো। এই কোর্টে স্থানীয় হিন্দুদের একটি বড় দল ছিল। কোর্টের মিটিংয়ে প্রায় সব বিষয়েই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতো এবং নানা প্রস্তাব আনতো।” (সূত্র: জীবনের স্মৃতিদীপে, পৃষ্ঠা ১১৮, https://goo.gl/DroJE8)
“রমনায় যেসব বড় বড় বাড়ি দখল করে আমরা শিক্ষকেরা বসবাস করছিলাম এটাতেই তাদের (হিন্দুদের) ঘোর আপত্তি ছিল। একবার তাদের বলেছিলাম যে- আমরা না এলে এ বাড়ি তো আপনাদের দিতো না। সুতরাং হিংসা করেন কেন? কিন্তু বহুদিন পর্যন্ত এ মনোভাবের পরিবর্তন ঘটেনি। কোর্টের অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অনেক প্রস্তাব ও বক্তৃতা হতো। ভাইস চ্যান্সেলার হার্টগ সভাপতি থাকতো। আমাদের কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ সমর্থন করার জন্য বাকযুদ্ধে নামতে হতো। অবশ্য ভোটের সময় জয়লাভের ব্যাপারে আমরা অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিলাম। কারণ মুসলমান সভ্যেরা আমাদের পক্ষেই থাকতেন। মুসলমান এবং শিক্ষক সদস্যেরা একত্রে হিন্দুদের চেয়ে অনেক বেশি ছিলেন।” (সূত্র: জীবনের স্মৃতিদীপে, পৃষ্ঠা ৫৩, https://goo.gl/pgzEh0 )
পরিশেষে বলা যায়, সেই ১৯২১ সালে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় ভারতমাতার একনিষ্ঠ অনুগত ছিল, আজও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। ভারতমাতার প্রতি এই আনুগত্যই বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে অমরত্ব দান করবে, বাংলাদেশের স্থানীয় মুসলমানদের তুলনায় সর্বদা তাদের প্রাধান্য নিশ্চিত করবে। সবাইকে নমষ্কার।
৪.
মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বা psychological warfare হলো বর্তমান বিশ্বে যে কোন জাতির ওপর আগ্রাসন চালানোর প্রাথমিক ধাপ। মনস্তাত্বিক যুদ্ধের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এর দ্বারা কোন জাতির ব্রেনওয়াশ করে তার মধ্যে শত্রুজাতির প্রতি ভালোবাসা তৈরী করা হয়। এর ফলে উক্ত জাতি তার অধিকার আদায়ের মনোবল ও প্রতিরোধক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
তবে বাংলাদেশের ব্যাপারটি একটু অদ্ভূত। কোন বাইরের অপশক্তি নয়,বরং এদেশের ক্ষমতাসীন সরকারই এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মনস্তাত্বিক যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠদের বঞ্চিত করে সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়নের কারণে।
এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে এই অপবাদ দূর করা সম্ভব, যদি এদেশের মুসলমানদের মনমানসিকতাকে সরকারের আদলে গড়ে তোলা যায়। এই কাজটিই বর্তমান সরকার করছে ক্রিকেট টীমে হিন্দু প্লেয়ার ঢোকানোর মাধ্যমে। আমি নয়ন চ্যাটার্জি বলব, সরকার এক্ষেত্রে পুরোপুরিই সফল।
নিউইয়র্কে এটিএন বাংলার সাংবাদিক দর্পণ কবীর, একটি লেখা লিখেছেন “ভারতের পরাজয় বাংলাদেশী হিন্দুদের মন খারাপ!” এই শিরোনামে। সেখানে তিনি নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন-
//সম্প্রতি পাকিস্তানকে বাংলা ধোলাই করার পর আমার একজন শ্রদ্ধেয় দাদা উল্লাসে নাস্তা খাওয়ালেন। সেদিন তাকে যখন বললাম- বাংলাদেশ ভারতকে হারাবে এবং বিশ্বকাপে ভারত নোংরা কাজ করেছে- তখন দাদা উল্টো প্রসঙ্গ টেনে বললেন- ভারত আছে বলে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আছে। এ সব নিয়ে তর্ক এবং মৃদু মন-মালিন্য হলো। যাই হোক-ভারতের পরাজয়ের পর ঐ দাদা আমাকে ফোন করে উল্লাস প্রকাশ করেননি এবং নাস্তা খাওয়ার প্রস্তাবও দেননি। তিনি চুপসে গেছেন।// (http://goo.gl/JsCnhf)
লিঙ্কে গিয়ে লেখার নিচের কমেন্টগুলো দেখুন। সবগুলো এই যুক্তি দিয়ে ঠাসা যে, যেহেতু ক্রিকেট টীমে ২ জন হিন্দু আছে তাই হিন্দুদের কিছু বলা যাবে না! দর্পণ কবীরের দেখা গোটা নিউইয়র্কবাসী প্রবাসী হিন্দু সম্প্রদায়, যারা সেদেশে কামাই করে কখনোই বাংলাদেশে টাকা পাঠায় না, তারা দায়মুক্ত হয়ে গেল জাতীয় টীমের মাত্র ২ জন হিন্দু খেলোয়াড়ের কারণে।
মাত্র ২ জন হিন্দুর কারণে এদেশের প্রশাসনের গণ-হিন্দুকরণ নিয়ে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না, বললেই সেই ২জন হিন্দুর দোহাই দিয়ে সবাইকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হবে। আমার নিজের পোস্টেও এধরণের মতামত ব্যক্ত করেছে অনেকে। যাই হোক, আমি বাংলাদেশী মুসলমানদের নিকট ক্ষমাপ্রার্থী এজন্য যে, আমি নয়ন চ্যাটার্জি তাদেরকে এতোদিন ‘বেকুব’ বলে এসেছি। কারণ তারা বেকুবও নয়, তারা হলো নির্বোধ শিশুর দল। একটি শিশু দেশ বোঝে না, জাতি বোঝে না, সে প্রশাসন, চাকরি-ব্যবসা এগুলোর কিছুই বোঝে না। সে বোঝে কেবল খেলা, আর এই ক্রিকেট খেলার মোয়া ধরিয়ে দিয়েই এদেশের ২০ কোটি নির্বোধ শিশুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে একদিন বাংলাদেশ হবে ভারতের ৩০তম প্রদেশ।
৫.
পৃথিবীতে সবচেয়ে কূটনৈতিক শিষ্টাচার সম্বলিত দেশের নাম হচ্ছে ভারত। ভারতীয়রা তাদের দেশে আগত বিদেশীদের সাথে এতটাই সুব্যবহার করে যে, সারা জীবন ঐ ব্যবহারের কথা আগত টুরিস্টরা ভুলতে পারে না।
এই তো কয়েকদিন আগে
১) এক সুইস নারী পর্যটক হয়ে ভারতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হলেন। (http://goo.gl/hqDVyh)
২) এরপর ধর্ষণের চেষ্টা করা হলো এক ব্রিটিশ নারী পর্যটককে http://goo.gl/kNPcKC
৩) ধর্ষণ করা হলো এক জাপানি নারী পর্যটক (http://goo.gl/Ie67ed)
৪) এছাড়া ধর্ষণের শিকার হলো এক ড্যানিশ নারী পর্যটক (http://goo.gl/Ac0sNz)
৫) ধর্ষণের শিকার হলো এক সুইডিশ নারী পর্যটক (http://goo.gl/V6SMFj)
৬) ধর্ষণের শিকার হলো এক জার্মান নারী পর্যটক (http://goo.gl/Ac0sNz)
৭) ধর্ষণের শিকার হলো এক মার্কিন নারী পর্যটক (http://goo.gl/2MK31W)
৮) এক বাংলাদেশী নারী টুরিস্টকে তো ধর্ষণ শেষে হত্যাই করা হলো (http://goo.gl/VworWG)
ভারত তাদের দেশে আগত টুরিস্টদের সাথে যেমন ব্যবহার করে, তারা যখন অন্য দেশে যায়, তাদের মনের মধ্যে চিন্তা গিজ গিজ করতে থাকে, হয়ত তাদের সাথেও অনরূপ ব্যবহার করা হবে। এজন্য টুরিস্ট সুধির গৌতমরা যখন বাংলাদেশে এসে শুধু পাবলিকের ভালোবাসার ধাক্কা খায় (https://goo.gl/Lk246a) তখন বলে বসে, তাকে নিশ্চিত হত্যার উদ্দেশ্যেই ধাক্কা মারা হয়েছিলো, এবং বলাবাহুল্য সেই আজগুবি চিন্তাখানাই ভারতীয় মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার পায়। পাশাপাশি সেই খবর দেখে দেশটির নেতৃত্বস্থানীয় সংগঠন আরএসএস ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়, ‘আগামী ২০১৬ সালে বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা ভারতের টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে আসুক, তাদের কেটে টুকরো টুকরো করা হবে” (https://goo.gl/6BmpYq)।
তাই আসুন, সবাই এক বাক্যে ভারতকে আন্তর্জাতিক পর্যটক বান্ধব দেশ হিসেবে মেনে নেই এবং বাংলাদেশে পর্যটক সুধির গৌতমের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সবাইকে নমষ্কার।
‘সুধীর গৌতমের উপর বাংলাদেশী সমর্থকরা হামলা করেছে’ এমন একটি ফেইক খবর ভারতের শীর্ষ মিডিয়াগুলো খুব ফলাও করে প্রচার করছে। যেমন:
১) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (http://goo.gl/qFYGZZ)
২) আইবিএন লাইভ (http://goo.gl/aLDrbw)
৩) এনডিটিভি (http://goo.gl/g0o4Ir)
৪) জি-নিউজ (http://goo.gl/fJ0g6F)
৫) এবিপি আনন্দ (http://goo.gl/2eNBV8)
৬) আনন্দবাজার (http://goo.gl/4xyM4V)
বাংলাদেশের কয়েকটি মিডিয়াও সেই ফেইক খবর প্রচার করছে:
১) প্রথম আলো (http://goo.gl/KWGg3U)
২) মানবজমিন (https://goo.gl/gmoQb7)
সুধীর গৌতমের খবরটি যে ফেইক তার প্রমাণ এবিপি নিউজের এ ভিডিওটি (https://goo.gl/VsZljw)। ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে ২১ জুন রাতের বেলায়, খেলাও শেষ হয়েছে ২১ জুন রাতে। ভিডিওতে সুধীর গৌতম দাবিও করছে তার উপর হামলা হয়েছে রাতের বেলা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সুধীর গৌতমের ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে দিনের বেলায়। এর দ্বারা প্রমাণ হয়, পুরো ঘটনাটি সাজানো এবং কোন বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে আগে থেকেই করা হয়েছে এবং এখন সকল মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আরএসএস’র পেইজ থেকে ভারতীয়দের প্রতি আহবান করা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশী পাওয়া যাবে, সেখানেই যেন তাদের জবাই করে হত্যা করা হয় (https://goo.gl/6BmpYq)।
উপরের খবরগুলো দ্বারা এটা স্পষ্ট ভারত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সাথে লাগতে চাচ্ছে, কিন্তু দুর্বল বাংলাদেশ তার জন্য প্রস্তুত তো ??
বাংলাদেশে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থক সুধীর গৌতম নাকি বাংলাদেশী যবন (মুসলিম) সমর্থকদের দ্বারা নিগৃহীত হয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি ভারতের এবিপি আনন্দের কাছে একটি সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন (http://goo.gl/UI9O4Q) ।
এখানে অবশ্য তার উচিত ছিলো, মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের আগে বিষয়টি ভারতীয় অ্যাম্বাসির মাধ্যমে প্রশাসনকে জানানো। কিন্তু সেটা না করে মিডিয়ায় বিষয়টি প্রকাশ করে পুরো সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিয়েছে সুধীর গৌতম।
ইতিমধ্যে ভারতের আরএসএস’র ৩৩ হাজার লাইকওয়ালা পেইজ থেকে পশ্চিমবঙ্গে কোন বাংলাদেশী (তাদের ভাষায় কাঙালদেশী) দেখামাত্র তাকে জবাই করার জন্য পোস্ট দেওয়া হয়েছে। স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে:
//////// “ভগবানের শপথ নিয়ে বলছি সুধীরের এই অপমানের প্রতিশোধ নেওয়া হবে। 2016 T-20 বিশ্বকাপ ভারতে হবে এটা মনে রাখিস।আমরা ভারতীয় কাউকে প্রথমে আক্রমণ করি না কিন্তু অন্য কেউ আমাদের সাথে এই ভুলটি করলে তাকে নিঃশ্চিহ্ন করে দেই। 2016 তে ভারতে তোদের কাঙলাদেশি প্লেয়ার পা রাখার সাথে সাথেই শেষ করে দেওয়া হবে।
হে পশ্চিমবঙ্গবাসী দেখো কাঙালদেশকে। আপনারা যেখানেই কোন কাঙলাদেশি দেখতে পাবেন সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করুন।ভারত মাতার অপমান আর সহ্য হচ্ছে না।
অনেক কাঙলাদেশি প্রতিদিন কোলকাতা আসে চিকিত্সা করতে। সব নার্সিং হোমের ডাক্তারদের প্রতি আহ্বান-আপনারা যদি ভারতকে ভালবাসেন তবে একটা কাঙলাদেশি জারজ রোগী যেন বেঁচে ফিরতে পা পারে।
বিএসএফ এর প্রতি আহ্বান-কদিন আগে যেমন একটা কাঙালদেশি গরু চোরকে গলা কেটে মেরেছিলেন সীমান্তে ঠিক এই মূহূর্ত থেকে আরও নৃশংস হয়ে উঠুন।একটা কাঙলাদেশি যেন বাচতে না পারে।
আজ আর কোন সাধুতা দেখাচ্ছি না।ভারত মাতার অপমানে সব বাঁধ ভেঙে গেছে।ডাইরেক্ট কাংলাদেশি হত্যার ডাক দিচ্ছি।
সবাই রেডি তো ভারতবাসী?
জয়শ্রীরাম
হিন্দু রাষ্ট্র ভারত মাতা কি-জয়। “/////////////// ((https://goo.gl/6BmpYq))
বাংলাদেশীদের বলছি,
পশ্চিমবঙ্গে আপনাদের কেউ থেকে থাকলে দ্রুত পালিয়ে জীবন রক্ষা করতে বলুন।
৬.
একটি হাসির রহস্য উদঘাটনের চেষ্টায়..........
‘ইভিল লাফ’ বা ‘শয়তানের হাসি’ নামক একটা বিষয় মাঝে মাঝে শুনতে পাই। সাধারণভাবে সিনেমার ভিলেনরা এ হাসি প্রয়োগ করে। দুষ্কর্ম করে, অতঃপর সেই দুষ্টু কাজে সফল হলে ইভিল লাফের অস্তিত্বের দেখা মিলে।
একজন সাধারণ মানুষের জন্য সেই ‘ইভিল লাফ’ করা সত্যিই সম্ভব নয়। কেননা, সে যখন দেখে, তার দ্বারা কোন অন্যায় হয়েছে, তখন সে অন্যায়ের জন্য অনুতপ্ত হয়, তাই হাসি আসার প্রশ্ন আসে না, বরং আসে দুঃখ ও ক্ষমাপ্রার্থনা।
সে হিসেবে ‘ইভিল লাফ‘ ঐ কোয়ালিটির লোকের দ্বারা সম্ভব, যাদের সিনেমায় ভিলেনের চরিত্রে দেখানো হয়।
এবার একটু অন্যদিকে আলোচনা করছি,
ধরুন, কেউ কাউকে সজোরে আঘাত করে আহত করতে চায়, এটা কিন্তু মাত্র ১ সেকেন্ডের মধ্যে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়। বরং প্রতিপক্ষের প্রতি তীব্র বিদ্বেষের দরুণ সে আগে থেকেই মাইন্ড সেট করে রেখেছিলো ছিলো যে, সুযোগ পেলেই প্রতিপক্ষের বারোটা বাজাবে। অথবা বিদ্বেষটা শুধু ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে নয়, বরং জাতিগত, যা রক্তে-মাংশে মিশে আছে। তাই সুযোগ পাওয়া মাত্র ব্রেইনের চেতন ও অবচেতন সেকশন আর ভিন্নদিকে চিন্তা করেনি, সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। এক্ষেত্রে ধোনির ব্রেইনের কার্যক্ষমতার প্রশংসা করতে হয় বৈকি। কারণ
১) সুযোগ পাওয়া মাত্র গায়ের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আঘাত,
২) আঘাতের পরের সেকেন্ডে অপরাধ করেও নিজের পক্ষে ঘটনার মোড় নিতে উল্টো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে অ্যাম্পায়ারকে বলা (ঠিক যেখাবে আমেরিকা সাধারণ মানুষকে হত্যা করে, ‘জঙ্গীরা অন্যায় করেছে বলে মারা হয়েছে’ এমন বিবৃতি দিয়ে ঘটনার মোড় ঘুরানোর চেষ্টা করে, ঠিক সেভাবে।)
৩) সফল আঘাত হয়েছে, প্রতিপক্ষ আহত হয়েছে, আবার তার নামে অ্যাম্পায়ারের কাছে বিচারও দেওয়া হয়েছে। মিশন সাকসেসফুল। তা্ই অবচেতন মনেই ধোনীর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই ‘ইভিল লাভ’।
বি: দ্র:
বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। দু’পক্ষই অফিসিয়ালী বলেছে- এ ধরনের ঘটনা খেলার মধ্যে ঘটা স্বাভাবিক। তবে অফিসিয়ালী যাই বলা হোক, বাস্তবিক অর্থে এ ধরনের বিদ্বেষসূচক মানসিকতা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়। যেমনটা দেখা যায়- প্রতিদিন সীমান্তে সাধারণ বাংলাদেশীদের উপর, ২০০২ সালে দেখা গিয়েছিলো গুজরাটের সংখ্যালঘুদের উপর, কিংবা মাঝে মাঝে দেখা যায় আদিত্যনাথ-স্বাধ্বী প্রাচীর হেট স্পিচে। সত্যিই কথা বলতে ধোনি শুধু তাদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে মাত্র।
ছবি: ভিডিওটির ২৭-২৯ সেকেন্ডে দেখতে পাবেন সেই ইভিল লাফ: https://goo.gl/4pDLVe
৭.
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে মনুমেন্ট তৈরী করা জরুরী, তবে .........................
সম্প্রতি বাংলাদেশের টিভি উপস্থাপক অঞ্জন রায় মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর অবদানের জন্য মনুমেন্ট নির্মাণের দাবি করেছে। তার মতে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ৪ হাজার ভারতীয় সেনা নিহত এবং ১০ হাজার আহত হয়েছে।
খুব ভালো কথা। আসুন এবার দেখি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবদান কোন অংশে ছিলো---না আমার মুখে নয়, ঐতিহাসিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখেই শুনি।
১) সূত্র: বই: ‘বাংলাদেশ পাস্ট এন্ড প্রেজেন্ট’, লেখক: সালাহউদ্দিন আহমদ----
“যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পর ভারতীয় সৈন্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিক সময় অবস্থান করতে থাকায় ভারত সমালোচিত হতে থাকে। অভিযোগ উঠে যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ট্রাক বহরে করে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও সাজসরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পরিণামে বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশালী রাষ্ট্রের পরিবর্তে ভারত একটি তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় এমন একটি আশঙ্কা দেখা দেয়। তাতে ভারতীয় নীতির বিরুদ্ধে উত্তেজনা ও সংশয় সৃষ্টি হয়।” (বইটি কিনতে পারেন: http://goo.gl/koedZE)
২) সূত্র: বই: ‘র অ্যান্ড বাংলাদেশ’, লেখক: মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন-----
“পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণের পর ভারতীয় সৈন্যদের ব্যাপক লুটতরাজ দেখতে পেয়ে ভারতের প্রকৃত চেহারা আমার কাছে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। ভারতীয় সৈন্যরা যা কিছু দেখতে পেতো তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়তো এবং সেগুলো ভারতে বহন করে নিয়ে যেতো। লুটতরাজ সহজতর করার জন্য তারা আমাদের শহর, শিল্প স্থাপনা, বন্দর, সেনানিবাস, বাণিজ্যিক কেন্দ্র এমনকি আবাসিক এলাকায় কারফিউ জারি করে। তারা সিলিং ফ্যান থেকে শুরু করে সামরিক সাজসরঞ্জাম, তৈজষপত্র ও পানির ট্যাপ পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ে যায়। লুণ্ঠিত মালামাল ভারতে পরিবহনের জন্য হাজার হাজার সামরিক যান ব্যবহার করা হয়।” (‘র অ্যান্ড বাংলাদেশ’ বইটি ১৯৯৫ সালে মদীনা পাবলিশার থেকে বের হয়)
৩) সূত্র বই: ‘র অ্যান্ড বাংলাদেশ’, লেখক: মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন---
“বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারত অর্থনৈতিক, সামরিক, কৌশলগত ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হয়েছে। এ কারণে দেশটি তার নিজের স্বার্থে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সম্পৃক্ত হয়, আমাদের স্বার্থে নয়।”
৪) সূত্র: আট নম্বর সেক্টরের সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে অংশগ্রহণকারী মেজর জেনারেল খোন্দকার মুহম্মদ নূরন্নবী (অব.) এর লেখা ‘ঢাকা স্টেডিয়াম থেকে সেক্টর আট’ নামক বইয়ের ১৬৪/১৬৫ পৃষ্ঠা, সাহাদত হোসেন খান লিখিত ‘ভারতের রাজনৈতিক ও সামরিক হস্তক্ষেপ’ বইয়ের পৃষ্ঠা: ৩০২-৩০৪--------------
“সীমান্ত খোলা পেয়ে ভারতীয় মাড়োয়ারী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ে এবং স্থানীয় বাজার ও দোকানপাট থেকে সব বিদেশী মালামাল বিশেষ করে রেডিও, টেলিভিশন, খুচরা যন্ত্রাংশ, বিদেশী ওষুধপত্র অর্থাৎ যা কিছু বিদেশী সব কিনে নিচ্ছিল। এমনকি পাকিস্তানি ধাতবমুদ্রাও। এটা আমাদের জন্য একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এসময় সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ মঞ্জুর আমাদের এলাকায় এলেন। আমরা তাকে এ বিষয়ে অবহিত করলাম। তিনি জানালেন যশোরেও একই অবস্থা। সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ মঞ্জুর ভারতীয় মাড়োয়ারীদের এ ব্যবসার ব্যাপারে ভারতের চতুর্থ মাউন্টেন ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল ব্রারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভারতীয় জেনারেল ব্রার সে সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ মঞ্জুরকে জানায় যে, এদের নিয়ে সবাই অতিষ্ঠ।”
(বই দুটি রকমারি থেকে কিনতে পারবেন, (http://www.rokomari.com/book/76916, http://www.rokomari.com/book/48389)
------------------------------------------------------------------------------
এটা সবাই জানে বাংলাদেশে ভারতীয় মিত্রবাহিনী প্রবেশ করেছিলো ৩রা ডিসেম্বর, অথচ তখন যুদ্ধ প্রায় সবটাই শেষ এবং অধিকাংশ এলাকা প্রায় স্বাধীন হয়ে গেছে।
এখন প্রশ্ন জাগে, ৩রা ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনী কি বাংলাদেশকে সহযোগীতা করতে ঢুকেছিলো, নাকি অরক্ষিত দেশে লুটপাট করতে ঢুকেছিলো ??
অঞ্জন রায় দাবি করেছে, যুদ্ধে নাকি ১৪ হাজার ভারতীয় সেনা হতাহত হয়েছে (নিহত ৪ হাজার, আহত ১০ হাজার)। কিন্তু ইতিহাস তো বলে ঐ সময় যুদ্ধই নেই, তাহলে মাত্র ১৩ দিনে এত লোক হতাহত হলো কিভাবে ??
অঞ্জন রায়ের কথা যদি সত্য হয়, তবে ১৪ হাজার ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে নয়, বরং বাংলাদেশে চুরি করতে গিয়ে পাবলিকের হাতে পিটুনি খেয়ে মারা পরেছিলো।
তাই বলছিলুম কি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে একটা মনুমেন্ট তৈরী করা জরুরী, তবে সেটা যুদ্ধক্ষেত্রে অবদানের জন্য নয়, চুরির অবদানের জন্য......
৮.
আগে শুনতাম, নেকাব নাকি সন্ত্রাসী মুসলিম নারীদের পোষাক। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত ভারতের প্রচণ্ড গরমে সকল নারী-পুরুষ দল-মত নির্বিশেষে সেই সন্ত্রাসী পোষাক পরা শুরু করছে।
এজন্য দুটো কথা প্রচলিত আছে:
১) কুত্তার লেজ কখন সোজা হয় না, কিন্তু পাগল হলে সোজা হয়।
২) সাপ কখন সোজা হয়ে চলে না, কিন্তু মরে গেলে সোজা হয়।
৯.
১৯৪৮ এ ইসরাইল প্রতিষ্ঠার আগে ইহুদীরা বিভিন্নভাবে ইমোশোনালি ব্ল্যাকমেল করতো। এই ‘ইমোশোনালি ব্ল্যাকমেল’র অংশ হিসেবে, ইউরোপ থেকে আসা ইহুদী রিফিউজি বোঝাই জাহাজগুলো নিজেরাই সাগরে ডুবিয়ে দিতো, মারা পড়তো হাজার হাজার ইহুদী। এরপর তারা বিশ্বব্যাপী সেই লাশের ছবি প্রচার করতো, আর বলতো----------
“দেখ ! ইহুদীরা কিভাবে লাশ হচ্ছে ! ইহুদীরা কত নির্যাতিত, কত নিষ্পেষিত। কতদিন আর ইহুদীদের ভূমি ছাড়া রাখা হবে ? প্যালেস্টাইনের বুকে ইহুদী বসতি এখন সময়ের দাবি। এ বসতি কিছুতেই দখলদারিত্ব হবে না, বরং বিশ্ব মানবতারই অংশ হবে।”
সম্প্রতি বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জ জেলার লাঙ্গলবন্দকে আন্তর্জাতিক হিন্দু তীর্থস্থান তথা স্নানকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার করার পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার দলীয় এমপি। তবে ঘটনাগুলো কিভাবে ঘটলো আসুন একটু খেয়াল করি.......
ধাপ-১:
গুজব রটিয়ে হত্যা করা হলো ১০ জন স্নানকারীকে (http://goo.gl/PgmF6i)
ধাপ-২:
এরপর মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে খুব তোলপাড় হলো, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উপস্থাপিত হলো (http://goo.gl/CfkG4d, https://goo.gl/WpKC5v)
ধাপ-৩:
কুশিল সমাজ কথিত পূণ্যস্নানের পক্ষে ঝাপিয়ে পড়লো (http://goo.gl/kI4kI4)
ধাপ-৪:
লাঙ্গলবন্দকে আন্তর্জাতিক পূণ্যস্নান কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে আওয়ামী এমপি’র ঘোষণা দিলো (http://goo.gl/hkB2h2)
ধাপ-৫:
স্থানীয় প্রশাসন ও হিন্দুরা সেই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫০ কোটি টাকার পরিকল্পনা তৈরী করলো এবং সরকারের কাছে প্রেরণ করলো। একই সাথে কাজও শুরু হয়ে গেলো (http://goo.gl/bq6rsC)।
আপনাদের নিশ্চয়ই জানা আছে, ভারতের গঙ্গা নদীর তীরে বৃহৎ আকারে আন্তর্জাতিক স্নান উৎসব করে হিন্দু ধর্মালম্বীরা। দেশ বিদেশ থেকে হিন্দুরা সেখানে আসে স্নান করতে। ঠিক তেমনিভাবে বাংলাদেশের নারায়গঞ্জ জেলার লাঙ্গলবন্দও হয়ে উঠবে আন্তর্জাতিকভাবে হিন্দু তীর্থস্থান। সারা বিশ্ব থেকে হিন্দুরা সেখানে স্নান করতে আসবে, সারবে পাপমোচন। একই সাথে তৈরী হবে তাদের নতুন সেন্টার।
সত্যিই ভাবতে ভালো লাগে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ভারত হওয়ার দিকে।
[অনেকেই বলতে পারেন, “সরকার নিজেই তো পরিকল্পনা করে। কিন্তু এখানে স্থানীয় প্রশাসন ও হিন্দুরা পরিকল্পনা করে তারপর সরকারের কাছে পাঠালো কেন ??”
খুব সোজা, এত বৃহৎ পরিকল্পনার দায় সরকার নিজের ঘাড়ে চাপালো না। কেউ জিজ্ঞেস করলে সে নিজেই উত্তর দিবে, “এটা স্থানীয় জনগণের দাবি, অামাদের কিছু করার নাই”।]
১০.
ভাবতে ভালোই লাগে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে.........
বাংলাদেশের ভবিষ্যত নীতি-নির্ধারকদের প্রস্তুত করতে সরকার ট্রেনিং করাচ্ছে ২২ জন অতিরিক্ত সচিবকে। এদের মধ্যে ১৪ জনের নাম দেখুন....
১) তপন কুমার কর্মকার, অতিরিক্ত সচিব অর্থ মন্ত্রনালয়,
২) ড. রাখাল চন্দ্র বর্মণ, অতিরিক্ত সচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়,
৩) মানবেন্দ্র ভৌমিক, অতিরিক্ত সচিব খাদ্য মন্ত্রনালয়,
৪) পুনাব্রত চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব, ভূমি মন্ত্রনালয়ে সংযুক্ত,
৫) নিখীল চন্দ্র দাস, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, (অতিরিক্ত সচিব) জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়
৬) জ্যোর্তিময় দত্ত, অতিরিক্ত সচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে সংযুক্ত,
৭) ইতি রাণী পোদ্দার, অতিরিক্ত সচিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়,
৮) অমিত কুমার বাউল, অতিরিক্ত সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়,
৯) অশোক কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে সংযুক্ত,
১০) সত্য ব্রত সাহা, অতিরিক্ত সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়,
১১) সুশান্ত কুমার সাহা, অতিরিক্ত সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়,
১২) তন্দ্রা শিকদার, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়,
১৩) সুখকর দত্ত, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়,
১৪) জ্ঞান রঞ্জন শীল, পরিচালক (অতি: সচিব) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন ।
কি বুঝলেন ??
বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, তবে ‘সিকিম’ হওয়ার দিকে.............
১১.
রবীন্দ্রনাথ ছিল ব্রিটিশদের দালাল: ভারতের সাবেক বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু
----
ভারতের প্রেস কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু’র নাম অনেকেই শুনেছেন। সোজাসাপ্টা ভাষায় তার ফেসবুক পেজে তিনি যা লিখেন, সেটাই বিশ্ব-মিডিয়ায় তোলপাড়ের সৃষ্টি করে। কয়েকমাস আগে তিনি যুক্তিপ্রমাণসহ তার ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন, গান্ধী ইংরেজদের এজেন্ট ছিলেন (সূত্র: কালেরকণ্ঠ, http://goo.gl/37SZzJ)
সম্প্রতি তিনি লিখেছেন, “আমি হিন্দু, আমি গরুর মাংস খেয়েছি এবং আবার খাব। গরুর মাংস খাওয়ায় দোষের কিছু নেই।” (সূত্র: এনটিভি, http://goo.gl/qzrgfD
তবে সবার চোখের অন্তরালে রয়ে গিয়েছে রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে মার্কণ্ডেয় কাটজু’র মূল্যায়ন। আজকে তার ফেসবুক পেজে ঢুঁ মেরে হঠাৎ একটি পোস্টে আমার চোখ আটকে গেল, যেখানে লেখা রয়েছে-
See my blog ' The British stooge Tagore and the National Anthem ' on justicekatju.blogspot.in (সূত্র: https://goo.gl/24T9LD)
লেখাটি দেখেই কাটজু’র ব্লগস্পট সাইটে গেলাম। তিনি যুক্তিপ্রমাণসহ তার লেখায় উল্লেখ করেছেন যে, রবীন্দ্রনাথ ও ভারতের জাতীয় সংগীত, দুটোই ইংরেজদের ব্রেনচাইল্ড। তিনি লিখেছেন-
“ভারতের জাতীয় সংগীত ‘জনগণমন’ রবীন্দ্রনাথ কেন লিখেছিলেন, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রথম মত হলো, তিনি ঈশ্বরের প্রশংসা করে গানটি লিখেছিলেন। দ্বিতীয় মত হচ্ছে, তিনি গানটি লিখেছিলেন পঞ্চম জর্জের প্রশংসা করে।
আমি (মার্কণ্ডেয় কাটজু) মনে করি, দ্বিতীয় মতটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য। কারণ-
১) গানটির রচনাকাল নির্দিষ্টভাবে ১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাসে, যে সময়টিতে ব্রিটেনের পঞ্চম জর্জ ও রানী মেরি ভারতে এসেছিল।
২) গানটিতে মাতৃভূমির প্রতি কোন ভালবাসার নিদর্শন নেই।
৩) ‘অধিনায়ক’ তথা শাসকের জয় চাওয়া হয়েছে গানটিতে। ব্রিটিশআমলে শাসক কে ছিল? নিশ্চয়ই ব্রিটিশরা।
৪) গানটিতে উল্লেখিত ‘ভারত ভাগ্যবিধাতা’ কে ছিল তখন? নিশ্চয়ই তা ছিল ব্রিটিশরা, যেহেতু ১৯১১ সালে ব্রিটিশরাই ভারতের ক্ষমতায় ছিল।
৫) গানটি প্রথমবার গাওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের কলকাতা কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনে, ডিসেম্বর ১৯১১ সালে। কনফারেন্সটি পরিচালিত হয়েছিল রাজা পঞ্চম জর্জকে স্বাগতম জানাতে, এবং ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ রদ করার কারণে পঞ্চম জর্জকে ধন্যবাদ জানাতে।
৬) ১৯৩৭ সালে, যখন রবীন্দ্রনাথ নিজেকে ‘দেশপ্রেমিক’ দাবি করতে উঠেপড়ে লাগে, তখন রবীন্দ্রনাথ এটি অস্বীকার করেন যে, গানটি তিনি পঞ্চম জর্জের প্রশংসা করে লিখেছিলেন।
সুতরাং এটি প্রমাণ করে যে, গানটি লেখা হয়েছিল ব্রিটিশদের প্রশংসা করে, যা আমরা ভারতীয়রা নিজেদের জাতীয় সংগীত হিসেবে বেছে নিয়েছি।
জয় হো!
(মূল ইংরেজি লেখাটির লিঙ্ক: http://goo.gl/HJvuUn)
কেমন ছিলো জমিদার রবীন্দ্রনাথ ??
আজকাল অনেকেই প্রচার করে জমিদার রবীন্দ্রনাথ অনেক উদার ও প্রজাদরদী ছিলো। অথচ ইতিহাস তার সম্পূর্ণ বিপরীত সাক্ষ্য দেয়। আসুন দেখি ইতিহাস কি বলে:
১) “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সামন্তবাদী প্রজাপীড়ক জমিদার ছিলেন। তার দফায় দফায় খাজনা বৃদ্ধি এবং জোর-জবরদস্তি করে তা আদায়ের বিরুদ্ধে ইসমাইল মোল্লার নেতৃত্বে শিলাইদহে প্রজাবিদ্রোহ হয়েছিল। (সূত্র: অধ্যাপক অমিতাভ চৌধুরী, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, দেশ ১৪৮২ শারদীয় সংখ্যা)
২) চারিদিকে নিষ্ঠুরতা ও দুর্নামের প্রতিকূল বাতাসকে অনুকূল করতে “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাইভেট সেক্রেটারী অমিয় চক্রবর্তী একবার বিশাল জমিদারীর একটি ক্ষুদ্র অংশ দরিদ্র প্রজাসাধারণের জন্য দান করার প্রস্তাব করেছিলেন। ঠাকুরমশাই ইজিচেয়ারে আধাশোয়া অবস্থা থেকে সোজা হয়ে বলেছিলেন, “বল কিহে অমিয়। আমার রথীন (কবির একমাত্র পুত্রের নাম) তাহলে খাবে কী? (দ্রষ্টব্য: অন্নদাশঙ্কর রায়ের রচনা থেকে উদ্ধৃত পুস্তক ‘রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক চিন্তাধারা: আবু জাফর)
৩) অধ্যাপক অরবিন্দ পোদ্দার লিখেছে, “জমিদার জমিদারই। রাজস্ব আদায় ও বৃদ্ধি, প্রজা নির্যাতন ও যথেচ্ছ আচরণের যে সব অস্ত্র, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাংলার জমিদার শ্রেণীর হাতে তুলে দিয়েছিল, ঠাকুর পরিবার তার সদব্যবহারে কোন দ্বিধা করেনি। এমনকি জাতীয়তাবাদী হৃদয়াবেগ ঔপনিষদিক ঋষিমন্ত্রের পুনরাবৃত্তি এবং হিন্দুমেলার উদাত্ত আহবানও জমিদার রবীন্দ্রনাথকে তার শ্রেণীস্বার্থ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। (দ্রষ্টব্য অরবিন্দ পোদ্দার: রবীন্দ্রনাথ ও রাজনৈতিক প্রবন্ধ)
৪) সাহিত্যিক অন্নদাশঙ্কর রায়ও বলেছে, “শান্তিনিকেতনে একটি চাকরি পেয়ে তার আধা-সরকারি চাকরি ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ হলেন জমিদার মর্জির, ঠিক নেই, কখনো আবার চাকরি নষ্ট করে দিলে তার খাবার অভাব হবে। রবীন্দ্রনাথ ইন্টরালেন্ট (অসহিষ্ণু) ছিলেন। যে মাস্টার রবীন্দ্রনাথের কথার প্রতিবাদ করতেন তার চাকরি থাকতো না।”
৫) অন্নদাশঙ্কর রায় আরও বলে, “জমিদার হিসেবে ঠাকুর পরিবার ছিল অত্যাচারী। গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল, বুট পরে প্রজাকে লাথি মেরেছেন, পায়ে দলেছেন দেবেন ঠাকুর। এটাই রেকর্ড করেছিল হরিনাথ মজুমদার। যিনি মহর্ষি বলে পরিচিত, তিনি একইরকমভাবে মানুষকে পদাঘাতে দলিত করেন। গ্রাম জ্বালাবার কথাও আছে। আবুল আহসান চৌধুরীর কাছে এর সমস্ত ডকুমেন্ট আছে। সমগ্র ঠাকুর পরিবার কখনো প্রজার কোন উপকার করে নাই। স্কুল করা, দীঘি কাটানো এসব কখনো করে নাই। মুসলমান প্রজাদের টিট করার জন্য নমশূদ্র প্রজা এনে বসতি স্থাপনের সাম্প্রদায়িক বুদ্ধি রবীন্দ্রনাথের মাথা থেকেই এসেছিল। কাঙাল হরিনাথ মজুমদার তার ‘গ্রাম্যবার্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকায় ঠাকুর পরিবারের প্রজাপীড়নের কথা লিখে ঠাকুর পরিবারের বিরাগভাজন হয়েছিলেন।” (দ্রষ্টব্য দৈনিক বাংলাবাজার, ১৪.০৪.১৯৯৭ এবং ১.৫.১৯৯৭ সংখ্যা)
৬) স্বামী বিবেকানন্দের ঘনিষ্ঠ ভ্রাতা ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত তার জন্য লিখেছে, “রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত সামন্ততান্ত্রিক।”
৭) জমিদারদের বড়দেবতা হলো অর্থ আর স্বার্থ। অর্থ আর স্বার্থলাভ করতে ঠাকুর পরিবারের জমিদার হিসেবে দুর্নামের কালো দিক আড়াল করে রাখলেও প্রকৃত ইতিহাসের পাতা থেকে তা মোছা যাবে না। “ঠাকুর পরিবারের এই মহর্ষি জমিদারদের প্রতি কটাক্ষ করে হরিনাথ লিখেছেন, “ধর্মমন্দিরে ধর্মালোচনা আর বাহিরে আসিয়া মনুষ্যশরীরে পাদুকাপ্রহার, একথা আর গোপন করিতে পারি না।” (অশোক চট্টোপাধ্যায়: প্রাক বৃটিশ ভারতীয় সমাজ, পৃষ্ঠা ১২৭, ১৯৮৮)
৮) সিরাজগঞ্জে প্রজা নির্যাতনের দলিলও ইতিহাসে পাওয়া যায়। “এর প্রেক্ষিতে সিরাজগঞ্জের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের বদলির আদেশ হয়েছিল এবং যে যে জমিদার উপরের আবরণের গুণে তপস্বী বলিয়া গভর্নমেন্টে পরিচিত ছিলেন, তাহারা যে বিড়াল তপস্বী তা প্রমাণিত হয়েছিল। এসবের ফলশ্রুতিতে হরিনাথকে ঐ জমিদারের বিষনজনে পড়তে হয়েছিল।” (অশোক চট্টোপাধ্যায়, ঐ, পৃ ১২৮)
৯) কয়েক পুরুষ ধরে প্রজাদের উপর পীড়ন চালিয়েছে জোড়াসাকোর এই ঠাকুর পরিবারটি। রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর ব্যতিক্রম ছিলো না। "১৮৯৪ সনে রবীন্দ্রনাথ চাষীদের খাজনা বাড়িয়ে দিয়েছিলো,খাজনা আদায়ও করেছিলো [ তথ্যসূত্র: শচীন্দ্র অধিকারি, শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ পৃঃ ১৮, ১১৭]।"
“সব জমিদারা খাজনা আদায় করত একবার,কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এলাকার কৃষকদের থেকে খাজনা আদায় করত দুইবার। একবার জমির খাজনা দ্বিতীয় বার কালী পূজার সময় চাদার নামে খাজনা। ”
(তথ্যসূত্র: ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত, লেখক - সরকার শাহাবুদ্দীন আহমেদ )
আজকে সেই প্রজানিপীড়ক জমিদার রবীন্দ্রনাথকে বানানো হয়েছে প্রজাপ্রেমী জমিদার। ইতিহাসকে যে কতোটা বিকৃত করা হয়েছে........
১২.
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, পহেলা বৈশাখের দিন অামি একটা স্ট্যাটাস (https://goo.gl/jN23Cx) দিয়ে দেখিয়েছিলাম, এবার বৈশাখী র্যালীতে সমকামীদেরও একটা মিছিল হয়েছে। যদিও বাংলাদেশী কোন মিডিয়ায় এই খবরটি আসেনি।
কিন্তু ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন, ঢাকাস্থ সুইডেন অ্যাম্ব্যাসি’র ফেসবুক পেইজে (https://goo.gl/9hhqqx) বড় করে বলা হচ্ছে, এবার পহেলা বৈশাখে ঢাকায় সমকামীদের র্যালী বের হয়েছে (সমকামীদের র্যালীকে তারা বলে ‘রেইন বো র্যালী’)। এমনকি সুইডিশ অ্যাম্বাসেডর জোহান ফ্রাইসেল সেই সমকামী মিছিলের পাশেই অবস্থান করছিলো বলে পেইজে উল্লেখ করা হয় (https://goo.gl/J5sNAc)।
আচ্ছা, এবার বলুন তো-----
১) বাংলাদেশে সমকামীদের র্যালী হয়েছে এটা কোন মিডিয়ায় না আসলেও, সুইডিশ অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজে আসলো কেন ??
২) এবং সুইডিশ অ্যাম্বাসেডর সেই র্যালীর পাশেই কেন দাড়িয়ে ছবি তুললো ??
উত্তরটা খুব সোজা----
আপনারা যারা বিভিন্ন এনজিও’র কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা সহজে বুঝতে পারবেন। বিভিন্ন এনজিওরা বিদেশ থেকে বিভিন্ন কাজের জন্য টাকা নিয়ে আসে। এরপর সেই টাকার একটি অংশ (বেশি ভাগ মেরে দেয়) দিয়ে খুব ছোট আকারে কাজ করে এবং সেটা ভিডিও করে বা ছবি তুলে রাখে। এরপর সেই ছবি/ভিডিও দাতাদের দেখিয়ে বলে, ‘ঐ দেশের পুরোটা জুড়েই তারা কাজ করেছে’।
ঢাকাস্থ সুইডিশ অ্যাম্বাসির ক্ষেত্রে সে একই ঘটনা ঘটেছে। সুইডেন সরকার টাকা দিয়েছে বাংলাদেশে সমকামীতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আর ঢাকাস্থ সুইডিস অ্যাম্বাসি সেই টাকার একটা অংশ খরচ করে মিছিল বের করেছে, সেই ছবি তুলে তারা অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজে দিয়েছে, যদিও সারা বাংলাদেশের মানুষ জানেই না সমকামীকের মিছিল সম্পর্কে।
এ লেখাটা লেখার উদ্দেশ্য, কথিত মুক্তমনাদের কোন কাজই পশ্চিমা টাকা থেকে মুক্ত নয়, তারা বাংলাদেশে সমকামীতা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, সে জন্যও টাকা পায় সুইডেন থেকে। আশাকরি মূত্রমনাদের ব্যবসা ধরতে পেরেছেন।
১৩.
তোরা কে কোথায় আছিস ?? আমাকে ধর !!!! আমি হাসতে হাসতে মরে গেলুম !!
পহেলা বৈশাখে নাটকের আয়োজন হয়েছে শিল্পকলা একাডেমিতে , আর সেই নাটকের নাম নাকি ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’ !!! হে হে !! তোরা আমাকে কেও ধররে !!!! আমি মরে গেলুম রে !!!
আমি আগেও কয়েকবার বলেছি, বাংলাদেশীরা ইতিহাসের বই জীবনে উল্টে দেখেছে বলে আমার মনে হয় না। কারণ যে ব্যাটা তাদের জুতো মারে, সেই ব্যাটাকেই তারা কাঁধে তুলে রাষ্ট্রপতির আসনে বসায়।
উগ্রহিন্দুত্ববাদী ক্ষুদিরাম বসুর বোমাবাজির কারণে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়েছিলো, ঢাকা রাজধানীর যোগ্যতা পায়নি, রাজধানী থেকেছিলো কলকাতা। ফলে উন্নত হতে পারেনি তৎকালীন পূর্ববঙ্গ। মানে বাংলাদেশের সাথে ক্ষুদিরাম অস্তিত্ব ও চেতনা পুরোটাই সাংঘর্ষিক। যে সঠিক ইতিহাস জানে, তার জন্য একাত্তরে ক্ষুদিরাম আর একাত্তরে বাংলাদেশের জন্য ইয়াহিয়া খানের মায়া-মমতা অনেকটা একই রকম শোনানোর কথা।
যাই হোক মজা পেলাম, ক্ষুদিরাম দিয়ে বাংলাদেশীদের বাঙালীত্ব পালন দেখে।
ক্ষুদিরাম যে বাংলাদেশের মুসলমানদের ঘোর বিরোধী ছিলো, তার ফাঁসির কারণ যে বাংলাদেশী (পূর্ববঙ্গ) মুসলমানদের বিরোধীতা করতে গিয়ে সেটা জানার জন্য নিচের লিঙ্কগুলো দেখতে পারেন:
১) http://goo.gl/vvWnZm
২) http://goo.gl/Nk9qzh
৩) http://goo.gl/PLrpBM
৪) http://goo.gl/DAt4wM
৫) http://goo.gl/6UOeSW
৬) http://goo.gl/kfbPD1
১৪.
সত্যিই আমি বাংলাদেশের মুসলমানদের উদারতা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি
১) যেখানে ভারতের হিন্দুরা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদে গরু জবাই নিষিদ্ধ করে দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের মুসলমানরা হিন্দুদের সাথে গলায় গলা মিলিয়ে হোলি পূজা করছে।
২) যেখানে ভারতে সরকারি চাকুরীতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের দূর দূর করা হচ্ছে (http://goo.gl/I4u9ZP), সেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি চাকুরীতে উচ্চহারে হিন্দু নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
৩) যেখানে ভারতের হিন্দু এমপিরা মুসলমান মেয়েদের লাশ কবর থেকে তুলে ধর্ষণ করতে বলছে, সেখানে বাংলাদেশের মুসলমানরা এখনও মান্ধাতার আমলের পূর্নিমা ধর্ষণ নাটকের (http://goo.gl/przKSl) বিচার চেয়ে যাচ্ছে।
৪) যেখানে নাগাল্যান্ডে সৈয়দ ফারিদ খানকে মিথ্যা অভিযোগে হত্যা করায় ভারতীয় হিন্দুরা উল্লাস করছে, সেখানে অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুতে বাংলাদেশের মুসলমানরা বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমে লাফাচ্ছে।
৫) যেখানে ভারতের শিক্ষা সিলেবাসে মুসলমানদের হিংস্র পশু রূপে দেখানো হচ্ছে (http://goo.gl/ldSgiX), সেখানে বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে স্বরসতী পূজা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৬) যেখানে ভারতের হিন্দু নেতারা মুসলমানদের একঘরে করে ফেলার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে (http://goo.gl/weFRNO), সেখানে বাংলাদেশের মুসলমানরা দূর্গা পূজাকে সার্বজনিন হিসেবে ঘোষণা করার দাবি তুলেছে।
৭) যেখানে ভারতের হিন্দুরা ইতিমধ্যে ‘ আলী নগর’ কে ‘আর্যনগর’, ‘ উর্দু বাজার’কে হিন্দি বাজার’, ‘মিয়াঁ বাজার’ কে ‘মায়া বাজার’ নামে পরিবর্তন করেছে, সেখানে বাংলাদেশের মুসলমানরা রামগতি, গোপালপুর, রামগঞ্জ, সিকে ঘোষ রোড, কালিবাড়ী রোড, নারায়ণপুর, শ্যামাচরণ রায় রোড, কালিদাস রোড, রামকৃষ্ণ মিশন রোড নামগুলো পরিবর্তন করার কথা চিন্তাই করেনি।
৮) যেখানে ভারতে বাংলাদেশী চ্যানেলগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে ভারতীয় চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে অবাধে প্রচার পেয়ে যাচ্ছে। সিনেমাহলগুলো দখল করছে নিয়েছে হিন্দি সিনেমা।
৯) যেখানে কলকাতা বইমেলায় বিজেপি কর্মীরা বাংলাদেশী স্টল সিলগালা করে দিয়েছে (http://goo.gl/KHDiRu), সেখানে বাংলাদেশের মুসলমানরা ড্রইং রুম সাজাচ্ছে ভারতীয় ম্যাগাজিন (সানন্দা, উনিশ-কুড়ি, আনন্দবাজার, আনন্দলোক, দেশ) দিয়ে।
১০) ভারতে মুসলমানদের রক্ত হাতে মাখলেই নিরঙ্কুশ ভোটে এমপি-প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায় (গুজরাট গণহত্যার মূল মোদি এখন প্রধানমন্ত্রী), কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু তোষণ করেই এমপি-মন্ত্রী হতে হয়।
১১) যেখানে বাংলাদেশের অনলাইন জগতে হিন্দুরা নিরাপদে মুসলমানদের আল্লাহ-নবীকে গালাগাল দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ভারতের মোহসিন শেখ নামক এক ব্যক্তি শিবাজী-বাল ঠাকরের বিরুদ্ধে ছবি দেওয়ায় তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে, এমনকি মোহসিন শেখের খুনিকে হিন্দুত্ব শৌর্য পুরুষ্কারেও ভূষিত করা হয়েছে। (http://goo.gl/qIH0Ug)
১২) ভারতে সরকারি উদ্যোগে বাবারী মজজিদ ভেঙ্গে রামমন্দির করা হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে দূর্গা পূজায় সরকারী নিরাপত্তায় ২৮ হাজার পূজা মন্ডপ করে দেওয়া হয়েছে।
সত্যিই বাংলাদেশের মুসলমানরা অনেক উদার ও বিষ্ময়কর অসাম্প্রদায়িক মনমানসিকতার অধিকারী।
(ছবি : চারুকলায় দোল পূজায় হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রী )
১৫.
প্রশাসনের অবহেলায় কি দেশ স্বাধীনতা শূণ্য হবে ??
তিন পার্বত্য জেলা কি বাংলাদেশের অংশ নয় ? যদি বাংলাদেশের অংশই হয়, তবে সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয় কিভাবে ??
শুধু কি কার্যকলাপ ! প্রকাশ্যে ফেসবুকে পেইজ খুলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্বশস্ত্র সংগ্রামের হুমকি !! শ্লোগান দিচ্ছে তাদের কথিত স্বাধীন রাষ্ট্র জুম্মল্যান্ডের (খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি নিয়ে কল্পিত) নাম নিয়ে । আসুন উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তাদের CHT-jummaland নামক পেইজে কি স্ট্যাটাস দিয়েছে দেখি:
“(ছবি) তোমাদের চোখে সন্ত্রাসী, দেশদ্রোহী, বিচ্ছিন্নতাবাদী হলেও অধিকারকামী জুম্ম জনতার কাছে আমরা বীর সৈনিক । অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাসকগোষ্ঠির বিরুদ্ধে স্বশস্ত্র সংগ্রাম করে যাবো, বাংলাদেশ সরকারের পালিত জলপায়ীরা যদি পাহাড়ে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানের নামে ................ বাংলাদেশ সরকার এবং তার পালিত জলপায়ী বাহিনীকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে । শাসকগোষ্ঠি মনে রেখো অস্ত্র যখন হাতে নিয়েছি, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে অস্ত্র ত্যাগ করবো না ।...
হয় জুম্ম জাতির জন্য মরন,
না হয় জুম্ম জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ।
এই হচ্ছে আমাদের পন ।
জয় জুম্মল্যান্ড, জয় জুম্ম জনতা” (সূত্র: http://goo.gl/6RabKj)
তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে প্রশাসনের হেলাফেলা আমাকে সত্যি অবাক করে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, “কোন সরকারি কর্মকর্তা নয়, আপনি নিজ দায়িত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদ দমনে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। দয়া করে দেশকে স্বাধীনতাহীন করবেন না, উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদকে পাত্তা দেবেন না। নিশ্চিত থাকুন, রাষ্ট্রের অখণ্ডতার প্রশ্নে ১৬ কোটি জনগণ আপনার সাথে আছে।”
১৬.
নাগরিক ব্লগের প্রকাশ্যে ধর্ম অবমাননার হুমকি ও খুটির জোরের খোঁজে.....
সম্প্রতি অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম ভিত্তিক ব্লগ ‘নাগরিক ব্লগ’ থেকে প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্ম অবমাননা হুমকি দেয়া হয়েছে। ব্লগটির স্টিকি পোস্টে বলা হয়েছে:
“আমরা আজকে থেকে সক্রিয়ভাবে নাগরিকব্লগে ধর্মকে সমালোচনা করে আসা লেখাকে স্বাগত জানাচ্ছি। বিশেষত বাংলাদেশের তথাকথিত রাষ্ট্রধর্মকে নিয়ে, এই সীমাহীন অসভ্যতাকে নিয়ে আসা যৌক্তিক লেখাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
গৎবাঁধা নিন্দা জানিয়ে আর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে নিজেদেরকে আর হাস্যকর করে তুলতেও চাই না। শুধু সরকারযন্ত্রকে জানাতে চাই— আমরা তোমাদের শুয়োরসঙ্গমে সঙ্গ দিতে রাজি নই। এটা বুঝে নাও…” (http://nagorikblog.com/dar-wan/66607)
উল্লেখ্য, আইনের ৫৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, “যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রচার বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা বা অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা হাইলে তাহার এই কাজ হইবে অপরাধ।” এই আইন দোষ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড কিংবা ১ কোটি জরিমানা হবে।
এত স্পষ্ট আইন থাকার পরও কোন খুটির জোরে নাগরিক ব্লগ (মূল এডমিন: নূর নবী দুলাল, এছাড়া চট্টগ্রাম অনলাইন একটিভিটিস্ট ব্লগটি চালায়) প্রকাশ্যে ইসলাম অবমাননার ঘোষণা দিলো ?? তারা কি আইনের উর্ধে্ব ?? নাকি সরকারের কোন গোপন মহল তাকে চালায় ??
আমি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন নাগরিক ব্লগের এডমিনদের আইনত শাস্তি প্রদান করা হয়, নয়ত সরকারের আস্কারায় নাগরিক ব্লগ প্রকাশ্যে ধর্ম অবমাননার সুযোগ বলেই মনে হবে।
১৭.
অভিজিৎ রায় কি সত্যিই বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ছিলো ? নাকি বিজ্ঞানের নাম দিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়া ছিলো তার কাজ ??
এ বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করার আগে আপনাদের জানাতে চাই, অভিজিৎ রায়ের একটি বই বের হয়েছিলো যার নাম ছিলো ““সমকামিতা : একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান” । বইটিতে বিজ্ঞানের নাম দিয়ে একগাদা মিথ্যাচার সম্বলিত ছিলো। বইটির বিষয়বস্তু ও বিজ্ঞানের নাম দিয়ে মিথ্যাচার খণ্ডন করেছিলো ডক্টর মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী। সামু ব্লগ থেকে ঐ খণ্ডমূলক পোস্টটি এ স্ট্যাটাসে দেওয়া হলো:
---------------------------------------------------------------------------------
অভিজিৎ রায় বলতে চেয়েছে –
১) অনেকেই ভুলভাবে মনে করেন, সমকামিতার মত বিকৃত যৌনতার কারণেই বোধ হয় এইডস হয়ে থাকে । সমকামিতার কারণে কারো দেহে এইডসের জীবাণু গজায় না । বাহকের দেহে এইচআইভির জীবাণু থাকলে সমকামী যৌনসংসর্গে রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ঠিক ততটুকুই যা বিষমকামী যৌনসংসর্গেও ঘটতে পারে । এইডস সমকামিতা-বিষমকামিতায় বাছবিচার করেনা, যৌনসঙ্গীর দেহে এইচআইভি জীবাণু থাকলে এইডস হবে, নচেৎ হবেনা ।
২) আমেরিকার সমকামীদের মধ্যে এইডস রোগের হার বেশির পেছনে সমকামিতা অতটা দায়ী নয়, বরং আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটই বেশি দায়ী । আফ্রিকা মহাদেশে এইডসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি এবং সেখানে সমকামী নয় বরং বিষমকামী ব্যক্তিদের এইডস সংক্রমণ অনেক বেশি । শুধু আফ্রিকা নয়, সারা বিশ্ব জুড়েই বিষমকামীদের মধ্যে এইডসের প্রকোপ সমকামীদের থেকে অনেক বেশি দেখা যায় ।
৩) এইডসকে সমকামিতার সঙ্গে ট্যাগ করে দেওয়ার একটি ইতিহাস আছে, আমেরিকার সমকামীদের মধ্যে এই রোগের হার বেশি লক্ষ্য করে বিশেষজ্ঞরা ধরে নিয়েছিলেন এটা বোধহয় “সমকামিতা সংক্রান্ত” কোন রোগ হবে, সেখান থেকে এই ভুল ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে ।
৪) এরিখ মার্কোসের বইয়ের একটি লাইন তুলে দিয়েছেন –
Worldwide, the majority of people who have contracted HIV have been – and are – heterosexual. HIV/AIDS does not discriminate. It’s an equal opportunity disease that infects people who fail to use the well-understood methods to prevent its spread.
আমার (ডক্টর মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী) বক্তব্য
চিকিৎসক না হয়ে শুধু সাইট ঘেটে চিকিৎসক হওয়া যায়না, যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী অভিজিৎ বাবু । ৫ বছর ধরে এমবিবিএস পড়তে হয়, তারপর একজন চিকিৎসক হয় । আপনি ভেবেছেন, এইডস আক্রান্ত পুরুষের লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবেশ করলেই নারীর এইডস হয়ে যাবে, যা সত্য নয় । শুধু আপনি নন, আমাদের দেশের আস্তিক নাস্তিক অজস্র ব্যক্তির এই ধারণাটি রয়েছে যে একবার প্রবেশ করলেই এইডস হয়ে গেল – যা একেবারেই ভুল । সঠিক তাহলে কি ? আসুন জেনে নেই, কেন সমকামীদের মধ্যে এইডস প্রবণতা বেশি –
১) নারীর যোনীগাত্র ৩টি পুরু লেয়ারের সমন্বয়ে গঠিত এবং তাই, এটি অনেক শক্ত এবং স্থিতিস্থাপক বিধায় যৌনসঙ্গমের সময় যোনীগাত্রের চামড়াতে যে ইনজুরি হবেই, এমনটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়না । উল্লেখ্য, ইনজুরি হলেই শুধুমাত্র এইডস হবে, কিন্তু ইনজুরি না হলে এইডসের জীবাণু ব্লাড স্ট্রিমে প্রবেশ করতে পারবেনা, অর্থাৎ এইডস হবেনা । দেখা যাচ্ছে যে, পুরুষ সঙ্গীর এইডস থাকলেও তার জীবাণু নারীর ৩ লেয়ার বিশিষ্ট পুরু ও শক্ত যোনীগাত্রের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ইনজুরির স্বীকার না হয়ে রক্তপ্রবাহে মিশতে পারেনা, ফলে এইডস হয়না । কিন্তু মলাশয়গাত্র অনেক নরম এবং অস্থিতিস্থাপক, তাই লিঙ্গের ঘর্ষণে এটিতে সহজেই ইনজুরি হয়, রক্তপাত ঘটে। পেনেট্রিটিভ অ্যানাল সেক্সের কারণে মলদ্বারের চারপাশের মেমব্রেন (ঝিল্লী) সহজেই ছিড়ে যায় এবং বীর্যরসে থাকা এইডসের জীবাণু ছিড়ে যাওয়া মেমব্রেন থেকে ব্লাড স্ট্রিমে প্রবেশ করে। এজন্যেই বিষমকামী যৌনসঙ্গমে এইডস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং সমকামী যৌনসঙ্গমে অনেক বেশি।
২) একটি লিঙ্গ সহজেই রক্তপাত না ঘটিয়ে নারীযোনীতে ঢুকে যেতে পারে কিন্তু একটি লিঙ্গ মলাশয়ে সহজেই ঢুকে যেতে পারেনা, তাকে প্রেশার দিয়ে ঢোকাতে হয় এবং ঢোকাতে যেয়ে প্রায়শই রক্তপাত হয় যেখান থেকে এইডসের জীবাণু এইচআইভি রক্তপ্রবাহে চলে আসে ।
৩) যৌনসঙ্গমের সময় যোনী বেশ পরিমাণে লুব্রিক্যান্ট পদার্থ নিঃসরিত করে, কিন্তু মলাশয় থেকে এরকমের কোন লুব্রিক্যান্ট পদার্থ নিঃসরিত হয়না । তাই যৌনসঙ্গমে যোনীর সচারাচর ইনজুরি না হলেও মলাশয়ের অতিসহজেই ইনজুরি হয় যার থেকে এইডসের জীবাণু এইচআইভি অতিসহজে ব্লাড স্ট্রিমে প্রবেশ করে ।
৪) মলাশয়ের লেয়ার না থাকার কারণে ব্লাড ভেসেলগুলো একেবারে মলাশয়ের গাত্রের নিকটে অবস্থান করে, যোনীর বেশ কটি লেয়ার থাকার কারণে ব্লাড ভেসেলগুলো একেবারেই সম্মুখে থাকেনা, তাই এইচ আইভি জীবাণু মলাশয়ের মাধ্যমেই বেশি সংক্রমিত হয় ।
৫) মলাশয়ের ছিদ্রের অভ্যন্তরে জায়গা অপ্রশস্ত এবং তাই যৌনসঙ্গমের সময় মলাশয়গাত্রের সাথে লিঙ্গের ঘর্ষণের মাত্রাও বেশি, ফলে মলাশয় গাত্রের ইনজুরি হওয়াটা একেবারেই সহজ, কিন্তু যোনীছিদ্রের অভ্যন্তরে জায়গার পরিমান বেশি, তাই যোনীগাত্রে সেরূপে ঘর্ষণ হয়না এবং তাই ইনজুরিও অস্বাভাবিক ।
৬) বাচ্চাকাচ্চা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই ভয়ে না চাইলেও বাধ্য হয়ে বিষমকামিগণ কনডম ব্যবহার করেন, কিন্তু সমকামীদের ক্ষেত্রে বাচ্চাকাচ্চা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে যৌনানন্দ পরিপূর্ণভাবে পেতে তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কনডম ব্যবহার করেননা ।
৭) জন্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা বিশ্বে (Coitus Interruptus) নামক যৌনসঙ্গম মেথডটি প্রচলিত যেখানে বীর্যস্খলনের আগেই লিঙ্গকে নারীর যোনী থেকে পুল-আউট করা হয়, যাতে করে নারীর যোনী এবং ইউটেরাসে বীর্যরস গমন করে তাকে গর্ভবতী করে ফেলতে না পারে । এইচআইভি জীবাণু রয়েছে – এমন বীর্যরস যদি নারীর যোনী এবং যোনী অভ্যন্তরে না যেতে পারে, তাহলে এইডসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই ।
বাংলাভাষায় এর চেয়েও সহজ করে কখনো সমকামিতার সঙ্গে এইডসের সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়নি । যোনীতে লিঙ্গ প্রবেশের মাধ্যমেই যে এইডস হবে এই ভ্রান্ত ধারণাটি আমাদের দেশের অনেকের মধ্যেই বিরাজমান ছিলো, আশা করি এই ভুল ধারণাগুলোর অবসান ঘটবে এই লেখাটির মাধ্যমে ।
শ্রী অভিজিৎ রায়ের সুচতুরতার সঙ্গে বলেছেন, আফ্রিকাসহ সারা বিশ্বে বিষমকামীদের মধ্যে এইডস বেশি । আমিও সেটাই বলছি, আসলেই বেশি, আমি একেবারেই অস্বীকার করিনা, কিন্তু তার কথার খুঁত বা চালাকিটা কোথায়, সেটি পাঠককে ধরিয়ে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছিনা । সূক্ষ্ম চালাকিটি হলো –
পৃথিবীর জনসংখ্যার মাত্র ১০% সমকামী, অর্থাৎ বিশাল ৯০% বিষমকামী ( অ্যাপ্রক্সিমেট হিসাব, এর চেয়ে কমও হতে পারে ।
দেখুনঃ Homosexuals Admit 10% Is Wrong
সূত্রঃ http://www.traditionalvalues.org/urban/two.php
আমেরিকার জনসংখ্যারও মাত্র ৩.৫% সমকামী, অর্থাৎ বাকি ৯৬..৫% বিষমকামী ।
৯০% একটি বিশাল পারসেন্টেজ, তাতে তো এইডসে আক্রান্ত বিষমকামীর সংখ্যা মোটের ওপর বেশি হবেই, এটা তো কমন সেন্সের ব্যাপার, কিন্তু এইডস আক্রান্ত মোট জনসংখ্যার ৫৪% যদি সমকামী হয় (অর্থাৎ, ৪৬% এইডস আক্রান্ত বিষমকামী) , তাহলে সেটি কি তুলনামূলক অনুপাতে বিষমকামীদের থেকেও বিশাল পারসেন্টেজ নয় ?
সূত্রঃ As of 1998, 54 percent of all AIDS cases in America were homosexual men and according to the Center for Disease Control (CDC) nearly 90 percent of these men acquired HIV through sexual activity with other men.
(Centers for Disease Control and Prevention, 1998, June, HIV/AIDS Surveillance Report 10 (1)).
কয়েকটি দেশের উদাহরণ দেই -
২০১০ সালের বিবিসি রিপোর্ট অনুসারে যুক্তরাজ্যের মাত্র ১% জনসংখ্যা সমকামী, ৯৯% বিষমকামী ।
সূত্রঃ http://www.bbc.co.uk/news/uk-11398629
২০০৬ সালের রিপোর্ট অনুসারে অস্ট্রেলিয়ার মাত্র ২-৩% জনসংখ্যা সমকামী, অর্থাৎ বিশাল ৯৭-৯৮% বিষমকামী । এতে তো মোটের উপরে এইডস আক্রান্ত রোগীর বিচারে বিষমকামীদের সংখ্যাই বেশি হবে !
সূত্রঃ http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/17135133?log$=activity
২০০৩ সালের রিপোর্ট অনুসারে কানাডার মাত্র ১.৩% জনসংখ্যা সমকামী, অর্থাৎ ৯৮.৭% জনসংখ্যা বিষমকামী !
সূত্রঃ King et al. (1988). Canada, Youth and AIDS Study. Kingston, ON: Queen’s University
১৯৯২ সালের র্যান্ডম সার্ভে অনুসারে ১৩৭৩ জনের মধ্যে ডেনমার্কে মাত্র ২.৭% সমকামী ।
সূত্রঃ Sundet, J.M., et al. Prevalence of risk-prone sexual behaviour in the general population of Norway. In: Global Impact of AIDS, edited by Alan F. Fleming et al. (New York: Alan R. Liss, 1988), 53–60
২০০৩ সালের ডিউরেক্স গ্লোবাল সেক্স সার্ভে অনুসারে ১২% নরওয়েজিয়ান সমকামী ।
সূত্রঃ http://www.aftenposten.no/english/local/article633160.ece
২০০৯ সালে সাও পাওলো ইউনিভার্সিটির সার্ভে অনুসারে ৭.৮ % জনসংখ্যা সমকামী অর্থাৎ ৯২.২% বিষমকামী ।
সূত্রঃ http://www.mundomais.com.br/exibemateria2.php?idmateria=334
উল্লেখ্য, সমকামের মারাত্মক কুফলের কথা চিন্তা করে এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির কারণে সমকাম থেকে অনেকে তাদের ইচ্ছাশক্তির জোরে বের হয়ে আসতে পেরেছে, জনসংখ্যায় তাদের ক্রমহ্রাসমান পারসেন্টেজ এই কথাটিকে প্রমাণ করে । আর অনেকে মেন্টাল ও বিহ্যাভেরিয়াল কাউন্সেলিং ও মডিফিকেশনের মাধ্যমে এই দশা থেকে মুক্ত হয়েছে ।
অতিরিক্ত পাঠঃ http://en.wikipedia.org/…/Demographics_of_sexual_orientation
সমকামী জনসংখ্যার এত কম পারসেন্টেজে তো মোটের ওপর কম জনসংখ্যাই এইডস আক্রান্ত হবে, কিন্তু রেশিও বা আনুপাতিক বিচারে সমকামীদের মধ্যে এইডস হওয়ার প্রবণতা কি বিষমকামীদের থেকে অনেকগুণ বেশি নয় ?
বাকি থাকলো এরিক মার্কাস প্রসঙ্গ ( অভিজিৎবাবু নাম ভুল লিখেছেন, এটা মার্কাস, মার্কোস নয় ) । অভিজিৎ বাবু ভেবেছেন – মানুষ অত খেয়াল করেনা, তারা নিশ্চয়ই তথ্যসূত্র বা কে বিশিষ্ট কে বিশিষ্ট নয় তা এত যাচাই করে দেখবে না। তাই, যার তার নাম উল্টোপাল্টা তুলে দিলেই কেল্লাফতে হয়ে যাবে ! কিন্তু ডঃ মুশফিকের ঈগলদৃষ্টি এড়ানো সম্ভব নয় । এরিক মার্কাস কোন বিখ্যাত কেউ নয় । তার সম্পর্কে আসুন একটু উইকিপিডিয়া ঘুরে দেখি –
Eric Marcus is an American non-fiction writer. His works are primarily of LGBT interest
সূত্রঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Eric_Marcus
উইকিপিডিয়াতে তার সম্পর্কে কয়েক লাইন মাত্র লেখা রয়েছে, কেননা বিখ্যাত ব্যক্তি তিনি নন, সাধারণ লেখক যিনি সমকামী সাহিত্য নিয়ে আগ্রহী । পাঠকদের কাছে প্রশ্ন রাখছি – সমকামী সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক কাদের ? সমকামীদের নাকি বিষমকামীদের ?
আসুন দেখা যাক সমকামিতার সঙ্গে এইডসের গভীর সম্পর্ক রয়েছে কিনা সে সম্পর্কে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মেডিক্যাল সাইট এবং বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা কি বলে -
১) আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CDC) জানাচ্ছে - এইডসের হার সমকামীদের মধ্যে বিষমকামী অপেক্ষা ৫০% বেশি
AIDS Rate 50 Times Higher in Homosexual Men: Center for Disease Control
MSM account for nearly half of the approximately 1.2 million people living with HIV in the United States (49%, or an
estimated 580,000 total persons).
t MSM account for more than half of all new HIV infections in the United States each year (61%, or an estimated 29,300
infections).
t While CDC estimates that only 4 percent of men in the United States are MSM, the rate of new HIV diagnoses among
MSM in the United States is more than 44 times that of other men (range: 522 – 989 per 100,000 MSM vs. 12 per
100,000 other men).
সূত্রঃ
ক) http://www.cdc.gov/…/ne…/docs/FastFacts-MSM-FINAL508COMP.pdf
খ) http://www.cdc.gov/hiv/topics/surveillance/basic.htm…
গ) http://www.lifesitenews.com/news/archive/…/2009/aug/09082609
২) নামকরা চিকিৎসা বিষয়ক সাইট http://www.mayoclinic.com বলছে -
Men who have sex with men are at increased risk of contracting HIV, the virus that causes AIDS, as well as other sexually transmitted infections, including gonorrhea, chlamydia and syphilis.
সূত্রঃ http://www.mayoclinic.com/…/health-issues-for-gay-m…/my00738
৩) নামকরা চিকিৎসা বিষয়ক http://www.medicinenet.com সাইট জানাচ্ছে
According to UNAIDS, HIV is more common among gay and bisexual men than adults in general in all areas of the world, even Africa. In North America, an estimated 15 percent of gay and bisexual men are infected with HIV; the rate is the highest, 25 percent, in the Caribbean.
সূত্রঃ http://www.medicinenet.com/script/main/art.asp…
৪) নামকরা চিকিৎসা বিষয়ক http://emedicine.medscape.com সাইট জানাচ্ছে
In the United States, HIV disease was first described in 1981 among 2 groups, one in San Francisco and the other in New York City. Numerous young homosexual men presented with opportunistic infections that, at the time, were typically associated with severe immune deficiency: Pneumocystis pneumonia (PCP) and aggressive Kaposi sarcoma
সূত্রঃ http://emedicine.medscape.com/article/211316-overview
৫) আমেরিকান এফডিএ (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কর্তৃক আমেরিকায় সমকামীদের রক্তদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে -
The United States currently prohibits men who have sex with men from donating blood "because they are, as a group, at increased risk for HIV, hepatitis B and certain other infections that can be transmitted by transfusion.
সূত্রঃ
১) http://www.fda.gov/…/Bloo…/QuestionsaboutBlood/ucm108186.htm
৬) যুক্তরাজ্যেও এইডসসহ বিভিন্ন যৌনরোগের সঙ্গে সমকামিতার গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে সমকামীদের রক্তদান করা নিষিদ্ধ -
সূত্রঃ http://www.blood.co.uk/can-i-give-blood/exclusion/
৭) নামকরা চিকিৎসা বিষয়ক http://www.webmd.com সাইট জানাচ্ছে
"Men who also had sex with women had similar levels of HIV and STDs [as exclusively homosexual men] and higher levels of many risk behaviors," Valleroy and colleagues note in their presentation abstract.
Another study presented at the AIDS conference -- based on interviews with nearly 2,500 bisexual men by the San Francisco Department of Health -- shows that 14% of men who have sex with men also has sex with women. But the study, led by Willi McFarland, MD, PhD, suggests that these men may have fewer risk behaviors than exclusively homosexual men.
সূত্রঃ http://www.webmd.com/…/20061101/hiv-bisexual-bridge-to-women
৮) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এইডস বিষয়ক অর্গানাইজেশন জানাচ্ছে -
UNAIDS strategy goals by 2015:
Sexual transmission of HIV reduced by half, including among young people, men who have sex with men and transmission in the context of sex work
Countries with punitive laws and practices around HIV transmission, sex work, drug use or homosexuality that block effective responses reduced by half
সূত্রঃ http://www.unaids.org/…/aboutuna…/unaidsstrategygoalsby2015/
অভিজিৎ রায় যেভাবে যুক্তিরহিত ও বিজ্ঞানরহিতভাবে বিভিন্ন ভুল ও মনগড়া তথ্য দিয়ে, সাধারণ লোককে বিশিষ্ট লোক বানিয়ে এভাবে সেভাবে গোঁজামিলে সমকামকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়াসী হয়েছেন, তাতে সচেতন মানসে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক ঘটাই স্বাভাবিক । তার অপযুক্তি হলো - যেহেতু প্রাণীজগতের বিভিন্ন প্রাণীতে সমকামিতা দেখা যায়, সেহেতু মানুষেও সমকামিতা থাকলে দোষের কি ? এই যুক্তি যে একেবারেই খোঁড়া যুক্তি তা কমন সেন্স থেকেই বোঝা যায় কেননা - প্রাণীজগতের অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে অনেক কিছুই দেখা যায় যা মানুষ করে না। উপরন্তু, প্রাণীজগতের অনেক প্রাণীই নগ্ন হয়ে থাকে, তাই বলে কি মানুষকেও নগ্ন হয়ে থাকতে হবে ? অভিজিৎ রায় যে কত বড় মূর্খ তা কি এখান থেকেই সুস্পষ্ট নয় ? মানবাধিকার অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সমকামিতার ফলে সৃষ্ট যৌনরোগগুলোর কারণে যদি জীবনই চলে যায়, তাহলে মানবাধিকার নিয়ে কে কথা বলবে ?
-------------------------------------------------------------------------------------
ডক্টর মুশফিক ইমতিয়াজের লেখার সূত্র: http://www.somewhereinblog.net/blog/dr_mushfique/29395348
বিডিনিউজ২৪ এ অভিজিৎ রায়ের সমকামীতার পক্ষে লেখার সূত্র:
http://opinion.bdnews24.com/bangla/archives/10903
-----------------------------------------------------------------------------------------
উপরের লেখাটি পড়লে সহজেই একজন বুঝতে পারবে, বিজ্ঞানের নাম ব্যবহার করে অভিজিৎ ছিলো একজন প্রকৃত ধোকাবাজ এবং মানবতা বিরোধী। সে কথিত মুক্তিচিন্তার নাম দিয়ে পশ্চিমাদের অনৈতিকতা মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতো। তাই যে বলবে, অভিজিৎ বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক তার মুখে সাথে সাথে জুতো মেরে দিন।
0 comments: