প্রশ্নঃ অনেক সময় আমরা খবরে পড়ি, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলগুলোতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা ধর্ষক এবং ধর্ষিতা উভয়কে নিজেদের মনমতো শাস্তি দেয়। এক্ষেত্রে তারা ইসলামকে ব্যাবহার করে। এই ব্যাপারে ইসলামের সঠিক ন্যায়বিচার কিরকম?
উত্তরঃ সাধারণ জিনা [ব্যভিচার] এবং ধর্ষণ এক বিষয় না। জিনা সংঘটিত হয় দুই ব্যক্তির সম্মতিতে। আর ধর্ষণ হচ্ছে একজনের অসম্মতিতে তার উপর জোর খাটানো। স্বাভাবিকভাবেই দুই ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়া ভিন্ন।
যারা পারস্পরিক সম্মতিতে জিনা করে তারা নিশ্চয় আদালতে নিজেদের বিরুদ্ধে বিচার নিয়ে আসবে না। এ ক্ষেত্রে সমাজের অন্য কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসবে। আর এটা মানুষের মান-ইজ্জতের উপর বিরাট হুমকি এবং দুই ব্যক্তিকে কঠিন শাস্তির মুখে ঠেলে দেয়ার নামান্তর। ফলে এক্ষেত্রে ইসলাম চারজন চাক্ষুষ সাক্ষী তলব করবে যারা এই দুই ব্যক্তিকে জিনায় লিপ্ত অবস্থায় দেখেছে - মানে এমন অবস্থায় দেখেছে যে একজনের অঙ্গ আরেকজনের অঙ্গে প্রবেশ করে আছে। চারজনের মধ্যে যদি শুধু একজনও এই অবস্থাকে নিশ্চিত না করে তবে "কেইস ডিসমিসড" এবং অভিযোগকারী অপবাদের শাস্তি পাবে। ইসলাম এ ক্ষেত্রে ডি,এন,এ, পরীক্ষা তলব করবে না। এজন্য ইসলামে জ়িনার অভিযোগ শুধু স্বীকৃতি বা গর্ভের মাধ্যমে প্রমাণিত হওয়া ছাড়া কোন রেকর্ড নাই।
অন্যদিকে ধর্ষণের বিষয়টা ভিন্ন। সে ক্ষেত্রে ইসলাম ধর্ষিতার একার সাক্ষ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত বলে ধরে নেবে। আর ধর্ষিতাকে জ়িনার শাস্তি দেবে না। তবে অনেক ক্ষেত্রে অন্যায়, মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ আনা হয়। সেসব ক্ষেত্রে ইসলামী আদালত অভিযুক্তকে অপরাধী সাব্যস্ত করার আগে সব রকমের সাক্ষ্য তলব করবে এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার হলে তাও করবে।
=========
ধর্ষিতার একার সাক্ষ্যের মাধ্যমে রসূলুল্লাহ (সঃ) রায় দিয়েছেন। হাদীস...
Chapter: What Has Been Relates About A Woman Who Is Forced To Commit Adultery
Narrated 'Alqamah bin Wa'il Al-Kindi:
From his father: "A women went out during the time of the Prophet (ﷺ) to go to Salat, but she was caught by a man and he had relations with her, so she screamed and he left. Then a man came across her and she said: 'That man has done this and that to me', then she came across a group of Emigrants (Muhajirin) and she said: 'That man did this and that to me.' They went to get the man she thought had relations with her, and they brought him to her. She said: 'Yes, that's him.' So they brought him to the Messenger of Allah (ﷺ), and when he ordered that he be stoned, the man who had relations with her, said: 'O Messenger of Allah, I am the one who had relations with her.' So he said to her: 'Go, for Allah has forgiven you.' Then he said some nice words to the man (who was brought). And he said to the man who had relations with her: 'Stone him.' Then he said: 'He has repented a repentance that, if the inhabitants of Al-Madinah had repented with, it would have been accepted from them.'"
→ এখন যদি কোন নারীকে বিচারকের (ন্যায়বিচারক) কাছে বিশ্বাসযাগ্য মনে না হয় তাহলে তাঁর সামনে কি উপায় আছে?
→ only
for rape case: যদি কোন নারী ধর্ষিত হয়েছেন বলে দাবি করেন তাহলে
প্রাথমিকভাবে তা সত্য বলেই ধরে নিতে হবে। তিনি যদি ধর্ষক/ ধর্ষকদের চিনতে
পারেন তাহলে তার সাক্ষ্যকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া হবে। তারপর সেই ধর্ষক/
ধর্ষকরা যদি দোষ স্বীকার না করে তাহলে তাদের
দোষ প্রমাণের জন্য ধর্ষিতা ও ধর্ষকের দৈহিক ও পারিপার্শ্বিক সকল প্রকার
আলামত সংগ্রহ এবং আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণ করায় কোনই বাধা নেই। এমনকি 'ডিএনএ' পরীক্ষা করার দরকার হলে তাও করতে
হবে। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত যদি অস্বীকার করে তবে অবশ্যই বিচারক সব ধরণের প্রমানাদি তলব করবেন৷
→ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্ট করা যাবে কিন্তু জিনার বেলায় নয় কেন?
→ ব্যাভিচারের অভিযোগ চারজন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী একইসাথে আনা লাগবে।
একজন কম হলেও হবে না।এখানে একজন নারী কিংবা পুরুষ যাতে অন্য কারো দ্বারা
কোনো প্রতিহিংসার শিকার হয়ে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হন, সেইজন্যেই
আল্লাহর অমন বিধান। কোনো
ন্যায়বান বিচারক যদি চারজন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীর কাছ থেকে অভিযোগ
পাওয়ার পর-পরই ডি.এন.এ টেস্ট করিয়ে লেটেস্ট প্রযুক্তির সহায়তা নিতে চান
(অভিযুক্তদের অস্বীকারের কারণে ), তাহলে সেটি নিতে পারেন।কিন্তু সমস্যা হলো
অভিযুক্তরা যদি সত্যিই ব্যভিচারি হয়ে থাকে তাহলে উক্ত নারী-পুরুষ উভয়ে
মিলে যদি ডি.এন.এ টেষ্টের আগেই নিজেরা বাঁচার জন্যে আলামত নষ্ট করে ফেলেন
কোনো না কোনো উপায়ে কিংবা কোনো প্রাকৃতিক কারণে আলামত নষ্ট হয়ে যায় তখন
কিন্তু ওই চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর দাবিদার উল্টো ফেঁসে যাবেন (কারণ ডি.এন.এ
টেস্ট যা সত্যি পায় তাই বলে/দেখায়) এবং মিথ্যা বলার অভিযোগে উক্ত
অভিযোগকারীরা কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হয়ে যেতে পারেন! এজন্যেই ব্যাভিচারের
বেলায় ডি.এন.এ টেষ্টের ব্যাপারটি রিস্কি এবং ইসলামী বিধানমতে আল্লাহ চারজন
প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীর কথা বলেছেন।
পক্ষান্তরে ধর্ষণ প্রমানে ডি.এন.এ টেস্ট খুবই কার্যকর হতে পারে, যদি সময়মত অভিযোগ আসে এবং সঠিক সময়েই টেস্ট হয়ে যায়। কারণ ধর্ষিতা নিজে থেকে কখনো আলামত নষ্ট করতে যাবেনা উপরের ওই ব্যাভিচারিনির মত।
পক্ষান্তরে ধর্ষণ প্রমানে ডি.এন.এ টেস্ট খুবই কার্যকর হতে পারে, যদি সময়মত অভিযোগ আসে এবং সঠিক সময়েই টেস্ট হয়ে যায়। কারণ ধর্ষিতা নিজে থেকে কখনো আলামত নষ্ট করতে যাবেনা উপরের ওই ব্যাভিচারিনির মত।
→ যেহেতু বিজ্ঞান আমাদেরকে এমন একটি ইনভেনশানের সাথে পরিচয় করে দিয়েছে সেহেতু চারজন সাক্ষীর বিষয়টা মনে হয় এখন আর সেভাবে কার্যকরী নয়।
→ বিজ্ঞান তো আল্লাহর কাছ থেকেই এসেছে। চারজনের কথা কোরানের স্পষ্ট
নির্দেশনা অনুযায়ী কেয়ামত পর্যন্ত বলবত থাকবে। আপনি এটির প্রতি নাখোশ হওয়া
মানে স্রষ্টার ইলমের উপরেই নাখোশ হওয়ার নামান্তর! আর, ''ডিএনএ প্রমান নষ্ট করা যায় না'', এটি তো
ঠিকই। কিন্তু আমি বলেছি আলামত নষ্ট করার কথা, যেটির উপরে ভিত্তি করে ডিএনএ
টেষ্টের প্রমান আসবে। সেই আলামত আমার জানা মতে নষ্ট করা যায় বা সম্ভব। আমি
যদি ভুল হই তাহলে আপনি অথেন্টিক কোনো প্রমান সাবমিট করুন। বিশ্বাস করবো।
ততক্ষণ পর্যন্ত আমার কথাই ঠিক রইলো! ইসলামের উদ্দেশ্য মানুষকে শাস্তি দেয়া না; বরং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করা৷জিনার
ক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের সম্ভ্রম ও জীবন সংকটে
নিপতিত৷ সেখানে ডি,এন,এ, টেস্ট করার মানে হল যে কোন উপায়েই হোক তাদেরকে শাস্তিদানের একটা উসিলা খোঁজা৷ যেটা শরীয়তের মাকসাদ না৷ তা ছাড়া আল্লাহ তা'আলা ৪ জন প্রত্যক্ষ সাক্ষী আনার কথা বলেছেন৷ অন্যদিকে
ধর্ষণের ক্ষেত্রে একজনকে মিথ্যা দোষারোপ করা হতে পারে, যেখানে তার জীবন ও
সম্ভ্রম হুমকির মুখে পড়বে৷ আর এক্ষেত্রে ধর্ষিতার একার সাক্ষ্যই যথেষ্ট৷
ফলে যে কাউকে সহজে ফাঁসিয়ে দেয়া সম্ভব৷ তাই সে ব্যক্তিকে দোষী বা নির্দোষ
সাব্যস্ত করতে হলে একরম প্রমানের দরকার হবে৷
0 comments: