হরিষে বিষাদ
ছুটির কত খবর লেখে, কিসের ছুটি ক'দিন হবে ।
ঈদ্ মহরম দোল্ দেওয়ালি বড়দিন আর বর্ষশেষে-
ভাবছে যত, ফুল্লমুখে ফুর্তিভরে ফেলছে হেসে ।
এমনকালে নীল আকাশে হঠাৎ-খ্যাপা মেঘের মত,
উথ্লে ছোটে কান্নাধারা ডুবিয়ে তাহার হর্ষ যত ।
"কি হল তোর ?" সবাই বলে, "কলমটা কি বিধল হাতে ?
জিবে কি তোর দাঁত বসালি ? কামড়াল কি ছারপোকাতে ?"
প্রশ্ন শুনে কান্না চড়ে অশ্রু ঝরে দ্বিগুণ বেগে,
পঞ্জিকাটি আছড়ে ফেলে বললে কেঁদে আগুন রেগে ;
"ঈদ্ পড়েছে জষ্ঠি মাসে গ্রীষ্মে যখন থাকেই ছুটি,
বর্ষাশেষ আর দোল্ ত দেখি রোব্বারেতেই পড়ল দুটি ।
দিনগুলোকে করলে মাটি মিথ্যে পাজি পঞ্জিকাতে-
মুখ ধোব না ভাত খাব না ঘুম যাব না আজকে রাতে ।"
পরিবেষণ |
তবে ঘটায় পরিবেষণ, লেখে অমরকোষে ।
-অর্থাৎ ভোজের ভাণ্ড হাতে লয়ে মেলা
ডেলা ডেলা ভাগ করি পাতে পাতে ফেলা ।
এই দিকে এস তবে লয়ে ভোজভাণ্ড
সমুখে চাহিয়া দেখ কি ভীষণ কাণ্ড ।
কেহ কহে "দৈ আন" কেহ হাঁকে "লুচি"
কেহ কাঁদে শূন্য মুখে পাতখানি মুছি ।
হোথা দেখি দুই প্রভু পাত্র লয়ে হাতে
হাতাহাতি গুঁতাগুঁতি দ্বন্দরণে মাতে ।
কেবা শোনে কার কথা সকলেই কর্তা-
অনাহারে কতধারে হল প্রাণ হত্যা ।
কোন প্রভু হস্তিদেহ ভুঁড়িখানা ভারি
ঊর্ধ্ব হতে থপ্ করি খাদ্য দেন ছাড়ি ।
কোন চাচা অন্ধপ্রায় ('মাইনাস কুড়ি')
ছড়ায় ছোলার ডাল পথঘাট জুড়ি ।
মাতব্বর বৃদ্ধ যায় মুদি চক্ষু দুটি,
"কারো কিছু চাই" বলি তড়বড় ছুটি-
বীরোচিত ধীর পদে এসে দেখি ত্রস্তে-
ওই দিকে খালি পাত, চল হাঁড়ি হস্তে ।
তবে দেখ, খাদ্য দিতে অতিথির থালে
দৈবাৎ না ঢোকে কভু যেন নিজ গালে ।
ছুটোনাকো ওরকম মিছে খালি হাতে
দিও না মাছের মুড়া নিরামিষ পাতে ।
অযথা আক্রোশে কিবা অন্যায় আদরে
ঢেলো না অম্বল কারো নূতন চাদরে ।
বোকাবৎ দন্তপাটি করিয়া বাহির
করোনাকো অকারণ কৃতিত্ব জাহির ।
জালা-কুঁজো সংবাদ
কুঁজো তোর হেন গলা এতটুকু শরীরে !"
কুঁজো কয়, "কথা কস্ আপনাকে না চিনে,
ভুঁড়িখানা দেখে তোর কেঁদে আর বাঁচিনে ।"
জালা কয়, "সাগরের মাপে গড়া বপুখান,
ডুবুরিরা কত তোলে তবু জল অফুরান ।"
কুঁজো কয়, "ভালো কথা ! তবে যদি দৈবে,
ভুঁড়ি যায় ভেস্তিয়ে, জল কোথা রইবে ?"
"নিজ কথা ভুলে যাস্ ?" জালা কয় গর্জে,
"ঘাড়ে ধরে হেঁট ক'রে জল নেয় তোর যে !"
কুঁজো কয়, "নিজ পায়ে তবু খাড়া রই তো-
বিঁড়ে বিনা কুপোকাৎ, তেজ তোর ঐতো !"
0 comments: