অধ্যায় ০৩ : পাকিস্তান আন্দোলন ও ইসলাম

পাকিস্তান আন্দোলন ও ইসলাম

পাকিস্তানের অর্থ কী লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ । এ শ্লোগানই মুসলমানদের এ আন্দোলনে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। এমন কি ভারতের যে ৭টি প্রদেশে ভারতের অন্তর্ভূক্ত থাকবে বলে জানাই ছিল, সেখানেও মুসলমানরা ইসলামের আকর্ষণে পাকিস্তানের দাবীকে নিরংকুশভাবে সমর্থন করেছে। এর পরিণামে লক্ষ্য লক্ষ্য মুসলমান শহীদ হয়েছে এবং জন্মভূমি ও সহায়-সম্পদ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। ভারতে বসবাসকারী মুসলমানরা তাদের ঐ অন্যায়ের কঠোর শাস্তি এখনও ভোগ করে চলেছে।

কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় যে, পাকিস্তান আন্দোলন ইসলামের নামে চলা সত্ত্বেও তা ইসলামী আন্দোলন হিসাবে গড়ে ওঠেনি। পাকিস্তান কায়েম হবার পর স্বাধীন মুসলিম দেশটিতে ইসলামী আইন, ইসলামী শিক্ষা, ইসলামী অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা চালু করার কোন পরিকল্পনাই আন্দোলনের নেতারা করেননি। এর ফল যা হবার তাই হয়েছে। যারা ইসলামকে জানেন না বা যারা নিজের জীবনেই ইসলাম মেনে চলেন না, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে কী করে ইসলাম কায়েম করবেন? ইসলামের ব্যাপারে এ ধোকাবাজি করার ফলে নেতারা অল্প দিনের মধ্যেই জনপ্রিয়তা হারালেন। সেনাপতি আইয়ুব খান সে সুযোগে ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা দখল করলেন।

আইয়ুব খানের যুগ

আইয়ুব খান জাঁদরেল শাসক ছিলেন। মুসলিম লীগের নামেই তিনি রাজত্ব করেছেন। অথচ তিনি তাঁর শাসনকালে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে একনায়কত্বই চালিয়ে গেছেন। গণতান্ত্রকামী সব দলের সাথে মিলে জামায়াতে ইসলামী আইয়ুব আমলের দশ বছর একনায়কত্বের বিরুদ্ধে আগা-গোড়াই সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছে। ইতিহাস থেকে জামায়াতের এ বলিষ্ঠ ভূমিকা মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই।

আইয়ুব খান জামায়াতে ইসলামীর উপর সবচেয়ে বেশি ক্ষেপা ছিলেন। কারণ জামায়াত গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবার সাথে সাথে আইয়ুব খাঁর ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করতো। তাই ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন প্রত্যাহারের পর গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে ১৯৬৪ সালের জানুয়ারি মাসে একমাত্র জামায়াতে ইসলামীকেই বেআইণী ঘোষণা করা হয় এবং ৬০ জন জামায়াত নেতাকে জেলে আটক করা হয়। ৯ মাস পর সুপ্রীম কোর্ট রায় দেয় যে, জামায়াতকে বে-আইনী ঘোষণা করাটাই বে-আইনী হয়েছে।

সরকারি অবহেলার ফলে ইসলামী চেতনা ও মুসলিম জাতীয়তাবোধ তো আইয়ুব আমলের পূর্ব থেকেই লোপ পাচ্ছিল। আইয়ুব আমলে ভাষা ও এলাকা ভিত্তিক জাতীয়তা শূন্যস্থান পূরণ করতে এগিয়ে এলো। পশ্চিমাঞ্চলে পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও সীমান্ত প্রদেশের ভাষার পার্থক্য সত্ত্বেও ভৌগলিক দিক দিয়ে এক সাথে থাকায় এবং ভারতের সাথে কয়েক দফা যুদ্ধ হওয়ায় সেখানে মুসলিম ঐক্যবোধ কোন রকমে বেঁচে রইল। কিন্তু পূর্বাঞ্চলের অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। ভৌগলিক দিক দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কিসের ভিত্তিতে এখানকার মানুষ পশ্চিমের সাথে একত্মতা বোধ করবে? ইসলামই একমাত্র সেতুবন্ধন হতে পারতো। কিন্তু সরকারি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামকে কোন স্থানই দেয়া হলো না। যে মুসলিম জাতীয়তা চেতনা গোটা উপমহাদেশের মুসলিমদেরকে ১৯৪৬ সালে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, সে চেতনা বাঁচিয়ে রাখারও কোন প্রচেষ্টা দেখা গেল না। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান কায়েম হবার মাত্র ১০/১৫ বছর পর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের একথা জানারও সুযোগ রইল না যে, ভারতবর্ষ দুভাগ কেন হলো? পশ্চিম বাংলা ও পূর্ব বাংলার মাতৃভাষা এক হওয়া সত্ত্বেও বাংলা কেন দুভাগ হলো? বাংলাভাসী অমুসলিমের চেয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমানদেরকে কেন বেশি আপন মনে করতে হবে? ফলে ঈমানভিত্তিক জাতীয়তাবোধ বিনষ্ট হয়ে এলাকা ও ভাষাভিত্তিক ঐক্যবোধ জন্ম নিল এবং বাংলাভাষী অঞ্চলে স্বাতন্ত্র্যবোধের বিকাশ অবধারিত হয়ে উঠল।

রাজনৈতিক ময়দানে যে আদর্শিক শূন্যতা সৃষ্টি হলো সেখানে সমাজতন্ত্রে এগিয়ে আসার সুযোগ পেল। রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে যাতে ইসলামের কোন প্রভাব না পড়ে, সেজন্য ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ময়দান দখল করতে এগিয়ে এলো। এভাবে এলাকা ও ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবোধ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও সমাজতন্ত্র রাজনৈতিক অংগনে মুসলিম জাতীয়তার স্থান দখল করতে লাগল।

মুসলিম জাতীয়তা পরিত্যাগের রাজনৈতিক পরিণাম

মুসলিম জাতীয়তাবোধ চল্লিশের দশকে অবিভক্ত ভারতের বিভিন্ন ভাষাভাষী দশ কোটি মুসলমানকে এক বলিষ্ঠ জাতিতে পরিণত করেছিল। এরই সুফল হিসাবে ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ঐ জাতীয়তাবোধকে লালন না করার ফলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো তা ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবোধ এসে পূরণ করল।

যেসব রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দ মুসলিম জাতীয়তার চিন্তাধারা পরিত্যাগ করে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাকেই রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসাবে গ্রহণ করলেন, তারা স্বাভাবিক কারণেই নিখিল পাকিস্তানভিত্তিক রাজনীতি করার অযোগ্য হয়ে পড়লেন। কারণ, পাঠান জাতীয়তার পতাকাবাহী নেতা বাংলাভাষীদের নিকট গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সিন্ধী জাতীয়তাবাদী নেতা পাঠানদের নেতা বলে গণ্য হওয়া সম্ভব নয়।

তেমনি বাংগালী জাতীয়তাবাদ পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও সীমান্তে রাজনৈতিক আদর্শ বলে গণ্য হওয়া অসম্ভব।

সুতরাং স্বাভাবিক রাজনৈতিক বিবর্তনেই আওয়ামী মুসলিম লীগ ১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগ হয়ে যাবার পর তাদের রাজনীতি পাকিস্তানভিত্তিক না হয়ে শুধু পূর্ব পাকিস্তানেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। গোটা পাকিস্তানকে একটি রাষ্ট্র হিসাবে চিন্তা করার পরিবর্তে তাদের সকল পরিকল্পনা শুধু বর্তমান বাংলাদেশ এলাকাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠল।

কিন্তু যারা রাজনীতি করেন, তারা অবশ্যই ক্ষমতায় যেতে চান। ক্ষমতাসীন না হয়ে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিই বাস্তবায়ন করা যায় না। সুতরাং যারা শুধু পূর্ব পাকিস্তানভিত্তিক রাজনীতি করার সদ্ধিান্ত নিলেন, তাদের ক্ষমতায় যেতে হলে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়া আর কোন পথ ছিল না।

ওদিকে মি. ভুট্টোও ক্ষমতার জন্য পাগল হয়ে একই দেশে দু;মেজরিটি দলের অদ্ভুত দাবি তুললেন। দেশ ভাগ না হলে ভুট্টোরও ক্ষমতাসীন হবার কোন উপায় ছিল না। ভুট্টো ক্ষমতায় যাবার জন্য জেনারেল ইয়াহিয়ার সাথে যে ষড়যন্ত্র করলেন, তাতে পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্ন হওয়া ত্বরান্বিত হয়ে গেল।

বাংলাদেশে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, সিন্ধু, ও পাঞ্জাবে মি. ভুট্টোর নেতৃত্বে পিপলস পার্টি এবং বাকী দুটো প্রদেশে অন্য দুটো দলের নিরংকুশ বিজয় একথা প্রমাণ করল যে, পাকিস্তানের ঐক্যের ভিত্তিতে আর বেঁচে নেই। যে ভিত্তিতে নির্বাচনের ফলে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল, সে ভিত্তি না থাকায় নির্বাচনের মাধ্যমেই পাকিস্তানের ভিত্তি ভেংগে গেল।

নির্বাচনের পর

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় আইনসভায় আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে পরিণত হওয়ায় শেখ মুজিবকে ইয়াহইয়া খান পাকিস্তানের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী বলে মন্তব্য করা সত্ত্বেও ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকলেন। ওদিকে ভুট্টো এধার হাম, ওধার তুম বলে এক দেশ দুটো মেজরিটি পার্টির অদ্ভুত শ্লোগান তুললেন। বুঝা গেল যে, ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানের বাদশাহ হতে চান। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান আলাদা না হলে সে সুযোগ তার হয় না। তাই ইয়াহইয়া খানের সাথে যোগসাজাশ করে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথে বাধা সৃষ্টি করতে লাগলেন।

সে সময় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বারবার জোর দাবি জানানো হলো যে, ব্যালটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংখ্যাগুরু দলের হাতে ক্ষমতা হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া হোক। কারণ, জামায়াত আশাংকা করেছিলো যে, ক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব হলে রাজনৈতিক সংকটের সাথে সাথে দেশে চরম বিশৃংখলা দেখা দেবে। সে সময়কার দৈনিক পত্রিকাগুলো জামায়াতের এ দাবির ঐতিহাসিক সাক্ষী।

নির্বাচনের পর ১৯৭১ এর জানুয়ারিতে লাহোরে মাওলানা মওদূদীর সভাপতিত্বে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরায় সিদ্ধান্ত হয় যে, যদি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে যেতে থাকে, তাহলে জামায়াত এর বিরোধিতা করবে না। এ বিষয়ে এখানকার প্রাদেশিক জামায়াতকে যে কোন সিদ্ধান্ত নেবার জন্য পূর্ণ ইখতিয়ার দেয়া হলো। এরপর এ সম্পর্কে যাবতীয় সিদ্ধান্ত পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক জামায়াতই নিতে থাকে।

এরপর যা ঘটল

১লা মার্চ ঢাকায় কেন্দ্রীয় আইনসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ অধিবেশনে ভুট্টো আসতে অস্বীকার করলেন। ভুট্টোর মরযী মত ইয়াহইয়া খান এ অধিবেশন মুলতবী ঘোষণা করলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় শেখ মুজিব কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করলেন। প্রাদেশিক সরকার সম্পূর্ণ অচল হয়ে গের। বাধ্য হয়ে ইয়াহইয়া খান শেখ মুজিবের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসায় পৌঁছার কথা ঘোষণা করলেন। ১৯ থেকে ২৩শে মার্চ আলোচনা চলে। শেষ পর্যন্ত কোন মীমাংসা না হওয়ায় আলোচনা ব্যর্থ হয়ে যায়।

২৫ শে মার্চ দিবাগত রাতে টিক্কা খানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ঢাকা শহরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং ব্যাপক হত্যা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে চরম সন্ত্রাস সৃষ্টি করে অসহযোগ আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করল। শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া হলো। কয়েক রাতের সামরিক অপারেশনে ঢাকা মহানগরী স্তব্ধ হয়ে গেল এবং রাজধানী তাদের পুনর্দখলে এলো।

ঢাকার বাইরে সব জেলায়ই এর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিল। নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ জেলা ও মাহকুমা শহরে অসহযোগ আন্দোলন জারি রাখলেন। ঢাকার বাইরে সেনাবাহিনী এবং পুলিশেও বিদ্রোহ দেখা দিলো। যেসব শহরে অবাংগালী (বহিার নামে) উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ছিল, সেখানে বিহারীদেরকে হত্যা করে ঢাকার প্রতিশোধ নেয়া হলো।

এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী ঐ সব এলাকায় বাংগালী হত্যা করল এবং সরকারিী ক্ষমতা বহাল করল। এভাবে দুদিকের আক্রমণে নিরপরাধ সাধারণ মানুষ নিহত ও অত্যাচারিত হতে থাকল। এক মাসের মধ্যে মোটামুটি দেশে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো বটে, কিন্তু দেশটিকে নিশ্চিতভাবে বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয়া হলো।

স্বাধীন বাংলাদেশ আন্দোলন

আওয়াশী লীগ নেতৃবৃন্দ ভারতে আশ্রয় নিলেন। অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দলের অধিকাংশ নেতাও তাই করলেন। পাক সেনাবাহিনী ঢাকা শহরে ও অন্যান্য স্থানে হিন্দু বস্তির উপর আক্রমণ করায় তারাও দলে দলে ভারতে পাড়ি জমালেন। পাক সেনাবাহিনীর ভ্রান্তনীতির ফলে দেশের গোটা হিন্দু সম্প্রদায় পাকিস্তান বিরোধী হয়ে গেল। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ও অধিকাংশ সমাজতন্ত্রী দল পাকিস্তান থেকে হওয়ার জন্য সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো।

মেহেরপুর জেলার মফস্বলে (যে স্থানের বর্তমান নাম মুজিব নগর) আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার কায়েম করার পর স্বাধীনতা আন্দোলন যে রূপ পরিগ্রহ করল, তা কোন বিদেশী সরকারের সাহায্য ছাড়া চলা সম্ভ ছিল না। তাই কোলকাতা থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত হয়।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম