কামারুজ্জামান কে? কেনই বা তাকে হত্যা করতে চায় সরকার

মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের জন্ম ১৯৫২ সালে। ১৯৭১ সালে তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর। ১৯ বছরের সেই তরুণের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ৪০ বছর পর ২০১০ সালে সদ্য গজিয়ে ওঠা কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। তাঁর বিরুদ্ধে তৈরী করা হয় একের পর এক মনগড়া অভিযোগ। এর মধ্যে শুধুমাত্র ৩ নং অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। আসুন দেখি কি বলা ছিলো ৩ নং অভিযোগে এবং এই অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়াই বা কেমন ছিলো।

“কামারুজ্জামান কে? কেনই বা তাকে হত্যা করতে চায় সরকার” জানতে দেখুন
ফেসবুক: https://www.facebook.com/video.php?v=781599645261335



যেভাবে সোহাগপুরের মিথ্যাচারে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি দেয়া হয়ঃ

• এই মামলায় ১০ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার পর নতুন করে এই চার্জে তিন জন মহিলা ক্যামেরা ট্রায়ালে সাক্ষ্য প্রদান করেন, যেখানে বিচারক, প্রসিকিউশন ও আসামী পক্ষের নির্দিষ্ট আইনজীবী ছাড়া অন্য কেউ আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলনা। অথচ মূল সাক্ষীর তালিকার ৪৬ জনের মধ্যে তাদের নাম ছিল না।
• সাক্ষীরা কামরুজ্জামান সাহেবকে সরাসরি চিনেন না
• সাক্ষীদের দিন-তারিখ ও মাস কিছুই মনে থাকেনা
• প্রসিকিউশন এবং সাক্ষীদের কেউই বলেননি যে কামারুজ্জামান সাহেব কোথায়, কখন, কাকে এই গণহত্যার নির্দেশ দেয়।
• সরকারের নির্দেশনা ও সহযোগিতায় এবং অর্থলোভে সাক্ষীদের ঢাকায় এসে সাক্ষী প্রদান
• সাফাই সাক্ষী দিতে সরকারের বাধা
• আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য উপেক্ষা এবং সোহাগপুরের ঘটনার পিছনের প্রকৃত দায়ীদের অপরাধের দায় কামরুজ্জামান সাহেবের উপর চাপানো

৩ নং অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সাক্ষীরা সবাই বিভিন্নভাবে নানা বিষয়ে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং এই ভিত্তিহীন ও অসত্য সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করেই আপিল বিভাগ তাকে ফাঁসির দন্ড দিয়েছেন আর সরকার সেই রায় তড়িঘড়ি করে বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করছে। কিন্তু একদিন সত্য প্রকাশ হবেই, ইনশা-আল্লাহ।

মানবতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এই বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সোচ্চার হউন।
বিস্তারিতঃ http://goo.gl/69GhFO





Kamaruzzaman- A Victim of Sheer Injustice in Bangladesh
YouTube: http://youtu.be/A07uAA59ppI

Muhammad Kamaruzzaman was born in 1952. He was just 19 in 1971. Now some allegations have been brought against him which were never heard in last 40 years. The tribunal also showed him to be under arrest in connection with those allegations. Allegations one after another have been brought out against him. The Appellate Division handed down death penalty against Mr. Kamaruzzaman in connection with the 3rd allegation. Let's have a look at what has been said in the 3rd allegation and also have a look into the trial procedure of the case.

For the sake of humanity and justice, please raise your voice to stop judicial murder .





কামারুজ্জামান কে? কেনই বা তাকে হত্যা করতে চায় সরকার

একজন প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবি, লেখক এবং সাংবাদিক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল

৮০’র দশকের জনপ্রিয় ছাত্রনেতা

যিনি ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয় হতে মাষ্টার্স করেন সাংবাদিকতায়।

দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার বার্তা সম্পাদক

সাপ্তাহিক সোনার বাংলা এর সম্পাদক

জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য

বাংলা একাডেমি’র আজীবন সদস্য

ডাকসু’র আজীবন সদস্য



মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের জন্ম ১৯৫২ সালে।

১৯৭১ সালে তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর।

১৯ বছরের সেই তরুণের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ৪০ বছর পর ২০১০ সালে যা আগে কখনো শোনা যায়নি এমন সদ্য গজিয়ে ওঠা কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। তাঁর বিরুদ্ধে তৈরী করা হয় একের পর এক মনগড়া অভিযোগ।

এর মধ্যে শুধুমাত্র ৩ নং অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। আসুন দেখি কি বলা ছিলো ৩ নং অভিযোগে এবং এই অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়াই বা কেমন ছিলো।



ভিডিওঃ কামারুজ্জামান কে? কেনই বা তাকে হত্যা করতে চায় সরকার

FaceBook Link: https://www.facebook.com/video.php?v=781599645261335

Youtube Link: http://youtu.be/RLPmCFlbovk



সোহাগপুরের মিথ্যাচারে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি

৩ নং অভিযোগে বলা হয় যে, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই বা বাংলা ১৩৭৮ সালের শ্রাবন মাসের ১০ তারিখ, ভোর বেলা কামারুজ্জামান সাহেব পাকিস্তান আর্মির সাথে আলবদর, রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের গণহত্যার পরামর্শ প্রদান করেন এবং সে অনুযায়ী পাকিস্তান আর্মি, আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা সোহাগপুর গ্রাম ঘেরাও করে ১৬৪ জন লোককে হত্যা করে ও ধর্ষণ করে। এই অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল জনাব কামারুজ্জামানকে ফাসিঁর দন্ডাদেশ প্রদান করেন এবং আপিল বিভাগও অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে সেই রায় বহাল রাখেন।



এই চার্জে তিন জন মহিলা ক্যামেরা ট্রায়ালে সাক্ষ্য প্রদান করেন, যেখানে বিচারক, প্রসিকিউশন ও আসামী পক্ষের নির্দিষ্ট আইনজীবী ছাড়া অন্য কেউ আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলনা। এই মামলায় ১০ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার পর নতুন করে এই তিন জন মহিলাকে অতিরিক্ত সাক্ষী হিসেবে প্রসিকিউশন আদালতে উপস্থাপন করে। অথচ মূল সাক্ষীর তালিকার ৪৬ জনের মধ্যে তাদের নাম ছিল না।



সাক্ষীরা কামরুজ্জামান সাহেবকে চিনেন নাঃ

আসামি পক্ষের জেরায় সাক্ষীরা একেকজন একেক ধরনের কথা বলে...

ট্রাইব্যুনালে প্রদত্ত সাক্ষ্যে ভিকটিম বলে দাবীকৃত চারজন সাক্ষীর সবাই স্বীকার করেছেন যে, তারা জনাব কামারুজ্জামান সাহেবকে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে চিনেন। যেমন-



১০ নং সাক্ষী জালাল উদ্দিন তার জবানবন্দীতে বলেন, “এই কামারুজ্জামান সাহেবকে একাত্তরের পর অনেক দেখেছি।”

পরবর্তীতে জেরায় এসে তিনি আরো স্পষ্ট করে বলেন, “স্বাধীনতার অনেক পরে একদিন শেরপুর শহরে ডাক বাংলার কাছে কামারুজ্জামান সাহেবকে তাদের দলীয় একটি মিটিংয়ে প্রথম দেখি।”



কামারুজ্জামান সাহেবকে চেনার বিষয়ে ১১ নং সাক্ষী হাসেন বানুকে জিজ্ঞাসা করা হয়, “প্রশ্নঃ ডকে সনাক্তকৃত আসামীকে আপনি কবে থেকে চেনেন?” উত্তরে ১১ নং সাক্ষী হাসেন বানু বলেন, “উত্তরঃ দেশ স্বাধীন হলে আমরা মুরুব্বীদের কাছে শুনেছি যে ডকে থাকা আসামী বড়নেতা ছিলেন এবং স্বাধীনতার পর তিনি শেরপুরে ধরা পড়েছেন।” এই সাক্ষী সরাসরি কোন উত্তর দেননি এবং তার উত্তর পড়লে দেখা যায় তিনি আদৌ কামারুজ্জামান সাহেবকে চিনেননা। মুরুব্বীদের কাছ থেকে শুনেছেন মাত্র।



১২ নং সাক্ষী হাফিজা বেওয়া কামারুজ্জামান সাহেবকে সর্বপ্রথম টিভিতে দেখেছেন। আসামীপক্ষের জেরায় তিনি বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কামারুজ্জামানকে চিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমি টিভিতে কামারুজ্জামানকে দেখেছি।”

তাহলে তার স্বামী হত্যা এবং তাকে ধর্ষণের দায় কামারুজ্জামান সাহেবের উপর বর্তাবে কেন?

হাফিজা বেওয়া বলেন, “কামারুজ্জামানের নাম মুরুব্বীদের কাছ থেকে শুনেছি।” কারা এই মুরুব্বী? তিনি কোন মুরুব্বীর নাম নির্দিষ্ট করে বলেননি। এই মুরুব্বী কি বর্তমান সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা? না কি প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী কর্মকর্তা?



সবচেয়ে বড় মজার বিষয় হল ১৩ নং সাক্ষী করফুলি বেওয়া অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, তিনি কামারুজ্জামান সাহেবকে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে চিনেন। জেরায় তিনি বলেন, “আমি যুদ্ধের আগে থেকে কামারুজ্জামান সাহেবকে চিনিনা, পরে চিনেছি। দেশ স্বাধীনের ৩/৪ মাস পরে কামারুজ্জামান সাহেবকে চিনেছি।”

করফুলি বেওয়ার কামারুজ্জামান সাহেবকে চেনার প্রক্রিয়াও বেশ হাস্যকর। তিনি বলেন, “আমার বাড়ীর আশেপাশে দিয়ে অনেক মানুষের সামনে দিয়ে হেটে যায়, সেই সময় চিনেছি।” অথচ এই করফুলি বেওয়া ও কামারুজ্জামান সাহেবের বাড়ী ভিন্ন থানায় এবং কামারুজ্জামান সাহেবের বাড়ী শেরপুর সদর থেকে করফুলি বেওয়ার বাড়ী নালিতাবাড়ী থানার সোহাগপুর প্রায় ৪০/৪৫ কিলোমিটার দূরে।



সাক্ষীদের দিন-তারিখ ও মাস কিছুই মনে থাকেনাঃ

১২ নং সাক্ষী হাফিজা বেওয়া বলেন, “আমি একটি জিনিস এক জায়গায় রাখলে একটু পরে ভুলে যাই।”

ঘটনা সংগঠনের সময়কাল হিসেবে হাফিজা বেওয়া সাক্ষী তার জবানবন্দীতে ৪৩ বছর পূর্বের একটি বাংলা তারিখ বললেও জবানবন্দী প্রদানের দিন বাংলা মাসের কত তারিখ তা তিনি জানেন না। অন্যদিকে আসামী পক্ষের জেরায় তিনি বলেন, “বাংলা মাসের হিসাব জানি না। আমার খেয়াল থাকে না। আজকে বাংলা মাসের কত তারিখ জানি না।”

তাকে আরো প্রশ্ন করা হয় যে, তার জন্ম, বিয়ের তারিখ, তার মেয়ের জন্ম কোন মাসের বা কোন বছরের কত তারিখে, তিনি তাও বলতে পারেননি। তাহলে তিনি কিভাবে ৪৩ বছর আগের নির্দিষ্ট একটি তারিখ মনে রাখলেন!



১১ নং সাক্ষী হাসেন বানু যে দিন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন তাকে সেই দিন ও তারিখের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আজকে কোন মাসের কত তারিখ কোন বার আমি বলতে পারবো না।”

আর এই সাক্ষী তার এলাকার কোন মুক্তিযোদ্ধার নামও বলতে পারেন না, শুধু কামারুজ্জামান সাহেবকেই তিনি চিনেন। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, “সোহাগপুর এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আমি বলতে পারব না।”



১৩ নং সাক্ষী করফুলী বেওয়া বাংলা ও ইংরেজি মাসের হিসাব জানেন না স্বীকার করলেও তিনি ৪৩ বছর পূর্বের একটি মাস ও তারিখের নাম ঠিকই আদালতের সামনে উপস্থাপন করেন।

ডিফেন্স আইনজীবীর জেরায় তিনি বলেন, “বাংলা ও ইংরেজি বছর, মাস, তারিখ সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নাই।” তিনি ঐ নির্দিষ্ট তারিখ ছাড়া আর অন্য কোন দিন বা তারিখ বলতে পারেন না।

জেরায় তিনি আরো বলেন, “আমার প্রথম বিয়ে এবং দ্বিতীয় বিয়ের দিন, তারিখ বা সাল বলতে পারব না। মৈরমের (মেয়ে) মৃত্যু তারিখ, মাস, সাল বলতে পারব না।”

এর দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে তাকে যে নির্দিষ্ট তারিখটা মুখস্থ করিয়ে দেয়া হয়েছে তিনি শুধু সেটাই বলেছেন।



তিনজন সাক্ষীর এই জেরা থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে তাদেরকে নির্দিষ্ট একটি ঘটনা এবং তারিখ মুখস্ত করিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা ট্রাইব্যুনালে এসে সেই বুলিটিই বলেছেন। এমনকি বলার সময়ও পরস্পরের সাক্ষ্যে বৈপরীত্য করেছেন।



সাক্ষ্যে দুইজনের ধর্ষন হওয়ার ভিন্ন তারিখঃ

১২ নং সাক্ষী হাফিজা বেওয়া দাবী করেন যে, তিনি ও করফুলি একই দিনে ধর্ষিত হয়েছেন।

হাফিজা বলেন, “সেদিন (১০ই শ্রাবন) করফুলী বেওয়া, সমলা বেওয়া সহ অনেক মহিলার ইজ্জত নষ্ট করেছিল।”



কিন্তু ১৩ নং সাক্ষী করফুলী বেওয়া বলেন, “আমরা লাশ গোয়াল ঘরে ঢেকে রেখে নকলা চলে যাই।..... তিনদিন পর আমি যখন বাড়ীতে আসি তখন আমি গোয়াল ঘরে দাড়িয়ে ছিলাম তখন পাঞ্জাবীরা আমার ইজ্জত নষ্ট করে।”

তাহলে এখানে কার কথা বিশ্বাসযোগ্য বলে ধর্তব্য হবে? আসলে একটা বানোয়াট কথা উপস্থাপন করায় এই রকম বৈপরিত্য।

অন্যদিকে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের আদেশে ২৫ জুলাই বা ১০ শ্রাবনের উল্লেখিত ঘটনার বর্ণনার পরে নতুন কোন তারিখের ঘটনার বর্ণনা নেই।

ট্রাইব্যুনালে এসে তারা বলেন যে, তাদেরকে ধর্ষণ করা হয় এবং সেখানে কামারুজ্জামান সাহেব উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত জবানবন্দীতে ঘটনার সময় কামারুজ্জামান সাহেবের উপস্থিতি সম্পর্কে তারা কিছুই বলেন নাই। এমনকি কামারুজ্জামান সাহেবের বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগেও বলা হয়নি যে, তিনি ঘটনার সময় ঐ গ্রামে (সোহাগপুর) উপস্থিত ছিলেন।

আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে প্রসিকিউশন এবং সাক্ষীদের কেউই বলেননি যে কামারুজ্জামান সাহেব কোথায়, কখন, কাকে এই গণহত্যার নির্দেশ দেয়।



যেভাবে তারা সাক্ষী দিতে ঢাকায় আসলেনঃ

১৩ নং সাক্ষী করফুলি বেওয়া নিজেই একেক সময়ে একেক ধরনের কথা বলেছেন।

জেরায় একবার তিনি বলেন, “এই মামলায় আমাকে সাক্ষ্য দিতে কেউ বলে নাই। আমি নিজেই সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য এসেছি।”

অন্যদিকে তিনিই আবার বলেন, “জালাল (১০নং সাক্ষী) আমাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সংগে নিয়ে এসেছিল। জালালই আমাদের আসতে বলেছে।”

এই অভিযোগে ৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য এক সাথে মিলিয়ে পড়লে দেখা যায় কে কতটি অসত্য কথা বলেছেন। ১৩ নং সাক্ষী করফুলি বেওয়া বলেন, “আমার সাথে হাবি এসেছিল। আমার সাথে হাবি এবং জালাল ছাড়া কেউ আসেনি। আমরা এক সাথে আছি।”



অপরপক্ষে ১২ নং সাক্ষী হাফিজা বেওয়া বলেন, “আমার সংগে করফুলী বেওয়া এসেছে। আমরা দুইজনেই এসেছি এবং এক সংগে আছি।”

আবার ১১ নং সাক্ষী হাসেন বানু আরেকধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, “আমি ছয়জনকে বলেছি বিচারের একটা সুযোগ পাওয়া গেছে চল ঢাকায় যাই তখন আমরা কয়েকজন ঢাকায় আসছি। করফুলি বেওয়া আসছে। অন্যরা যারা আসছে তাদের নাম বলতে পারব না। ঢাকা আসার পর থেকে আমরা এক সাথেই আছি।”



এখন আমরা কার কথা এখানে সত্য হিসেবে বিবেচনা করব? প্রসিকিউশনের শিখিয়ে দেয়া বক্তব্য আদালত কক্ষে এসে বলাতেই তারা এইরকম বিপরীতধর্মী কথা বলেছেন এবং একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।



১১ নং সাক্ষী হাসেন বানু নিজ থেকেই ঢাকায় আসার দাবী করলেও জেরায় তিনি বলতে পারে নি যে কত টাকা ভাড়া দিয়ে তিনি ঢাকায় এসেছেন।

তিনি বলেন, “নালিতা বাড়ী থেকে ঢাকায় কত টাকা ভাড়া দিয়ে আসি বলতে পারব না।”

এতেই বুঝা যায় যে জনাব কামারুজ্জামান সাহেবের বিরুদ্ধে তারা যে অভিযোগ এনেছেন তা সবই প্রসিকিউশন কর্তৃক শিখানো, অসত্য ও বানোয়াট।



সরকারের নির্দেশনা ও সহযোগিতায় সাক্ষী প্রদানঃ

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে ১১ নং সাক্ষী হাসেন বানুকে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়। তিনি আসামী পক্ষের আইনজীবীর জেরায় স্বীকার করেন যে, “স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের কোন জমি ছিল না মানুষের জমিতে আমার স্বামী কাজ করতো। এখনও আমাদের কোন জায়গা জমি নাই। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে আমি মানুষের বাসায় কাজ করতাম, ঢাকায়ও কাজ করে গেছি।”

১২ নং সাক্ষী জায়গা-জমিহীন এই হাফিজা বেওয়াকেও সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসার টোপ গিলাতে খুব বেগ পেতে হয়নি। তিনি আসামী পক্ষের আইনজীবীর জেরায় বলেন, “আমাদের কোন জায়গা জমি নাই। মানুষের বাড়িতে কাজ কর্ম করে আমি সংসার চালাতাম।”



উপরিউক্ত ৩ জন মহিলা সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে এসে নিজেদের বিধবা দাবী করলেও তারা সবাই পরবর্তীতে আবার বিবাহ করে এবং সবার স্বামীর ঘরে সন্তানাদী জন্ম দেন।



এবার দেখুন আসলে সোহাগপুরে ঘটনার পিছনে আসলে কারা দায়ীঃ

সোহাগপুরের বাসিন্দা মোঃ আরশেদ আলী ছিলেন আসামী পক্ষের সাক্ষী। তার পিতা একাব্বর আলী ঘটনার সেই দিন পাক বাহিনীর হাতে শহীদ হন। সোহাগপুরের গণহত্যা ও তার কারন হিসেবে সাক্ষী মোঃ আরশেদ আলী বলেন, “আমরা ঐ এলাকায় সেটেলার হিসেবে বসতি স্থাপন করেছিলাম ঐখানে ভারত থেকে আগত রিফিউজিরা এবং বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ গিয়ে সরকারী সম্পত্তি বন্দোবস্ত নিয়ে বসবাস করতাম। তখন ফচি চেয়ারম্যান, নজির মাস্টার, কাদির ডাক্তার, নসা গংদের সংগে পূর্ব দ্বন্দ্বের কারণ হিসেবে ওরা আমাদের বসতি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইতো। এরা সবাই পাক বাহিনীর দালাল ছিল, তারাই পাক বাহিনীদেরকে প্রভাবিত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা আমাদেরকে মুক্তি বাহিনী হিসেবে পাক বাহিনীর কাছে চিত্রিত করেছিল।”



সাফাই সাক্ষী দিতে সরকারের বাধাঃ

কামারুজ্জামান সাহেবের সম্পূর্ন বিচার প্রক্রিয়ায় প্রসিকিউশনের ১৮ জন সাক্ষীকে সাক্ষ্য প্রদানের সুযোগ দেয়া হলেও আসামী পক্ষের ৬০০ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৫ জনকে সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়।



জনগনের উত্থাপিত প্রশ্নঃ

কামারুজ্জামান সাহেব যদি সোহাগপুরের গণহত্যা ও ধর্ষণের সাথে সত্যিকারভাবেই জড়িত থাকতেন তাহলে সকল সাক্ষীর বক্তব্য হতো একই রকম। সাক্ষীরা কোন অসত্য বা গোজাঁমিলের আশ্রয় নিতেন না এবং তাদের সকলের বক্তব্য একই বিষয়ে একই হতো। তাই নয় কি?? বিবেকের কাছে একটু জিজ্ঞাসা করলেই এর উত্তর পাওয়া সম্ভব।



৩ নং অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের উপরিউক্ত সাক্ষ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সাক্ষীরা সবাই বিভিন্নভাবে নানা বিষয়ে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছেন, এবং এই ভিত্তিহীন ও অসত্য সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করেই আপিল বিভাগ তাকে ফাঁসির দন্ড দিয়েছে আর সরকার সেই রায় তড়িঘড়ি করে বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করছে। কিন্তু একদিন সত্য প্রকাশ হবেই, ইনশাল্লাহ।

মানবতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এই বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সোচ্চার হউন।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম