আরবে আট বাংলাদেশীর শিরোচ্ছেদ ► বর্বরতা নাকি প্রাপ্য পাওনা!

 http://budhbar.com/wp-content/uploads/cartoon_on_president.jpg
গত শুক্রবার বিকাল ৪টা।ডিউটিতে যাওয়ার পর বস আমাকে প্রথম যে জিনিসটি দেখাল সেটি হচ্ছে ৮ বাংলাদেশীর শিরচ্ছেদ।জিজ্ঞাসা করলাম কেন শিরচ্ছেদ করা হয়েছে ।বলল খুন করার দায়ে ।সাথে এটাও বলল একই দিন তায়েফেও ৩ সৌদিয়ান নাগরিককে শিরচ্ছেদ করা হয়েছে ।যারা বলে বেড়াচ্ছে শুধু গরীব দেশের লোকজনকে শিরচ্ছেদ করা হচ্ছে তাঁদের উচিত পরিসংখ্যান দেখা । ২০০৭ সালে সৌদি আরবে কমপক্ষে ৭৬ বিদেশিসহ মোট ১৫৮ জনের শিরশ্ছেদ করা হয় (৭৬জন ছাড়া বাকী সব সৌদিয়ান)। ২০০৮ সালে শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ১০২। এর মধ্যে প্রায় ৪০ জন বিদেশি (বিদেশী ছাড়া বাকী ৬২জন সৌদিয়ান )। ২০০৯ সালে ১৯ জন বিদেশিসহ মোট ৬৯ জন (বিদেশী ছাড়া বাকী ৫০জন সৌদিয়ান ) এবং গত বছর কমপক্ষে ৬ বিদেশিসহ মোট ২৭ জনের শিরশ্ছেদ করা হয় (বিদেশী ৬জন ছাড়া বাকী ২১জন সৌদিয়ান )।


অনেকেই সৌদিয়ানদের বর্বর ইত্যাদি ইত্যাদি করে সৌদিয়ানদের ১৪গুষ্টি উদ্ধার করছি কই আজ থেকে ১৫বছর কিংবা ১০বছর আগে তো এমন ছিলনা।আজ কেন বাংলাদেশের ভিসা বন্ধ?কেন যে বাংলাদেশী শ্রমবাজার বাংলাদেশের দখলে ছিলো তা অন্যদেশের হাতে চলে গেছে ?




রিয়াদে পানির বোতলে করে বাংলা মদ বিক্রি করে বাংলাদেশীরা এটাকি আপনি জানেন?



নানারকম চুরি ,রাজনীতি নিয়ে মারামারি ,অন্যজেলার লোকের সাথে মারামারি এইসব করে বাংলাদেশীরা সেটা কি আপনি জানেন?










আপনি কি জানেন ইন্দোনেশিয়ান মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশীরা দেহ ব্যবসা করে ?যে সংবাদটিতে একজন বাংলাদেশী ভাই যিনি নিজে অপরাধ করেছেন আবার তিনিই নিজ দেশের মানুষকে নিয়ে মন্তব্য করেছে যে বাঙালী মানেই হারামী ।


  

পৃথিবীর কোনো দেশের নাগরিকরা কি এমন করে ?



 http://amardeshonline.com/img/news/Cartoon_6.jpg
একটা সময় ছিল বাংলাদেশীদের পরিশ্রমী জাতি হিসেবে এই দেশে যথেষ্ট সম্মান করা হত।কিন্তু এখন বাংলাদেশী মানেই সৌদি আরবে খারাপ জাতি ।এইসব কাদের জন্য?কেউ যদি বলে সৌদিয়ানদের জন্য তাহলে আমি আমার ১১বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে বলব পুরো দায়ভার আমাদের।আগে একটা ভিসা পাওয়া যেত মাত্র ২০০০রিয়ালে এখন সেটার দাম গিয়ে ১২০০০রিয়ালে ।কেন জানেন?কারণ,আমরা বাংলাদেশীরা একজন আরেকজনকে সব সময় বাঁশ দিতে ব্যস্ত থাকি ।

ভাই এই দেশে অপরাধ করে ধরা পড়লে বিচার হবে এমনটাই স্বাভাবিক।খুন ধর্ষনে স্বজনপ্রীতি হয়েছে এমন ঘটনা ১০০তে ২টার কথাও শুনিনি ।এইটা আমাদের দেশনা যে প্রকাশ্যে খুন করার পরও খুনী ঘুরবে ।











খুন,ধর্ষন করলে শাস্তি কঠিন এই দেশে সে বাঙালী হউক আর সৌদিয়ান হউক কিংবা পাকিস্তানী হউক।প্রায় পাকিস্তানীদের শিরচ্ছেদ করা হয় মাদক ব্যবসার কারণে ।আমাদের দেশের মত রাষ্ট্রপতি মাফ করে দেয়না।



বাংলাদেশীরা যে অপরাধ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন ধরে এমন অপরাধ যদি আমাদের দেশে এসে কোন দেশের লোক দিনের পর দিন করে যেত তাহলে আমরাই গনপিটুনী দিতাম।



কর্মক্ষেত্রে সৌদিয়ানরা আজ থেকে ১০বছর আগে আমাদের যে সম্মান দিত সেটা এখন দেয়না কেন?কেন বাংলাদেশী পাসপোর্টটায় আমার লজ্জার কারণ?কেন আমার বস আমাকে বলে আমি যেন আমার পরিচয় দেয় ইন্ডিয়ান নাগরিক হিসেবে ?কেন একজন বাংলাদেশীর যোগ্যতা থাকা স্বও্বেও ১লাখ ৩০হাজার টাকা বেতনের চাকরিটি ১ই্ন্ডিয়ান কে দিয়ে দেয়া হয়? এই প্রশ্ন গুলোর উওর কেউ দিতে পারবেন আমাকে?
http://media.somewhereinblog.net/images/thumbs/Tareqbdmiu_1289396739_1-Cartoon_Huda.jpg


আমি পারব।কারণ.আমি এমন একটি দেশের নাগরিক প্রতিটি সরকার থেকে শুরু করে সাধারণ পাবলিকও যথেষ্ট দূর্নীতিবাজ।সৌদি সরকার সুযোগ দিয়েছে যে যদি নিহতের পরিবার মাপ করে দেয় তাহলে ক্ষমা পেয়ে যাবে ।কিন্তু নিহতের পরিবার করেনি ।



আমরা সবাই জিল্লুর হৈয়া যাইতেছি, নাকি জিল্লুর আমাদের মত হৈতেছে বুঝতাছি না

বাঙ্গালের এই বাঙ্গাল (?) কমেন্ট থেকে অনেক কিছু উপলদ্ধি করার আছে । থ্যাংকস বাঙ্গাল  


http://a4.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash4/267970_238589756164168_100000394370450_784845_1208432_n.jpg



হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য হত্যার ব্যাপারে কিসাসের বিধান লিখে দেয়া হয়েছে। (১৭৬) স্বাধীন ব্যক্তি হত্যা করে থাকলে তার বদলায় ঐ স্বাধীন ব্যক্তিকেই হত্যা করা হবে, দাস হত্যাকারী হলে ঐ দাসকেই হত্যা করা হবে, আর নারী এই অপরাধ সংঘটিত করলে সেই নারীকে হত্যা করেই এর কিসাস নেয়া হবে। (১৭৭) তবে কোন হত্যাকারীর সাথে তার ভাই যদি কিছু কোমল ব্যবহার করতে প্রস্তুত হয়, (১৭৮) তাহলে প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী (১৭৯)রক্তপণ দানের ব্যবস্থা হওয়া উচিত এবং সততার সঙ্গে রক্তপণ আদায় করা হত্যাকারীর জন্য অপরিহার্য। এটা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে দন্ড হ্রাস ও অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করবে (১৮০) তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। - বাকারা-১৭৭

১৭৬) ‘কিসাস’ হচ্ছে রক্তপাতের বদলা বা প্রতিশোধ। অর্থাৎ হত্যাকারীর সাথে এমন ব্যবহার করা যেমন সে নিহত ব্যক্তির সাথে করেছে। কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে, হত্যাকারী যেভাবে নিহত ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ঠিক সেভাবে তাকেও হত্যা করতে হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে, সে একজনকে হত্যা করেছে, তাকেও হত্যা করা হবে।


১৭৭) জাহেলী যুগের হত্যার বদলা নেয়ার ব্যাপারে একটি পদ্ধতি প্রচলন ছিল। কোন জাতি বা গোত্রের লোকেরা তাদের নিহত ব্যক্তির রক্তকে যে পর্যায়ের মূল্যবান মনে করতো হত্যাকারীর পরিবার, গোত্র বা জাতির কাছ থেকে ঠিক সেই পরিমাণ মূল্যের রক্ত আদায় করতে চাইতো। নিহত ব্যক্তির বদলায় কেবলমাত্র হত্যাকারীর প্রাণ সংহার করেই তাদের কলিজা ঠাণ্ডা হতো না। বরং নিজেদের একজন লোক হত্যা করার প্রতিশোধ নিতে চাইতো তারা প্রতিপক্ষের শত শত লোককে হত্যা করে। তাদের কোন অভিজাত ও সম্মানী ব্যক্তি যদি অন্য গোত্রের এখন সাধারণ ও নীচু স্তরের লোকের হাতে মারা যেতো, তাহলে এক্ষেত্রে তারা নিছক হত্যাকারীকে হত্যা করাই যথেষ্ট মনে করতো না। বরং হত্যাকারীর গোত্রের ঠিক সমপরিমাণ অভিজাত ও মর্যাদাশীলকোন ব্যক্তির প্রাণ সংহার করতে অথবা তাদের কয়েকজনকে হত্যা করতে চাইত। বিপরীত পক্ষে নিহত ব্যক্তি তাদের দৃষ্টিতে যদি কোন সামান্য ব্যক্তি হতো আর অন্যদিকে হত্যাকারী হতো বেশী মর্যাদাশীল ও অভিজাত, তাহলে এক্ষেত্রে তা নিহত ব্যক্তির প্রাণের বদলায় হত্যাকারীর প্রাণ সংহার করতে দিতে চাইতো না। এটা কেবল, প্রাচীন জাহেলী যুগের রেওয়াজ ছিল না। বর্তমান যুগেও যাদেরকে দুনিয়ার সবচেয়ে সুসভ্য জাতি মনে করা হয় তাদের সরকারী ঘোষণাবলীতেও অনেক সময় নির্লজ্জের মতো দুনিয়াবসীকে শুনিয়ে দেয়া হয়ঃ আমাদের একজন নিহত হলে আমরা হত্যাকারীর জাতির পঞ্চাশজনকে হত্যা করবো। প্রায়ই আমরা শুনতে পাই, এ ব্যক্তিকে হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ করার জন্য পরাজিত ও অধীনস্থ জাতির আটককৃত বহু ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। এই বিশ শতকের একটি ‘সুসভ্য’ জাতি নিজেদের এক ব্যক্তির হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছে সমগ্র মিসরীয় জাতির ওপর। অন্যদিকে এই তথাকথিত সুসভ্য জাতিগুলোর বিধিবদ্ধ আদালতসমূহেও দেখা যায়, হত্যাকারী যদি শাসক জাতির এবংনিহত ব্যক্তি পরাজিত ও অধীনন্থ জাতির অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে তাদের বিচারকরা প্রাণদণ্ডের সিদ্ধান্ত দিতে চায় না। এসব অন্যায় ও অবিচারের পথ বন্ধ করার জন্য আল্লাহ‌ এই আয়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিহত ব্যক্তি ও হত্যাকারীর কোনো প্রকার মর্যাদার বাছ-বিচার না করে নিহত ব্যক্তির প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য শুধুমাত্র হত্যাকারীরই প্রাণ সংহার করা হবে।


১৭৮) “ভাই” শব্দটি ব্যবহার করে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কোমল ব্যবহার করার সুপারিশও করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তোমাদের ও তার মধ্যে চরম শত্রুতার সম্পর্ক থাকলেও আসলে সে তোমাদের মানবিক ভ্রাতৃসমাজেরই একজন সদস্য। কাজেই তোমাদের একজন অপরাধী ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ করার পরিবর্তে নিজেদের প্রতিশোধ স্পৃহাকে যদি দমন করতে পারো তাহলে এটাই হবে তোমাদের মানবিক ব্যবহারের যথার্থ উপযোগী। এ আয়াত থেকে একথাও জানা গেলো যে, ইসলামী দণ্ডবিধিতে নরহত্যার মতো মারাত্মক বিষয়টিও উভয় পক্ষের মর্জীর ওপর নির্ভরশী। নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীরা হত্যাকারীকে মাফ করে দেয়ার অধিকার রাখে এবং এ অবস্থায় হত্যাকারীর প্রাণদণ্ডের ওপর জোর দেয়া আদালতের জন্য বৈধ নয়। তবে পরবর্তী আয়াতগুলোর বর্ণনা অনুযায়ী হত্যাকারীকে মাফ করে দেয়া হলে তাকে অবশ্যি রক্তপণ আদায় করতে হবে।


১৭৯) এখানে কুরআনে “মা’রুফ” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। কুরআনে অত্যন্ত ব্যাপকভাবে শব্দটির ব্যবহার লক্ষ করা যায়। এর অর্থ হচ্ছে, এমন একটি সঠিক কর্মপদ্ধতি যার সাথে সাধারণত সবাই সুপরিচিত। প্রত্যেকটি নিরপেক্ষ ব্যক্তি যার কোন স্বার্থ এর সাথে জড়িত নেই, সে প্রথম দৃষ্টিতেই যেন এর সম্পর্কে বলে ওঠে হাঁ এটিই ভারসাম্যপূর্ণ ও উপযোগী কর্মপদ্ধতি। প্রচলিত রীতিকেও (Common Law) ইসলামী পরিভাষায় “উর্‌ফ” ও “মা’রু‌ফ” বলা হয়। যেসব ব্যাপারে শরীয়াত কোন বিশেষ নিয়ম নির্ধারণ করেনি এমন সব ব্যাপারেই একে নির্ভরযোগ্য মনে করা হয়।


১৮০) যেমন হত্যাকারীর উত্তরাধিকারীরা রক্তপণ আদায় করার পরও আবার প্রতিশোধ নেয়ার প্রচেষ্টা চালায় অথবা হ্ত্যাকারী রক্তপণ আদায় করার ব্যাপারে টালবাহানা করে এবং নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিদাকারীরা তার প্রতি যে উদারতা প্রর্দশণ করে নিজের অকৃতজ্ঞ ব্যবহারের মাধ্যমে তার জবাব দেয়। এসবগুলোকেই বাড়াবাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।


হে বুদ্ধি – বিবেক সম্পন্ন লোকেরা! তোমাদের জন্য কিসাসের মধ্যে জীবন রয়েছে। (১৮১) আশা করা যায়, তোমরা এই আইনের বিরুদ্ধাচরণ করার ব্যাপারে সতর্ক হবে। - বাকারা-১৭৮


১৮১) এটি দ্বিতীয় একটি জাহেলী চিন্তা ও কর্মের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ। আগের মতো আজও বহু মস্তিস্কে এই চিন্তা দানা বেঁধে আছে। জাহেলিয়াত পন্থীদের একটি দল যেমন প্রতিশোধ গ্রহণের প্রশ্নে এক প্রান্তিকতায় চলে গেছে তেমনি আর একটি দল ক্ষমার প্রশ্নে আর এক প্রান্তিকতায় চলে গেছে এবং প্রাণদণ্ডের বিরুদ্ধে তারা এমন জবরদস্ত প্রচারণা চালিয়েছে যার ফলে অনেক লোক একে একটি ঘৃণ্য ব্যাপার মনে করতে শুরু করেছে এবং দুনিয়ার বহু দেশ প্রাণদণ্ড রহিত করে দিয়েছে। কুরআন এ প্রসঙ্গে বুদ্ধি-বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তিদের সম্বোধন করে তাদেরকে এই মর্মে সতর্ক করে দিচ্ছে যে, কিসাস বা ‘প্রাণ হত্যার শাস্তি স্বরূপ প্রাণদণ্ডাদেশের’ ওপর সমাজের জীবন নির্ভর করছে। মানুষের প্রাণের প্রতি যারা মর্যাদা প্রদর্শন করে না তাদের প্রাণের প্রতি যারা মর্যাদা প্রদর্শন করে সে আসলে তার জামার আস্তিনে সাপের লালন করছে। তোমরা একজন হত্যাকারীর প্রাণ রক্ষা করে অসংখ্যা নিরপরাধ মানুষের প্রাণ সংকটাপন্ন করে তুলছো।

৮ বড় না ১৮ কোটি বড় ?? অপরাধী বড় না দেশ বড় ??

 

আমি ব্লগার না। আমি ব্লগারদের মতো সাজিয়ে-গুছিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে জানিনা। আমি একজন প্রবাসী শ্রমিক। আমি জানি কিভাবে পরিশ্রম করে, নিজের শরীরের রক্ত-মাংস পানি করে রোজগার করে উপার্জন করতে হয়। এবং করিও সেটা। কষ্টে অর্জিত অর্থ দেশে পাঠায় বৈধ (ব্যাংক এর মাধ্যমে) নিয়মে। কারন আমি হুন্ডি ব্যাবহার করিনা। স্বল্প আয় করি। তবুও দেশে ফোন করার জন্য VOIP সিস্টেম (কম খরচ) ব্যাবহার করিনা। হুন্ডি ও VOIP call ২টায় আইনত অবৈধ। কারন আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। আমি আমার দেশের আইন ও বর্তমানে যেখানে অবস্থান করছি অই দেশের আইনকে সম্মান করি। আমি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও অক্ষুন্ন রাখতে চাই বিদেশীদের কাছে।

আজ থেকে ৩ বছর আগে আমি যখন প্রথম প্রবাসে আসি তখন আমি অনেক সমস্যার মধ্যে ছিলাম। যেই ভিসায় এসেছি অই ভিসাতে কাজ ছিলোনা বলে। প্রায় ১৪ মাসের মতো বেকার (মাঝে মাঝে ২-১দিন পেতাম) ছিলাম। তখনকার সময়ে এমনও এমন দিন কাটিয়েছি পুরো সপ্তাহে ২বেলা ভাত, ২-৩বেলা নাস্তা আর সাদা পানি পান করে জীবন অতিবাহিত করেছি।

কিন্তু আমাকে তো এই দেশের সরকার প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদ করেনি !! এমন কি এখানকার পুলিশও ও কখনো আমার দিকে ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে তাকায়নি। কেন জানেন ?? কারন আমি আমার কর্মসংস্থানের বেদুইন নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করিনি। বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের গুদামে ডাকাতি করিনি।

বুঝে আসতেছে তো আমি কি বলতে চাচ্ছি ??

সম্প্রতি প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদ করা হয়েছে ৮জন বাংলাদেশী নাগরিক কে। তাদের অপরাধ ছিল তারা ২০০৭ সালে তাদের কর্মসংস্থান (বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের গুদাম) এ ডাকাতি করার চেষ্টা ও সেখানকার নিরাপত্তাকর্মী (মিশরীয়) কে হত্যা করেছে। সৌদি আরবের প্রচলিত আইন নিয়ে কথা বলাটায় বেকার। কারন আমার লেখাতে তাদের কিচ্ছু হবেনা। আমি মানি তাদের বিচারব্যাবস্থা মধ্যযুগীয় ও বর্বর।

আমরা যে যেখানে থাকি (দেশে-বিদেশে)। সবাই নিজ নিজ দেশের আইন-কানুন সম্পর্কে জ্ঞান রাখি & রাখা উচিৎ। যদি আপনি একজন মানুষ হন তাহলে অবশ্যয় রাখবেন। আমরা বিদেশে শখ করে আসিনাই। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমান কর্মসংস্থান নেই বলে আমরা বাধ্য হয়ে অন্যের গোলামী করার জন্য মা, বাবা, ভাই, বোন ছেড়ে দেশ ছেড়েছি। তারমানে হল আমাকে অবশ্যয় জাগ্রত থাকতে হবে। যাতে করে আমার দ্বারা এমন কোন কাজ সংগঠিত না হয়, যার কারনে আমার মা, বাবা কে চিৎকার করে কান্নাকাটি করতে হয়। আমার কাজের জন্য সকল বাংলাদেশীদের মাথা নিচু করতে হয়।

সাজাপ্রাপ্ত ৮ বাংলাদেশী কি ঘটনারদিন রাতে সৌদি আরব গিয়েছিলো যে তারা ওখানকার আইনকানুন সম্পর্কে অজ্ঞ। বাংলাদেশে এমন মানুষ অনেক কম আছে যারা সৌদি আরবের কানুন সম্পর্কে জানেনা। তারা কেমন মানুষ ছিল ?? যাদের নিজের দেশের অস্তিত্ব রক্ষার চিন্তাতো ছিলইনা , এমনকি প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদ হওয়ার ভয় ও ছিলোনা।


ঘটনা ঘটার পর সমস্ত পেপার-পত্রিকা/ ব্লগে দেশপ্রেম আর মানবতার হিড়িক পরে গেছে। কেউ ব্যাস্ত সৌদিদের গোপন কিচ্ছা কাহিনী নিয়ে। কেউ ব্যাস্ত তাদের পুরাতন মন মানসিকতার বিচার ব্যাবস্থা নিয়ে। গোপন কাহিনী কি আমাদের নেই ?? কোথায় ছিল মানবতা ?? যখন বাংলাদেশে প্রকাশ্যে কোন শিক্ষককে পিটিয়ে মারা হয়েছিলো ?? আপনারা মানবাধিকার কর্মীরা আগে কোথায় থাকেন ?? যখন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজের ছাত্রদেরকে নির্বিচারে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সাধারণ মানুষ নিজেদের দাবী আদায় করতে গিয়ে পুলিশের মার খেয়ে ঘরে ফিরে। মানবাধিকার কর্মীরা তখন কেন সক্রিয় হয় যখন কোন অপরাধীর বিচার করা হয়। কোন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে ক্রস ফায়ারে মারা হয় ??

মিশরের অই নাগরিককে কি আপনাদের কাছে মানবের মতো লাগেনি ?? যে নিজে ডাকাতি/মানুষ হত্যা না করে নিজের কাজ করতে গিয়ে জান দিয়েছে।

পৃথিবীকে এক চোখে দেখেন কেন ?? আর এক চোখা হয়ে যদি বেঁচে থাকতে হয় তাহলে ব্লগিং করে সময় নষ্ট না করলে পারেন। আপনার কাছে কি আমার এই প্রশ্নের উত্তর আছে ??

সৌদি আরবে যদি এক মিশরীয়কে হত্যার শাস্তিতে ৮ বাংলাদেশীকে শিরচ্ছেদ করার বদলে যদি এক বাংলাদেশীকে হত্যার শাস্তিতে ৮ মিশরীয় কে শিরচ্ছেদ করতো, তাহলে আপনি আপনার ব্লগ কিভাবে লিখতেন ??

আমাদের নিজেদের দোষে নিজেরাই ঘৃণিত। আমরা সমস্ত পৃথিবীকে নিজের ঘরের মতো মনে করি। তাইতো তাশ খেলা নিয়ে ঝগড়া করে ভিনদেশে খুন করি আমার জাতি ভাইকে। যার কারনে অই দেশে অবস্থানরত হাজার হাজার বাংলাদেশীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। নতুন ভিসা বন্ধ করা করা হয়। পুরাতন ভিসার নবায়ন বন্ধ করা হয়। হাজার হাজার মানুষকে আবারো ঠেলে দেওয়া হয় দরিদ্রসীমার নিচে। মুষ্টিমেয় কিছু বিপথগামী মানুষদের জন্য লজ্জা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয় কোটিকোটি শান্তিপ্রিয় মানুষকে।

আপনারা যারা বর্তমানে অই ৮ অপরাধীর সাফায় গাইছেন। তাদের ৯০% ই দেশে থাকেন। তাইতো নিজের মনের মতো রাজনৈতিক মনোভাব ও নাস্তিক/আস্তিকের চিন্তা ভাবনা নিয়ে লিখতে ব্যাস্ত। কখনো কি ভেবেছেন অই সকল প্রবাসীদের কথা। যারা দিনরাত/মানুষিক-অমানুষিক পরিশ্রম করে জিবিকা নির্বাহ করে, দেশের জন্য রেমিটেন্স পাঠায়।

আছেন তো ভাবের মধ্যে। ব্লগিং করতে তো আর পয়সা লাগেনা।

একবার এসে দেখুন বিদেশ। বুঝবেন ব্লগিং কারে বলে। যখন রাস্তায় নামবেন আপনাকে যখন খুনি বাঙালি বলে খেপাবে অন্য দেশিরা। জরুরী কাজে পুলিশের কাছে গেলে কপাল কুচকাবে বাংলাদেশী দেখে। তখন কেমন লাগবে ??

আর এই ব্যাপারটি নিয়ে তো আমাদের সরকার প্রধান দল ও বিরোধী দলের কোন বক্তব্য নেই। কেন নেই এটা নিয়ে লিখুন। আগে নিজেদেরকে শুদ্ধ করার চেষ্টা করুন।

লোক দেখানো মানবতাবাদী না হয়ে সত্যিকারের দেশ প্রেমিক হওয়ার চেষ্টা করুন...

বাংলাদেশীকে হত্যার দায়ে সৌদি আরব নিজ দেশেরই এক নাগরিকের শিরশ্ছেদ করেছে। গতকাল সুলতান আল সাহলি নামের ওই সৌদি নাগরিকের শিরশ্ছেদ করা হয়। তিনি ছিনতাইয়ের উদ্দেশে বাংলাদেশী নাগরিককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন করেন। রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তবে বাংলাদেশী নাগরিকের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ নিয়ে চলতি বছরেই সৌদি সরকার ২৬ জনের শিরশ্ছেদ করে। আর আগের বছর হয়েছিল ৭৬টি। সৌদি আরবে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি হিসেবে এরকম শিরশ্ছেদের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে সরকার। যদিও সৌদি শরীয়া আইনের বিকল্প ভাবছে না বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে।

1 comments:

reza বলেছেন...

mr shafiqul,
sorry brother! i have a counter question? if your brother were killed? then what will be your answer? think your question is rubbish?

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম