আমাদের যাবতীয় বিষয়ে সফলতার জন্যে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা বলে একটি কথা আছে। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে সম্পর্কে আল্লাহ্ নিজেই বলেন, তোমরা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখ- যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। সূরা মায়েদা ২৩। তিনি আরো বলেন, [যে আল্লাহকে ভয় করে চলবে, তিনি তার জন্যে পথ বের করে দিবেন। তাকে ধারণাতিত ভাবে রিযিক দান করবেন। আর যে আল্লাহর প্রতি ভরসা করবে, তিনিই তার জন্যে যথেষ্ট হয়ে যাবেন।] সূরা তাহরীম ২.৩।
বিবাহ মানুষের জীবনে একটি অতি আবশ্যকিয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে এসে বেশীর ভাগ মানুষ অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। তাই তারা যদি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা করে এবং নিম্নের এই আয়াত ও হাদীছের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে অগ্রসর হয়, তবে অবশ্যই অবশ্যই আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন। বিবাহ করার পর কি হবে? কি করবে? কি খাওয়াবে? কিভাবে সংসার চলবে? ইত্যাদি চিন্তা করে, তার সকল দুঃশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ্। যা আমার জীবনে বাস্তব হয়েছে। বিবাহ করার সময় আমার কিছুই ছিল না। কিন্তু বিবাহের পর পরই আমার জীবনে অভাবনীয় অকল্পনীয় উন্নতী শুরু হয়। এরকম আরো অনেকের জীবনেই ঘটেছে বলে আমি জানি। আল হামদু লিল্লাহ।
যাই হোক আল্লাহ তা'আলা বলেন, [তোমাদের মধ্যে অবিবাহিতদের (ছেলে-মেয়ে) এবং সৎ চাকর-চাকরানীদের বিবাহের ব্যবস্থা কর। ওরা যদি অভাবী হয়, তবে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা তাদেরকে সম্পদশালী করে দিবেন।]সূরা নূরঃ ৩২। ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, বিবাহের মাধ্যমে তোমরা সম্পদ অনুসন্ধান কর। ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি আশ্চর্য হই এমন লোককে নিয়ে, যে বিবাহের মাধ্যমে সম্পদ অনুসন্ধান করে না।
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন, তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর জন্যে আবশ্যক। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে: যে ব্যক্তি বিবাহ করে নিজের চরিত্রকে পুতঃপবিত্র রাখার উদ্দেশ্যে। (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী ও নাসাঈ)
আরেকটি কথা, পাত্রী পক্ষকে যদি আশস্ত করতে পারেন যে, আপনি শরীয়ত সম্মতভাবে স্ত্রীর যাবতীয় হক আদায় করবেন। কোন যৌতুক নিবেন না। ইশারা-ইঙ্গিতেও কখনো যৌতুকের দাবী পেশ করবেন না। তবে আশা করা যায়, আপনার মোহরানা যৌক্তিক পর্যায়ের হবে।
আপনার বিবাহ বরকতময় হবে। আর আপনিও নির্ভিগ্নে একটি শান্তির নীড় তৈরী করতে পারবেন। নবী (সাঃ) বলেন,ঐ নারী সর্বাধিক বরকতময়ী, যাকে বিবাহ করতে সবচেয়ে কম খরচ হয়েছে। (নাসাঈ)
বর্তমান সমাজে অতিরিক্ত মোহরানা ধার্য করার যে প্রবণতা আছে তা মূলতঃ অলিখিত ও অনুল্লেখিত যৌতুক প্রদানের কারণেই হয়ে থাকে। যা সর্ম্পূণটাই যুলুম বা অন্যায় এবং অত্যন্ত লজ্জাকর বিষয়ও বটে। ঘটকদের দ্বারা বা অভিভাকরা নিজেরাই বাজারে গরু দাম করার মত করে পাত্রকে কত দিবেন, কি কি দিবেন ইত্যাদি বিষয়ে দরকষাকষি করে থাকেন। নগদ টাকা, বিদেশ পাঠানো, জমি, বাড়ী, ফার্নিচার, টিভি, মোটর সাইকেল আরো কত কি..। তখন পাত্রী পক্ষ বাধ্য হয়ে মোহরানাটাও মোটা অঙ্কের দাবী করে বসেন। যাতে করে গন্ডোগোল হলে আপনাকে মোহরানার প্যাঁচ দিয়ে আকটানো যায়।
রাইটার :
আবদুল্লাহ আল কাফী
0 comments: