আমার এক বড় ভাই ঢাকায় একটুকরো জমি কিনেছেন। তার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিলো তা। অনেক কস্টে টাকা জমিয়ে স্বামী স্ত্রী মিলে উপার্জন করে তবে করতে পেরছেন। ক’জন পারে? কিন্তু জমিতে তো আর বাড়ি করা যাচ্ছে না। এতো টাকা নেই এখন। আহ কি যে করেন!! যাইহোক তার শান্তি নাই। ক’দিন পর দেখলেন একটা ফ্লাট স্বস্তায় যাচ্ছে। কিন্তু টাকা নাই। ফ্লাট টা কিনে ফেললে বাসা ভাড়ার টাকাটা বাচানো যেতো। যাই হোক তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল। তাই ব্যাংক থেকে কিছু লোন পেয়ে ফ্লাট কিনার বায়না দিয়ে দিলেন। কিন্তু এখন তার মাথায় প্রচুর ঋনের বোঝা। তার ছোট মেয়েটার বয়স তিন। তার পিছনেও প্রচুর টাকার দরকার। ভাইজান ভেবে পান না কি করবেন?
ঐ ভাইয়েরই এক ছোট ভাই ছিলো যে কিনা কোন কিছুই জমা করে রাখতে পারতো না। তার চাকুরি আছে তবুও সে বিয়ে করতে পারছে না কারন তার কোন ব্যাংক ব্যালান্স নাই। কিন্তু সে মনের সুখে আছে। আমি তাকে চিনি। সে আমার বন্ধু। আমি জানি ও কোন কিছুর পরোয়া করে না এক আল্লাহ কে ছাড়া। তাই তার কোন চাহিদা নাই। কিন্তু ওর ভাই ওকে দেখে হাসেন আর মাঝে মাঝে রাগও করেন ওর দুরদর্শিতার অভাব দেখে। তারপরও আমার এই বন্ধুটি কষ্ট পায় তার ভাইয়ের প্রাচুর্যের মোহ দেখে।
আমার বন্ধুটি কিছুদিন পর একটি আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ (ইরাসমস মনডুস) পেয়ে যায়। আর একটি সুন্দরী ও তারই মতো উত্তম আমলকারী ভাল পরিবারের মেয়েকে পেয়ে যায়। মেয়েটি তার পরিবার আমার বন্ধুর অবস্থা বুঝতে পারে ও বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। অনারম্বর ঐ বিয়ের মতো মজার আর অসাধারন কিছু আজ পর্যন্ত আমি দেখি নি। বিয়ের পরে ওরা দুজন ইউরোপে পাড়ি জমায়।
মাঝে মাঝে আমার বন্ধুটি আমাকে ফোন করে বিরক্ত করে। ওর সাথে ফোনে কথা বললেই মনটা কেন যেন শান্ত হয়ে যায়। আর ওর হতভাগ্য ভাইয়ের কথা মনে পড়ে। আর একটা দীর্ঘশ্বাস নিসৃত হয়।
(এই খুদ্র গল্পটি কাল্পনিক। কারও বাস্তব জীবনের সাথে মিলে গেলে তা কাকতালীয়।)
নোটঃ
০১। প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন করে রাখে, যতোক্ষন না তোমরা কবরে উপনীত হও। এটা সংগত নয়, তোমরা শীঘ্রই তা জানতে পারবে। আবারো বলছি এটা সংগত নয়, তোমরা শীঘ্রই তা জানতে পারবে। (সুরা তাকাসুরঃ ১-৪)
০২। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্নিত, রাসুল (সঃ) বলেন, “চারটি বিষয়ের উপর লক্ষ্য রেখে বিয়ে করা যায়- তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য্য ও তার দীনদারী। অতএব তুমি দীনদারীকেই প্রাধান্য দিবে অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৭২৩)
০৩। আল্লাহ তার বিশ্বাসী বান্দাদের কে এমন জায়গা হতে রিযিক প্রদান করেন যে সে কল্পনাও করতে পারে না।
০৪। পার্থিব জীবনের প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা কখনো শেষ হবার নয়। তাই তা কখনও মনের শান্তি এনে দিতে পারে না।
০৫। হে আল্লাহ, আমরা সম্পদের ফিতনা থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই। আমরা তো কেবল আপনারই মুখাপেক্ষী। আর আপনার দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন।
রাইটার :
Shankho Chill
প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা
☼→
ব্লগ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: