বর্তমানে আমাদের সমাজে এক ধরনের লোক দেখা যায় তারা নিজেদের বিবেকবান বলে দাবী করেন।আমরা অনেকেই মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহন করেছি বলে ভাব দেখাই ইসলাম আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। অন্য কেউ ইসলাম নিয়ে কিছু বলতে এলে আমরা অনেকে বিরক্ত বোধ করি ।আবার কিছু মানুষ তাদের টিটকারী মারতে খুব মজা পান।এরা সারাদিন গান-বাজনা শোনে তখন খারাপ লাগে না আর কেউ ধর্মের কথা বললেই বলা শুরু করে নিজের চরকায় তেল দাও,ফতোয়াবাজি বন্ধ করো,আইছে হুজুর,এগুলো আমরা জানি,এখন সময় নাই…ইত্যাদি ।আর কিছু মানুষ শুধু এসব বলেই ক্ষান্ত হন না ।তারা ইসলামিক ভাব-ধারী মানুষের ভুল-গুলি খুজতে থাকে। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ;
"আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম। (৩;১০৪)
আল্লাহ পাক এই আয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশ দান করেছেন ।উহা এই যে,উম্মতের মধ্যে একটি বিশেষ দল থাকতে হবে যারা লোকদের খালি ইসলামের দিকে দাওয়াত দিবে ।এই হুকুম পুরো মুসলিম জাতির উপর ছিল । কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় আমরা উক্ত নির্দেশ অমান্য করে চলছি । খৃষ্টানরা বিশ্বব্যাপী ধর্ম প্রচার করছে । কিন্ত মুসলমান দের কি এমন কোন বিশেষ দল আছে ?এর উত্তর নাই না বললেও আছে বলাটা দুষ্কর । যদি কোন দল বা ব্যক্তিবিশেষ এই কাজ করতে থাকে , তবে সাহায্য ও সহযোগিতার পরিবর্তে চারদিক হতে এমন কথাবার্তা আস্তে থাকে যে, শেষ পর্যন্ত বসে পড়া ছড়া কোনো উপায় থাকে না ।অথচ তার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা আর ত্রুটি গুলো ভালভাবে সংশোধোন করা সবার দায়িত্ব ছিল ।
আমরা কারো কাছ থেকে ধর্ম বিষয়ক উপদেশ পেলে আগে তাকে নানা বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করি আর সে কতটুকু ধর্ম পালন করে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলি ।
সহীহ হাদিসে বর্ণিত আছে ; ”…………তোমাদের মধ্যে যে আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ করে থাকে ”।
আরে ভাই আমরা সবাই জানি পুলিশ রা ঘুষ খায় ,তাহলে রাস্তায় কোন পুলিশ যদি থামতে বলে আপনি তখন থামেন ।ঐ পুলিশ হয়তো ৮ পাশ ,ঘুষ খায়…তারপর ও আপনি তার কথা শোনেন ।তখন ত প্রশ্ন তোলেন না আপনি নিজেই ত আইন মানেন না আমাকে থামান কেন ? আর কেউ আমাদের ইসলাম নিয়ে একটু কথা বলতে চাইলেই আমরা জারী-গান শুরু করে দেই ।আরে ভাই অই পুলিশের পোশাকের ভয়ে আপনি কিছু বলার সাহস পান না আর আল্লাহ কে আমাদের কি একটু ও ভয় লাগে না ।আসলে দোষ হচ্ছে আমাদের মানসিকতার । কিছু লোক এমন ভাব করে যেন আল্লাহ –রাসুলের কথা শোনলে মানে হয় যেন খুব অন্যায় কাজ হয়ে গেছে ।আবার কেউ বলে সবসম্য এক প্যাচাল শুনতে ভাল লাগে না ।আমাদের ত পৃথিবীতে গান-বাজনা করার জন্য পাঠান হয় নাই ।
আল্লাহ বলেছেন ; “وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।” (৫১;৫৬)
আর আমরা এমন ভাব দেখাই আমরা ত মুসলামান আমাদের জান্নতে যাওয়া ঠেকায় কে ।আরে ভাই এসব দিয়ে নামধারী মুসলমান হও্য়া যায় কিন্ত ঈমানদার হও্য়া যায় না ।
আল্লাহ বলেছেন ,
“ মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?
আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথ্যুকদেরকে।
যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফয়সালা খুবই মন্দ।” (২৯;২-৪)
আমরা চিন্তা-চেতনার সাথে কাফেরদের চিন্তা-চেতনার কোন পার্থক্য নাই ।আমরা সপ্তাহে খালি একদিনের জন্য মুসল-মান হই আর বাকি ৬ দিন আল্লাহ কে ভুলে থাকি । টিভি দেখতে আমাদের সময়ের অভাব হয় না,আর নামাজ পড়ার কথা বললেই ডানহাত ,বামহাত আর অজু হাত দেখাই ।
আরে ভাই নবীজী (সাঃ) নিজের গায়ের রক্ত কি এই জন্য ঝরিয়েছিলেন ।কাফেররা ওনাকে ঠিকমতো নামাজ পর্যন্ত পড়তে দেয় নাই । উনি নামাজ পড়ার সময় তার মাথায় মৃত উটের ভুরি চাপিয়ে দিয়েছিল ।তারপর ও উনি নামজ ত্যাগ করেন নাই ।উনি ত যুক্তি দিতে পারতেন যে,আল্লাহ এরা আমাকে নামাজ পড়তে দেয় না,আমি নামাজ পড়ব না ।
তাহলে আমরা কি ধরণের মুসলমান ?
তাই সকল মুসলিম ভাইদের কাছে বলছি আমাদের কি এখন ও আল্লাহ র কথা শোনার সময় হয় নাই ?
আল্লাহ বলেছেন ; “যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। ” (৫৭।;১৬)
তাই সকল মুসলমান ভাইদের অনুরোধ করছি আসুন আমরা সবাই ইসলাম কে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পালন করার চেষ্টা করি ।
রাইটার : Mohaamad Khairul Halim Rimon
আমরা কী ধরণের মুসলমান ?
☼→
ব্লগ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: