মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার দুর্দান্ত কিছু ফ্রি টিপস

শুরুর কথা:
গতবছর ২২ অক্টোবর মেডিকেল কলেজসমূহে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারও ধরে রাখা যায়, অক্টোবরের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় সপ্তাহের শুক্রবার সকাল ১০ টায় সরকারী এবং বেসরকারী সকল মেডিকেল কলেজসমূহে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার এই কঠিন যুদ্ধকে সামনে রেখে সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নেয়াটাই সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ। আমি জানি, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষর্থীরা জীবনের খুব কঠিন কিছু সময় এখন পার করছেন। সবার জীবনেই এরকম কিছু কঠিন এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবার সময় আসে। আমি মনে করি, মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেয়াটা কঠিন কোন ব্যাপার না, বরং প্রস্তুতির সময়টুকুকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো খুব গুরুত্ব্পূর্ণ। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরা কিছু টিপস আজকে শেয়ার করছি। এই টিপসগুলো আমি নিজের ক্ষেত্রে অনুসরণ করেছিলাম। একথাগুলোই যে সব কথার শেষ কথা, তা নয়; নানা মুনীর নানা মত থাকতেই পারে। গাইড বইগুলোতেও বিভিন্ন পরামর্শ বা উপদেশ লেখা থাকে। কিন্তু তারপরেও এমন কিছু কথা থেকে যায়, যেগুলো আগে থেকে জেনে নিলে পরীক্ষার প্রিপারেশনটা পূর্ণতা পায়। তাই মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক আমার এ লেখাটি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাজে আসবে বলেই আশা করছি।


যে নিয়মগুলো মেনে চলাটা জরুরী:
১. আমার কাছে পড়ালেখা করাটাকে পৃথিবীর সবচাইতে কঠিনতম কাজ বলে মনে হয়। মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছুদের অনেকের কাছেই এ কথাটা মনে হতে পারে। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার আগে পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়াটা খুব জরুরী। সময় খুবই কম, কিন্তু সিলেবাস পাহাড়সম। বিশেষ করে পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞানের মোট ৬ টি বইয়ের খুঁটিনাটি মাথায় রাখাটা আবশ্যক। খুব কঠিন একটা সত্যি কথা হলো, ভর্তি পরীক্ষার আগে প্রস্তুতি নেবার এই সময়টুকু একবার নষ্ট করে ফেললে কোন কিছুর বিনিময়েই আর তা ফিরে আসবেনা। অতএব, সত্যিই যদি ভালো প্রিপারেশন নিতে হয়, দৈনিক ১৮-২০ ঘন্টা শ্রম দিয়ে সিলেবাস শেষ করে ফেলতে হবে এবং যত বেশি সম্ভব রিভিশন দিতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার আগে ব্লগিং, চ্যাটিং, আড্ডা, প্রেম -এ বিষয়গুলোকে আগামী তিন-চার মাসের জন্যে শেলফে তুলে রাখতে হবে।

২. কোন কোচিং সেন্টারে ভর্তি না হলে মনে শান্তি পাওয়া যায়না। বন্ধু-বান্ধবেরা সব ভর্তি হয়েছে, আর আমি হবোনা, তা-তো হয়না। কিন্তু আমার মতে কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে এত টাকা, যাতায়াত কষ্ট, সময় -এগুলো না করে সেই শ্রম এবং সময়টা বাসায় কাজে লাগানো জরুরী। অনেকে হয়তো বলবে যে, কোচিং সেন্টারগুলোতে ভর্তি হলে পড়া ঠিক মতো হয়, পড়ার চাপ থাকে, পরীক্ষাগুলো দেয়া হয়, আইডিয়া বাড়ে ইত্যাদি কথা। কিন্তু আমার সাজেশন হলো, নামীদামী কোন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে ক্লাস করছে এমন বন্ধু-বান্ধবীর সাথে খাতির রাখলে ওইসব কোচিং-এর পরীক্ষার শিটগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে বাসায় বসেই প্র্যাকটিস করা সম্ভব।

৩. সেপ্টেম্বর, ২০১১ থেকে যে কোন ১/২ টি কোচিং সেন্টারের মডেল টেস্টগুলো দেওয়াটা জরুরী। ভর্তি পরীক্ষার আগ পর্যন্ত চলা এসব মডেল টেস্টগুলোর প্রশ্নপত্র টাকা দিলেই কিনে নেওয়া যায় কোচিংগুলো থেকে। তারপর বাসায় বসে ফটোকপি করা ও.এম.আর শিটের মধ্যে ঘড়ি ধরে পরীক্ষাগুলো দেয়াটা জরুরী।

৪. মেডিকেল ভর্তির জন্য যে কোন এম.সি.কিউ পরীক্ষা দেবার পর সেটার ফিডব্যাক নেয়া এবং সঠিক উত্তরটি বই থেকে দেখে নেয়াটা জরুরী।

৫. 'অমুক ভাইয়ের পারসোনাল ব্যাচ' কিংবা কোচিং সেন্টারগুলোর প্রলোভনে পড়াটা যুক্তিহীন। কেননা, তারা যেসব কথা বলবেন বা লেকচার শিট দিবেন বা পরীক্ষাগুলো নিবেন, সেগুলো এখন নীলক্ষেতে কিনতে পাওয়া যায় এমন গাইড বইগুলোতেই সহজলভ্য।

৬. যেকোন প্রস্তুতিমূলক ছোট বা বড় পরীক্ষাগুলোতে স্টপ ওয়াচ ব্যবহার করাটা জরুরী।



কোন কোন বই পড়তে হবে?
কোন একটি সাবজেক্টের জন্য একাধিক লেখকের বই রয়েছে। এতে বিচলিত না হয়ে যে কোন একজন লেখকের বই ফলো করাটাই যথেষ্ট। এক্ষেত্রে ওই বিষয়ের অন্যান্য লেখকের লিখিত তথ্যগুলো নীলক্ষেত থেকে কেনা গাইডগুলোতে সুন্দর করে সাজানো রয়েছে। নীলক্ষেতে গেলেই এই বইগুলো পাওয়া যাবে।

আমার রেকমেনডেড পাঠ্য বইগুলো:
১. রসায়ন ১ম -কবির স্যার
২. রসায়ন ১ম - নাগ-নাথ স্যার
৩. পদার্থ ১ম এবং ২য় - তোফাজ্জল স্যার (গাণিতিক সমস্যার উদাহরণগুলো রানা স্যারের বই থেকে করতে হবে)
৪. প্রাণিবিজ্ঞান - আজমল স্যার
৫. উদ্ভিদবিজ্ঞান - আবুল হাসান স্যার

আমার রেকমেনডেড গাইড বইগুলো:
১. রয়েল গাইড
২. রেটিনা গাইড (প্রশ্নব্যাংকসহ)
৩. ফোকাস (এখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য শুধুমাত্র পদার্থ, রসায়নের গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্নগুলোও সলভ করতে হবে। আর গণিতটাও একবার ঝালিয়ে নিতে হবে।)
৪. এপেক্স - ইংরেজির জন্য
৫. কিরণের বই - সাধারণ জ্ঞানের জন্য
৬. জীববৈচিত্র্য (প্রাণিবিজ্ঞান এবং উদ্ভিদবিজ্ঞানের জন্য নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন সম্বলিত বই)



বিষয়ভিত্তিক পড়ার টেকনিক:
সাধারণ জ্ঞান: কিরণের বই থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি পড়ে ফেলুন। এই বইটির শেষে বিসিএস, পুলিশে ভর্তি, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ইত্যাদি যত প্রশ্ন আছে, সব মুখস্থ করে ফেলুন। তারপর ধীরে ধীরে এই বইয়ের অন্যান্য বিষয়গুলোতে চোখ বুলান।

ইংরেজি: বিগত বছরগুলোর মেডিকেল ও ডেন্টাল প্রশ্নপত্রে যেসব বিষয়ের ওপর ইংরেজি প্রশ্নগুলো এসেছে (যেমন Voice, Narration, Synonym ইত্যাদি), সেগুলো সলভ করার পাশাপাশি ভালো কোন গ্র্যামার বই থেকে ওই বিষয়গুলো আরও বিস্তারিত পড়তে হবে।

গাণিতিক সমস্যা: পদার্থ এবং রসায়নের গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বিগত দশ বছরে আসা নিয়মগুলো দেখুন। উদাহরণের গাণিতিক সমস্যাগুলোর নিয়ম ভালো করে রপ্ত করুন।

পদার্থ (১ম+২য় পত্র), রসায়ন (১ম+২য় পত্র), জীববিজ্ঞান (১ম+২য় পত্র): ধরা যাক আমাদের হাতে এখন থেকে মোট ৯০ দিন সময় আছে। চেষ্টা করতে হবে যেন আগামী ২৬-৩০ দিনের মধ্যে প্রথমবার সিলেবাস শেষ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যারা একের অধিক কোচিং করছেন বা একটি কোচিং-এর পড়ার রুটিন এবং নিয়ম অনুসরণ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি সম্ভব না-ও হতে পারে। একবার সিলেবাস শেষ হলে পুনরায় রিভিশন শুরু করুন। এক্ষেত্রে প্রতিটি বই ৪ দিন করে ৬ টি বই মোট ২৪ দিনে শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। দ্বিতীয়বার সিলেবাস শেষ হলে প্রতিটি বই ৩ দিন করে ৬ টি বই মোট ১৮ দিনে শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। তৃতীয়বার সিলেবাস শেষ হলে প্রতিটি বই ২ দিন করে ৬ টি বই মোট ১২ দিনে শেষ করার চেষ্টা করতে হবে। এভাবে যত বেশি রিভিশন দেয়া যাবে, ততই ৬ টি বই হাতের মুঠোয় চলে আসবে। মনে রাখতে হবে, প্রথমবার বা দ্বিতীয়বার সিলেবাস শেষ করে অনেকে হতাশায় ভুগেন, কেননা বেশির ভাগ তথ্যই মাথায় থাকেনা। এখানে হতাশ হলে চলবেনা। ধৈর্য্য ধরে বার বার সিলেবাস রিভিশন দিতে হবে এবং যত বেশি সম্ভব এম.সি.কিউ সল্ভ করে ফিডব্যাক নিতে হবে।



প্রথমবার সিলেবাস শেষ করার জন্য প্রতিদিন নিম্নোক্ত নিয়ম অনুসরণ করা যেতে পারে:
১. প্রতিদিন ছয়টি বইয়ের যেকোন একটির কমপক্ষে ৩-৪ টি অধ্যায় পড়ে শেষ করতে হবে।

২. পাঠ্য বইয়ের যে কোন একটি অধ্যায়ের দাগানো অংশ (লাল কালি দিয়ে খুব ইম্পর্টেন্ট, নীল কালি দিয়ে বাকী অংশ) + ওই অধ্যায়ের রয়্যাল গাইডের প্রশ্নসহ ব্যাখ্যা মুখস্থ + ওই অধ্যায়ের রেটিনা গাইডের প্রশ্নসহ ব্যাখ্যা মুখস্থ। এই নিয়মে চারটি অধ্যায়ের পাঠ্য বইয়ের দাগানো অংশ+রয়েল+রেটিনা গাইড মুখস্থ করে ফেলতে হবে। যেমন: প্রাণিবিজ্ঞানের ’আরশোলা’ অধ্যায়টি পড়ার সময় পাঠ্য বইয়ের আরশোলা অধ্যায়ের দাগানো অংশ + রয়েল গাইডের (পার্ট -৪ এর) ৩৭৫ পৃষ্ঠার আরশোলার অধ্যায় + রেটিনা গাইডের ১১৮ পৃষ্ঠার আরশোলার অধ্যায় + বিগত বছরগুলোতে আরশোলা থেকে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভতির সকল প্রশ্ন ব্যাখ্যা সহ মুখস্থ।

৩. পড়ার সময় নিজস্ব নোট করে পড়তে পারলে ভালো হয়। তবে সময় খুব কম। তাই পাঠ্য বই/রয়েল/রেটিনা/অন্যকোন হ্যাণ্ডনোট - যে কোন একটির ভেতরে কোন একটি অধ্যায়ের সব তথ্য একত্রিত করতে পারলে সেটি '’নিজস্ব নোট'’ হবে। প্রথমবার সিলেবাস শেষ করার পর ওই '’নিজস্ব নোট'’-টি পড়লেই চলবে, একগাদা বই খুলে বসার দরকার নেই তখন।

৪. বিগত বছরের মেডিকেল এবং ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর মুখস্থ করতে হবে। প্রতিদিন ২০০ প্রশ্নের উত্তর গাইড বই দেখে দাগিয়ে সোজা মুখস্থ করে ফেলতে হবে এবং বিগত দশ বছরের এই প্রশ্ন সম্ভার বার বার রিভিশন দিতে হবে।

৫. প্রতিদিন ৩-৪ টি অধ্যায়ের পাশাপাশি ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান উপরের নিয়মে পড়তে হবে।

৬. প্রতিদিনের জন্য একটি লগ মেইনটেইন করুন। অর্থাৎ, প্রতিদিন যতটুকুন পড়া শেষ হলো, তা লিখে রাখুন। এতে করে কতটুকু সিলেবাস বাকী আছে, তা এক নজরে দেখে নেয়া যাবে।



কিভাবে বই দাগিয়ে পড়বেন?:
১.পাঠ্যবইয়ের যেকোন একটি অধ্যায়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে/প্যারাকে লাল কালি দিয়ে দাগিয়ে ফেলুন। যেমন: রসায়ন ২য় পত্রের কোব বিক্রিয়া, রাইমারটাইম্যান বিক্রিয়া, উর্টজফিটিগ বিক্রিয়া ইত্যাদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরকম খুবগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো একটি অধ্যায় শুরু করার সাথে সাথে আগে পড়ে ফেলুন। তারপর কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো লাইন বাই লাইন দাগান। বই দাগানোর সময় রয়েল/রেটিনার সাহায্য নিন। যেসব প্যারা থেকে বিগত বছরগুলোতে মেডিকেল এবং ডেন্টাল ভর্তির প্রশ্নসমূহ এসেছে, সেগুলো দাগিয়ে পড়–ন।

২. এক একটি অধ্যায় শেষে ’এ অধ্যায় থেকে আমরা যা শিখলাম’/গ বিভাগ/এম.সি.কিউ প্রশ্ন ইত্যাদিও পড়ে ফেলুন।

ভর্তি ফরম কোথা থেকে তুলবেন?
সার্কুলেশন আসার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যে একদম ভোর থাকতেই বের হয়ে পড়ু–ন। কারণ, বেলা বাড়ার সাথে সাথে প্রচণ্ড ভীড় হয়। ফরম তোলার পর ফটোকপি করে সেখানে আগে প্র্যাকটিস করে নিয়ে তারপর মূল ফরমটি পূরণ করুন।

কি কি কাগজ ভর্তি ফরম জমা দেবার সময় লাগবে?
১. সঠিক ভাবে পূরণকৃত ভর্তি ফরম।
২. এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি-এর ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি
৩. পাসপোর্ট সাইজ ছবি (সত্যায়িত)
৪. উপজেলা চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদপত্রের সত্যায়িত কপি



ফাইনাল পরীক্ষার আগের দিন কি করবেন:
১. মূল পরীক্ষার কমপক্ষে ২ দিন আগে প্রিপারেশন শেষ করুন। ফাইনাল পরীক্ষার ঠিক আগের দিনটিতে পড়ালেখা করার কোন দরকার নেই। রিল্যাক্স মুডে থাকুন। নিজের সিট কোথায় পড়লো, সেটা একবার দেখে আসাটা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ ফাইনাল পরীক্ষার দিন সকালে তাহলে আর টেনশনে পড়তে হবেনা।

২. পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র ফাইনাল পরীক্ষার আগের রাতে আউট হয়েছে -এরকম খবরে বিচলিত হওয়া যাবেনা। অমুক জায়গায় এত লাখ টাকায় প্রশ্নপত্র পাওয়া যাচ্ছে, অমুক মেডিকেল কলেজের ভাইয়ার কাছে কঠিন সাজেশন আছে - এসব খবর থেকে যথা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। ঠিক মতো প্রস্তুতি নেয়া থাকলে আপনিও পারবেন যুদ্ধের ময়দানে মেধা যুদ্ধে অন্যকে হারাতে, এখানে টাকা দিয়ে প্রশ্নপত্র কিনে পরীক্ষা দেওয়াতে ক্রেডিটের কিছু নেই।

ফাইনাল পরীক্ষার দিন কি করবেন:
১. যেখানে আপনার সিট পড়েছে, সেই হল খুলে দেবার সাথে সাথেই ঢুকে পড়ুন। ধীরস্থির হয়ে বসে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন বল পয়েন্ট কলম, পেন্সিল, ইরেজার, প্রবেশপত্র, ক্যালকুলেটর (যদি নিতে দেয়) টেবিলে রেখে পরীক্ষক প্রশ্নপত্র আপনাকে দেবার পর সাবধানে নির্ধারিত ঘরগুলো পূরণ করুন। কোন অবস্থাতেই যেন ও.এম.আর ফরমের নির্ধারিত ঘরগুলো পূরণে ভুল না হয়।

২. প্রথম ৩০ মিনিটে ৫৮-৬০ টি এম.সি.কিউ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফেলতে হবে। পরের ২০ মিনিটে বাকী ৪০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

৩. শেষ ৮-১০ মিনিট রিভিশন এবং উত্তর না দেয়া প্রশ্নগুলো সল্ভ করার চেষ্টা করতে হবে।

৪. কোন একটি প্রশ্ন না পারলে সেটির পিছনে অযথা সময় নষ্ট করা যাবেনা।



শেষ কথা:
স্বাস্থ্যসেবায় ভালো ডাক্তারের অভাব শুধু বাংলাদেশেই নয়, বরং সারা বিশ্বেই রয়েছে। মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেবার আগে সবার চোখে স্বপ্ন থাকে একজন ভালো ডাক্তার হবার। যারা চান্স পান, তারাও অনেক আগ্রহ নিয়ে মেডিকেল সায়েন্স পড়া শুরু করেন। কিন্তু ছাত্র জীবন শেষ করে কর্মেক্ষেত্রে প্রবেশের পর বাস্তব চিত্রটি কিন্তু অন্যরকম। বাংলাদেশের সরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্নীতিগুলো কর্মেক্ষেত্রে প্রবেশ না করলে সুনির্দিষ্টভাবে বোঝা যায়না। কিন্তু আমি অপটিমিস্টিক। আমার বিশ্বাস, একদিন না একদিন পরিবর্তন আসবেই। সেই পরিবর্তিত আবহাওয়ার স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ হয়তো আমি বা আমার পরের জেনারেশন দেখে যেতে পারবেনা, কিন্তু তার পরের জেনারেশন হয়তো দেখবে - এমন আশাই বুকে বাঁধি।

সবার পরীক্ষা যেন অনেক অনেক ভালো হয়, সবাই যেন বাংলাদেশের নামকরা মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ পেয়ে ভবিষ্যত বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হতে পারেন, এই সুভাশিষ রইলো। 

 (ব্লগ থেকে)

1 comments:

Unknown বলেছেন...

apni at present e form puroner system janen na vaia ?? ekhon to form kono medical theke tola lagena ... gotobar thekei to online e puron korte hoy... anyway onek valo laglo guchiye erokom guideline dawar jonne..

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম