“আবদুল্লাহ, মুহাম্মদ, খাদিজা, আলী, আবু বকর, ওমর, এগুলো মোটেও ইসলামী নাম নয়, এগুলো সবই আরবি নাম। আইয়্যামে জাহিলিয়ার সময়কার পৌত্তলিক নাম। কারণ ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন মুহাম্মদ, প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ছিলেন খাদিজা, এরপরে আলী, আবু বকর, ওমর এরা সকলেই ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের আগেই তাদের এরকম নাম ছিল। ইসলাম পৃথিবীর মুখ দেখার আগেই তাদের নাম সেগুলো রাখা হয়েছিল। তাদের পৌত্তলিক বাপদাদারা এরকম নামই রেখেছিল। সেটা ছিল আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগ, পৌত্তলিক আরবের যুগ। তার মানে এগুলো আসলে ইসলামী নাম বলা হলেও পৌত্তলিক নামই।” -নাস্তিক
মূর্খের জানার জন্য বলতে হচ্ছে:
* মুহাম্মদ সাঃ ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নন। তিনি ইসলাম ধর্মের পরিপূর্ণতা দানকারী সর্বশেষ নবী। মানবজাতির আদিমতম ব্যক্তি থেকে দুনিয়ায় ইসলাম ধর্ম প্রবর্তিত হয়েছে। সকল কালে, সকল যুগে দুনিয়ায় ইসলাম ধর্ম ছিলো।
১) নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাদা আব্দুল মুত্তালিব নবীজির নাম রেখেছিলেন ‘মুহম্মদ’ যার অর্থ ‘প্রশংসিত’। ইতিহাসে স্পষ্টই আছে, আব্দুল মুত্তালিব এই নাম রাখার পর আরবরা অবাক হয়ে যায় কারণ এই নাম এর পূর্বে আর কেউ ব্যবহার করেনি। আর আব্দুল মুত্তালিব , তিনি নিজেও মূর্তি পূজারি বা পৌত্তলিক ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন দ্বীনে হানিফ বা হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের অনুসারি বা মুসলমান। সূরা ফীলের শানে নুযুল পড়লে বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে তিনি আল্লাহ’র উপর ভরসা করেছিলেন।
২) আব্দুল্লাহ বা আমেনা নামগুলো কখনো পৌত্তলিক নাম নয়, কারণ একটি নামের অর্থ হচ্ছে আল্লাহ’র বান্দা এবং অপরটি হচ্ছে বিশ্বাসী। আব্দুল্লাহ কিংবা আমিনা, উনারাও আব্দুল মুত্তালিবের মত দ্বীনে হানিফ বা মুসলমান ছিলেন, পৌত্তলিক বা মূূর্তি পূজারি ছিলেন না। আর এই বিষয়টি মা আমিনার লিখিত কবিতায় প্রমাণ পাওয়ায়, যেখানে তিনি লিখেছিলেন : “আপনার (নবীজির) মাধ্যমে সবাই মূর্তিপূজা থেকে রক্ষা পাবে, এবং সারা বিশ্বে দীনে ইব্রাহিম বা ইসলাম ধর্ম কায়েম হবে।”
৩) মূর্খ নাস্তিক বলেছে: আবু বকর নাম তো পরিবর্তিত হয়নি।
এর উত্তরে বলতে হয়:
আবু বকর মূল নাম না, এটা উপাধি বা কুনিয়াত। আবু অর্থ পিতা, বকর শব্দের অর্থ পৌড় বা বৃদ্ধ।
ইসলাম গ্রহণের পূর্বে উনার নাম ছিল যা আব্দুল কাবা বা কাবা ঘরের বান্দা। কিন্তু ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর পরিবর্তন করে রাখা হয় আব্দুল্লাহ বা আল্লাহ’র বান্দা।
ওমর বা খাদিজা শব্দের অর্থ
এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কারো নাম যদি পৌত্তলিকতার সাথে সাংঘার্ষিক না হয় তবে নবীজি ইসলাম ধর্মগ্রহণের পরে তার পরিবর্তন করেননি, কিন্তু যদি সাংঘর্ষিক হয় তবে তার নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল। যেমন: ওমর শব্দের অর্থ হচ্ছে হায়াত বা বয়স এবং ‘খাদিজা’ শব্দের অর্থ যে শিশু নির্দ্দিষ্ট সময় পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই জন্মগ্রহণ করেন।
আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু’র নাম মুবারক
হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জন্মগ্রহণের স্থান ছিল পবিত্র ক্বাবা ঘরের মধ্যে। উনার সম্মানিত আম্মাজান যখন ক্বাবা ঘর থেকে বের হলেন তখন উনাকে সর্ব প্রথম কোলে নেন নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন তিনি নাম রাখেন আলী বা সুউচ্চ বা মহান। এখানে পৌত্তালিক সম্পর্ক কোথায় পাওয়া যায়?
মূর্খদের জানা প্রয়োজন, পৌত্তলিকতার সম্পর্ক থাকলে ইসলাম গ্রহনের পর নবীজি ঐ সকল নাম পরিবর্তন করে দিতেন। যেমন:
ক) হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পূর্বের নাম ছিল আব্দু আমর বা আব্দু ক্বাবা, যা পরিবর্তন করা হয়।
খ) হযরত আবু হুরাইরা (এটা উপাধি) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পূর্বের নাম ছিল আব্দে শামস বা সূর্যের দাস, আব্দুল উজ্জা বা উজ্জার দাস, আব্দুল লাত বা লাতের দাস। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর উনার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আব্দুর রহমান।
গ) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু’র উনার পূর্বের নাম ছিল আস যা পরিবর্তন করা হয়;
ঘ) আবু বুকরা রদ্বিয়াল্লাহু তালায়া আনহু’র পূর্বের নাম ছিল নুফাই বা মাসরুহ যা পরিবর্তন করা হয়।
সর্বশেষ মূর্খ’র উদ্দেশ্যে বলতে হয়, কাফেরের দেশে গিয়ে ফায়দা লুটতে নাস্তিকতার পরিচয় দেয়া হচ্ছে, আবার পাঠকদের কাছে খুব গর্ব করে মিথ্যা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই মুরতাদের আইনজীবিরা যখন কোর্টে দাড়ায় তখন তো ঠিকই মিথ্যা বলেছে, নাস্তিকতার পরিচয় লুকিয়ে বলেছে, “মাননীয় আদালত এই নাস্তিক সেই নাস্তিক না, আজকাল ব্লগে একজনের নাম ধারন করে আরেকজন লিখে, নিক হ্যাক হয়, এই নাস্তিক সেই নাস্তিক এমন কোন প্রমাণ নাই, আদালত এ মামলা মিথ্যা, জামিন দেন, স্টে করেন.... ইত্যাদি ইত্যাদি”।
Courtesy: Des Wa
0 comments: