শহীদ রহিম উদ্দিন




পুরো নাম রহিম উদ্দীন
বাবার নাম মরহুম মুহাম্মদ হোসাইন
মাতার নাম খুরশিদা বেগম
স্থায়ী ঠিকানা দক্ষিণ বরতী (পশ্চিম পাড়া) বরতী, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

সাংগঠনিক মান সদস্য
সর্বশেষ পড়াশোনা বিএ অনার্স বাংলা ১ম বর্ষ
সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ভাই-বোন ৪ ভাই ৩ বোন
শহীদের অবস্থান সর্বকনিষ্ঠ
আঘাতের ধরন গুলি

যাদের আঘাতে শহীদ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী
শাহাদাতের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ১৯৯৯ ইং


শহীদ রহিম উদ্দিন


১৯ ডিসেম্বর ১৯৯৯৷ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়, রক্তাক্ত একটি স্মৃতি৷ এদিন পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা স্বাভাবিকভাবে হলে অবস্থান করে, যার যার পড়ালেখা ও ইবাদত বন্দেগীতে ব্যসত্ম ছিল৷ ঠিক সে মুহূর্তে আওয়ামীলীগের সোনার ছেলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সোহরাওয়ার্দী হল দখলের পরিকল্পনা করে৷ এরই অংশ হিসেবে তত্‍কালীন ছাত্রলীগের সেক্রেটারি কলিমের নেতৃত্বে বাহার, মেজবাহ, রায়হান, তানভীরসহ চিহ্নিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা একে-৪৭, এস.এম.জি কাটা রাইফেলসহ মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল আক্রমণ করে৷ সেদিন শত শত পুলিশের উপস্থিতিতে তারা ফিল্মি কায়দায় ব্রাশ ফায়ার করতে করতে সোহরাওয়ার্দী হলে প্রবেশ করার চেষ্টা করে৷ ছাত্রলীগের এ অভিযানে সংবাদ পেয়ে তখন আলাওল ও এ.এফ রহমান হলে অবস্থানরত ছাত্রশিবির নেতাকর্মীলা 'নারায়ে তাকবীর-আলস্নাহু আকবার' শেস্নাগান দিতে দিতে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসে৷ আলস্নাহর অকুতোভয় সৈনিকরা যখন সম্পূর্ণ আলস্নাহর উপর ভরসা রেখে ইসলামী আন্দোলনের এ ঘাঁটিকে রৰায় এগিয়ে আসেন ঠিক তখন শয়তানের প্রেতাত্মা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিবিরের মিছিল লৰ্য করে বৃষ্টির মত গুলি বর্ষণ করতে থাকে৷ সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে লুটিয়ে পড়েন ইসলামী আন্দোলনের দুই মর্দে মুজাহিদ৷ সেদিন ঘটনাস্থলেই শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মেধাবী ছাত্র ফতেপুর শাখার সেক্রেটারি রহিম উদ্দীন ও ফাইন্যান্স বিভাগের মেধাবী ছাত্র মাহমুদুল হাসান৷ পায়ে বুলেট বিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন শিবির নেতা আবদুস শাকুর৷

সেদিন চরদখলের মত ক্যাম্পাস দখলের নেশায় আবু জেহেল- আবু লাহাবের উত্তরসূরিরা ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে দুই শিবির নেতাকে৷ মিষ্টভাষী ও সদা হাস্যোজ্জ্বল শহীদ রহিম উদ্দীন ছিলেন শানত্মশিষ্ট৷ তিনি ইসলামী আন্দোলনের এক অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন৷ তার ভয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আতঙ্কে থাকতো৷ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শিবিরের মিছিলে একে-৪৭ এবং এস.এম.জির ব্রাশ ফায়ার করে শিবিরকে নিশ্চিহ্ন করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের সন্ত্রাসের আখড়া বানাতে চেয়েছিল৷ তখন ইসলামের খাদেম এ দুই তরম্নণ নিজেদের বুক পেতে দিয়ে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করেছিল৷ কিন্তু আওয়ামী প্রশাসনের নির্লজ্জ হাত সেদিনও অতীতের ধারাবাহিকতায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি৷ তারা ক্যাম্পাসবাসীকে এবং দুই শহীদের সাথীদেরকে ক্যাম্পাসে শহীদের জানাযা পর্যনত্ম পড়তে দেয়নি৷ ছাত্র-ছাত্রীদের আহাজারির প্রতি কর্ণপাত করেননি কতর্ৃপৰ৷
মেধাবী ছাত্র শহীদ রহিম উদ্দীন এবং মাহমুদুল হাসান দৰিণাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ এ বিদ্যাপীঠে এসেছিলেন সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করতে৷ তারা চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন করে দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করবেন৷ কিন্তু হায়েনাদের নির্মম ব্রাশ ফায়ার তাদের সে স্বপ্নকে ধুলিস্মাত্‍ করে দেয়৷ সেদিন বুলেটবিদ্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পড়ে থাকা নিসত্মব্ধ রহিম, নিথর হাসানের নির্বাক দৃষ্টিতে একটিই প্রশ্ন ছিল, কী অপরাধ আমাদের? আমরা কি সন্ত্রাসী? চোর-ডাকাকত? কেন তোমরা আমাদের হত্যা করলে? আমাদেরও তো স্বপ্ন ছিল সবার মত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী নিয়ে মায়ের কোলে ফিরে যাওয়ার ৷ জবাব চাই আওয়ামী সরকার ও প্রশাসন৷ আজকে রহিম, হাসান, জোবায়েরের সাথীদেরও জিজ্ঞাসা- 'কী ছিল তাদের অপরাধ? কেন আওয়ামী দুর্বত্তরা বিনা দ্বিধায় পাখির মত গুলি করে তাঁদেরকে হত্যা করল?'


0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম