প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে আইন লঙ্ঘন ও অনৈতিক কাজে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন এবং বিচারের বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হন।
দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে হাসিনাপুত্র জয়
তারেক অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এখনও প্রমানিত নয়। অন্যদিকে ভারতীয় স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার পর হাসিনাপুত্র জয় দেশি অর্থ-সম্পদ নিয়ে বিদেশে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে বেপরোয়া জীবন যাপন করে দেশের জন্য বদনাম কামাচ্ছে।
১৪ জুন ১৯৯৮ টেক্সাসে টারন্ট কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২০ দিন কারাবাস, ২ বছরের প্রোবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানা করে।
৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টিতে গ্রেফতার হন, বিচারে অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তি ও জরিমানা করা হয়।
১৯ মার্চ ২০০০ ভার্জিনিয়া ফেয়ারপ্যাক্স কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পর অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়।
২৯ এপ্রিল ২০০১ ভার্জিনিয়ার রাপাহ্যানোক কাউন্টিতে এবং ২০ মে ২০০৪ আরলিংটন কাউন্টিতে আইন ভঙ্গের অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়, শাস্তি দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১শ কোটি টাকার উৎস আন্তর্জাতিকভাবে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর ভলান্টিয়ার্স অব আমেরিকান কমিউনিটি (বাংলাদেশী) নামক একটি সংগঠন দুদক চেয়ারম্যান বরাবরে এই আবেদন জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি আবুল হাশেম বুলবুল ও সেক্রেটারি কাজী সাকাওয়াত হোসেন বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার বোন সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), তার স্বামী খন্দকার এম হোসেন বিভিন্ন নামে-বেনামে ব্যবসা করে আসছেন।" তারা একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপুল সম্পত্তির মালিক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার মা যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জয় তখন বিভিন্ন নামে-বেনামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার ব্যবসার মধ্যে টেক্সাসভিত্তিক ইনফোলিংক ইন্টারন্যাশনাল (নভেম্বর ’৯৮ থেকে মার্চ ২০০১) এবং নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি (মে ’৯৮ থেকে আগস্ট ২০০১) এর সঙ্গে সমুদ্রতল দিয়ে ক্যাবল প্রজেক্টে নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাহবুবুর রহমানের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে টাইকো কমিউনিকেশন ইউএসএর সঙ্গে যুক্ত হন।
২০০৫-এর মার্চে সজীব ওয়াজেদ জয় ‘জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গ্লোবাল সার্ভিস’ নামে আরও দুটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।
জয় যুক্তরাষ্ট্রে কোনো চাকরি করেন না। তারপরেও জয় ২০০৬-এর ১২ মে তার নিজের নামে এই ঠিকানায় ৩৮১৭ বেলম্যানয়, ফলস চার্চ ভার্জিনিয়ায় ১০ লাখ ডলার দামের ১টি বাড়ি কিনেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে জয় ও তার স্ত্রীসহ যৌথ মালিকানাধীন আর একটি বাড়ি ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার দিয়ে কিনেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল ও তার স্বামীর ৩টি বাড়ি রয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার বোন সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল) ও তার স্বামী খন্দকার এম হোসেনের যুক্তরাষ্ট্রে উলেখযোগ্য পরিমাণ সম্পদ রয়েছে যা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ নামমাত্র দেখিয়ে পুতুল ও তার স্বামী মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েছেন এবং ফ্লোরিডাতে বিলাসবহুল ৩টি বাড়ি রয়েছে এই ঠিকানায় ৪৫৬ নর্থ বে পয়েন্ট ওয়ে, জ্যাকশন ভিল, ফ্লোরিডা। আর একটি বাড়ি ৮৪৫ ইয়র্কওয়ে, মেইটল্যান্ড, ফ্লোরিডা। আরেকটি বাড়ি ২০৬৫ ডবিউ ১১৯ এভিনিউ, মিরামার, ফ্লোরিডা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তার বোন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন (পুতুল) এবং তার স্বামী খন্দকার এম হোসেন-এর ব্যবসা বাণিজ্য ও সম্পদের দিকে তাকালে আলাদিনের চেরাগের মতই মনে হয়।
সূত্র: Click this link...
হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে দৈনিক আমাদের সময়ে একটি মন্তব্য প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
“ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ-ইয়র্কে আন্তর্জাতিক ও বহুজাতিক বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রথমসারির দৈনিকগুলো ছবিসহ গুরুত্বসহকারে অত্যন্ত ইতিবাচক এই খবরটি প্রকাশ করেছে। দৈনিক আমার দেশ এই খবরটিও নেতিবাচক মোড়কে প্রকাশ করেছে। যা বাংলাদেশে এবং প্রবাসী সচেতন নাগরিকদের খুবই হতাশ করেছে। (আসলেই কি তাই ?)
মিডিয়ার কাছে মানুষ ভালোকে ভালো বলার সদিচ্ছা আর মন্দকে মন্দ বলার সৎসাহস আশা করে। উক্ত সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী ও তার তনয়ের উপস্থাপিত বিভিন্ন যুক্তিসমূহ অত্যন্ত জোরালো এবং যা অবশ্যই বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে বলে বিভিন্নমহল মনে করেন। এই খবরটিকে কয়েকভাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে। যেমন- এক. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতনয় সজীব ওয়াজেদ জয় দলের কিংবা সরকারের কোনো পদে না থেকেও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এবং বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন। দুই. প্রধানমন্ত্রী তার ছেলেকে সুসন্তান হিসেবে মানুষ করেছেন, যিনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করছেন। তিন. সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে এখনো কোনো দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, চাঁদাবাজি, দখল, অবৈধ হস্তক্ষেপ, কমিশন কিংবা বেয়াদবির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি কোনো ভবন বানিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির আবহাওয়া পরিবর্তন করছেন না।
দেশে এখন এমন একটি নতুন প্রজন্মের ঊষালগ্ন চলছে যখন বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশ করছে। তারা খুব সহজেই সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের ক্ষমতা রাখে। সেইদিন বেশি দূরে নয় যখন তথ্যপ্রযুক্তি রাজনীতির ভাঙা রেকর্ড অচল করে দেবে। নতুন প্রযুক্তি তরুণদের জায়গা করে দেবে আর তরুণরাই বদল করবে দিন। জয়তু মিস্টার সজীব ওয়াজেদ জয়, এগিয়ে যাও!
এবার ২০০৭ সালের ১৭ই জুন প্রকাশিত আমাদের সময়ের প্রতিবেদনটি দেখুন :
সজীব ওয়াজেদ জয় : বাংলাদেশের এক ডালিম কুমার
আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বেশ কয়েক বছর বিদেশ থাকার পর যখন দেশে ফিরে এসেছিলেন, বিমানবন্দরসহ সর্বত্র তাকে দেয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। শেখ হাসিনার ইচ্ছা ছিল তার উত্তরসূরি হিসেবে তারপরে জয়ই হবেন দলের প্রধান। কিন্তু রাজনীতিবিদের কঠিন দায়িত্ব জয় কী পালন করতে পারবেন? আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তিনি যুক্তরাষ্টের জীবন যাপনে অভ্যস্ত এবং খুশি। যদিও বেশ কয়েকবারই তিনি সেখানে আইনের কঠিন আবদ্ধে ধরা পরেছেন। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত সাপ্তাহিক প্রোবে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের ট্রান্সক্রিয়েশন করেছেন ফয়সল আবদুলাহ ও সৈয়দ মাহ্মুদ জামান।
মাতাল হয়ে গাড়ি চালানো, অবৈধ অস্ত্র এবং জয়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাপন জয়কে খুব একটা পরিবর্তন করতে পারেনি। তার চরিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বেপরোয়া ভাব বার বার ফিরে এসেছে তার জীবনে। বিভিন্ন রেকর্ড খুঁজে দেখা গেছে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে মাতাল হয়ে গাড়ি চলানো, অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, রাডার ডিটেকশন ডিভাইসের অবৈধ ব্যবহার এমনকি অবৈধ অস্ত্র রাখা। এসব কৃতকর্মের জন্য তাকে কারাবাসও করতে হয়েছে, মোটা অংকের জরিমানাতো আছেই। শেখ হাসিনা যদি দলের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে চিন্তা করে থাকেন, তবে জয়ের চেয়ে অনুপযুক্ত প্রার্থী তিনি পাবেন না।
জয় মূলত অরাজনৈতিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে চলেছেন। তিনি বাড়িতে জনসাধারণের ভিড় একেবারেই পছন্দ করেন না। তাছাড়া রাজনীতির প্রতি তার অপছন্দও তিনি প্রকাশ করেছেন। আগ্রহ বা কৌতূহল নিয়ে শেখ মুজিবের নাতির সঙ্গে দেখা করতে আসা অনেকের সঙ্গেই জয় অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আপাত কোনও সম্পর্ক জয় রাখেননি। তার মার রাজনৈতিক দলটির প্রতিও তার কোনও আসক্তি ল করা যায়নি, এমনকি দেশে তার পরিবারের সঙ্গে বসবাস করার ইচ্ছাও তার ছিল না।
জয়ের জীবনে প্রেম ও বিয়ে
শেখ হাসিনার শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) স্কুল জীবনের এক বান্ধবীর সঙ্গে জয়ের বাগদান হয়। কনে ভারতের এক শিখ পরিবারের মেয়ে। শেখ হাসিনা সরকারি সফরের নামে লন্ডনে গিয়েছিলেন বিয়ের কথা পাকা করতে। সঙ্গে গিয়েছিল আত্মীয়-স্বজন ও পারিবারিক বন্ধু-বান্ধব। আরও সঙ্গে নিয়েছিলেন ঢাকার বিখ্যাত ফখরুদ্দিন বাবুর্চির সহকারীদের। তবে তার একমাত্র শর্ত ছিল মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। কিš' সেই মেয়ে এতে অস্বীকৃতি জানায়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শেখ হাসিনা সেদিনই সকল অনুষ্ঠান বাতিল করে দেন। তিনি সারাদিনই হোটেলের কে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখেন এমনকি কারও সঙ্গে কথাও বলেননি। বিয়ের সেই অনুষ্ঠান আর হয়নি। কোনও অনুষ্ঠান না হওয়ায় অতিথিরা বিরিয়ানি না খেয়েই ঢাকায় ফিরে আসেন।
জয় বর্তমানে মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টিন অ্যান ওভারমাইন ওরফে ক্রিস্টিনা ওয়াজেদের সঙ্গে বিয়ের বদ্ধনে আবদ্ধ। ২৬ অক্টোবর ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিয়ে হয়। জনৈক রিচার্ড ডি লুমিসের সঙ্গে আগে ক্রিস্টিনের বিয়ে হয়েছিল বলে জানা গেছে। গুজব শোনা গিয়েছিল জয়-ক্রিস্টিনার তালাক আসন্ন। তবে সন্তান জন্মের কারণে সম্পর্কের টানাপোড়েন বা আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সম্ভবত এখন আর নেই।
গ্রেফতার এবং অভিযোসমুহ
১৪ জুন ১৯৯৮, টেক্সাসের টারান্ট কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২০ দিনের কারাবাস, ২৪ মাসের প্রোবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানার আদেশ দেয়।
৬ ফেব্র“য়ারি ২০০৬, ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টিতে গ্রেফতার হন জয়। তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়িচালানো এবং বেআইনিভাবে রাডার ডিটেকটর সঙ্গে রাখার অভিযোগ আনা হয়। সাজা একদিনের হাজতবাস এবং জরিমানা।
১৯ মার্চ ২০০০, ভার্জিনিয়ার ফেয়ারপ্যাক্স কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। বিচারে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত তাকে ৩০ দিনের সাসপেন্ডেড কারাবাস সঙ্গে ১২ মাসের প্রোবেশন ও ৪০০ ডলার জরিমানা করা হয়।
এছাড়া ২৯ এপ্রিল ২০০১, ভার্জিনিয়ার রাপাহ্যানোক কাউন্টিতে এবং ২০ মে ২০০৪, আরলিংটন কাউন্টিতে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চলানোর দায়ে অভিযুক্ত হন জয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদালতের খরচও জয়কেই বহন করতে হয়েছে।
মা ক্ষমতায় আসার পরই জয়ের পোয়াবারো
আওয়ামী লীগ মতায় আসার পর মা যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন, তখুনি জয় ব্যবসা শুরু করলেন। তার ব্যবসা ছিল টেক্সাস ভিত্তিক ইনফোলিংক ইন্টারন্যাশনাল (নভেম্বর ’৯৮ থেকে মার্চ ’০১) এবং নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি (মে ’৯৮ থেকে আগস্ট ২০০১) এর সঙ্গে। সমুদ্রতল দিয়ে ক্যাবল প্রজেক্টে নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনালের এর মাধ্যমে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল SEAMEWE-৪ -এর সঙ্গেও। কোনো এক মাহবুব রহমানকে সঙ্গী করে জয় টাইকো কম্যুনিকেশনের (ইউএসএ) সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
২০০৫-এর মার্চে জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গোবাল সার্ভিস নামের আরও দুটো কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে তা হয়েছিল আওয়ামী লীগের মতা চলে যাওয়ার পর। মজার বিষয় হল, এ দুটো কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৬১ হাজার ও ৩৫ হাজার ডলার। তারপরও জয় ২০০৬-এর ১২ মে তার নিজের নামে ৩৮১৭ বেল ম্যানর কোর্ট, ফলস চার্চ, ভার্জিনিয়া- এ ঠিকানায় ১০ লাখ ডলার দামের একটি বাড়ি কেনেন। এমনকি সেই বাড়ির মালিকানায় তার স্ত্রীর নাম ছিল না। তিনি ২ লাখ ডলার নগদ ও বাকি টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করেন। বাড়ির আসল মূল্য লুকাতে এখানে চতুরতার পরিচয় দিয়েছেন জয়। তার আগে অবশ্য জয় তার স্ত্রীসহ যৌথ মালিকানায় ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি বাড়ি কিনেছিলেন।
ব্যবসা যেন এক কাপ চা
শেখ হাসিনা মতায় আসার পর জয়ের বোন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের (পুতুল) স্বামী খন্দকার এম হোসেনও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা শুরু করেন। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি তার ব্যবসা গুটিয়ে নেন। তার ব্যবসাগুলোর মধ্যে উলেখযোগ্য ছিল, বাংলাদেশ মেটাল এন্ড পাইপস ট্রেডিং কর্পোরেশন, সোনালী ইনকর্পোরেশন, ডগস হোলসেল ইনক, আফসানা ইনক, এবং জাম্পি কর্পোরেশন। মনে হতে পারে, তাদের দুজনের (জয় ও খন্দকার এম হোসেন) কাছে ব্যবসাটা এক কাপ চায়ের মতোই। তবে দুজনের কেউই ব্যবসায় খুব একটা অর্থের মুখ দেখেননি। অথচ ব্যবসায় দুজন আর্থিক সঙ্কটে ভূগেছেন, এমনটাও শোনা যায়নি। হয়তো বা মায়ের আশীর্বাদেই।
যুক্তরাষ্ট্রে পুতুল ও তার স্বামীর তিনটি বাড়ি
সায়মা ওয়াজেদ হোসাইন, ডাক নাম পুতুল। শেখ হাসিনার কন্যা ও জয়ের ছোট বোন। স্বামী খন্দকার মাহাবুব হোসেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে তার উলেখযোগ্য পরিমাণে সম্পদ রয়েছে। হুট করে নয়, বিভিন্ন সময়ে ধীরেসুস্থেই তারা একটি একটি করে সম্পদের মালিক বনেছেন। আর এ কারণেই সব সময় আলোচনা-সমালোচনার আড়ালে থেকেছেন তারা। ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ নামমাত্র দেখালেও পুতুল ও তার স্বামী খন্দকার মাহাবুব বাড়ি কিনেছেন লাখ ডলার দিয়ে। তাও একটি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফোরিডাতে তাদের দুজনের নামে রয়েছে তিনটি বিলাসবহুল বাড়ি।
৪৫৬ নর্থ বে পয়েন্ট ওয়ে, জ্যাকসনভিল, ফোরিডা। এটি একটি ছোট বাসভবন। মালিকানা পুতুল ও তার স্বামী দুজনেরই। ২০০৫-এর ১ নভেম্বর ২ লাখ ৪৫ হাজার ডলার ব্যয়ে তারা এটি মেরিল এন্ড প্রিসসিলা কিংয়ের কাছ থেকে কিনেছিলেন।
৮৪৫ ইয়র্ক ওয়ে, মেইটল্যান্ড, ফোরিডা। এটিও একটি ছোট পরিবার ঘরানার বাড়ি। মালিক দুজনেই। মূল্য ৩ লাখ ১১ হাজার ডলার।
২০৬৫ ডবলিউ ১১৯ এভিনিউ, মিরামার, ফোরিডা। এ ভবনটিরও মালিক স্বামী-স্ত্রী। কেনা হয়েছিল ’৯৮’র ২৮ অক্টোবর। বাড়িটির দাম তখন ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩শ ডলার।
পাঠক এবার আপনারাই বলুন বাংলাদেশ কি আসলেই জয়কে নিয়ে স্বপ্ন দেখে ? আর আমাদের সময়ইবা জয়কে নিয়ে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ?
সূত্র : ২০০৭ সালের ১৭ই জুন প্রকাশিত আমাদের সময়ের প্রতিবদেন
সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যাংক একাউন্ট থাকার ডকুমেন্টারী প্রুফ
নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ঠিকানা এর আগাম এক কপি এর ছবি আপলোড করায় অনেকে দেখলাম বেশ অবাক হলেন। ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যাপারটি বিশ্বাসই করতে চাইলেন না।
কিন্তু একটু খোঁজ করেই রবার্ট লাস্টিক, ইয়োহান থেলারের কেস সামারি (ইন্ডাইটমেন্টের কপি) পেলাম। সেখানে মোট ৭ টা কাউন্টে অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগের ডিটেইল্ড বডিতেই সেই ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সত্যতা নিহিত আছে। [১]
এখানে প্রথম স্ক্রিনশটে মামলার ডিফেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ সে ২০১১ সালে এফবিআই এর ডাটাবেজে ঢুকে এফবিআই এর একটি ইন্টারনাল মেমো এক্সেস করে, যেখানে 'ইন্ডিভিজুয়াল ১' এর নামে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যাপারে আলচিত।
ঠিকানা এর সেই রিপোর্টের আরেকটা অংশ হচ্ছে যে বিএনপি এর কাছে সেই নথি আছে, সেইটাও কিন্তু সেই কেস রিপোর্টেই আছে। নীচের অংশে দেখবেন সিজার আহমেদ নিজেই বলছেন যে ৩০০ মিলিয়ন ডকুটির ইনভেস্টিগেশনের কি হল, তার মানে ৩০০ মিলিয়নের এফবিআই মেমোটি তার কাছেও আছে !! মানে বিএনপি এর কাছেও সেই মেমো চলে গিয়েছিল, সেই ২০১১ সালেই !!
ব্যাপারটা যে 'ইন্ডিভিজুয়াল ১' এর জন্য বিব্রতকর, সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় লাস্টিক আর থেলারের এই কথোপকথন থেকেই, যেখানে সিজার চাহিদামত টাকা না দেওায় ক্ষিপ্ত এই দুইজন নিজেদের মধ্যেই সেই নথি ও সংক্রান্ত ইনফো যাকে নিয়ে, তাকেই টাকার বিনিময়ে দেওয়ার কথা, আর সিজারকে পিটানোর কথা চিন্তা করে। (নীচের ছবি)
আর 'ইন্ডিভিজুয়াল ১' এর বিরুদ্ধে যে আসলেই সাস্পিসিয়াস এক্টিভিটি রিপোর্ট (Suspicious Activity Report, SAR) আছে, সেটার প্রমাণ নীচের অংশে।
যাদের এন্টি মানি লন্ডারিং বা ব্যাংকিং এর ব্যাপারে আইডিয়া আছে, তারা জানবেন SAR ফাইল হয় ট্রাঞ্জ্যাকশনে বড় এমাউন্ট থাকলে (আমেরিকায় ঠ্রেশল্ড Financial Crimes Enforcement Network (FinCEN) এর জন্য ২৫,০০০ ডলার)। আর সেটা এফবিআই এর ডাটাবেজে রাখার মানে হচ্ছে অবশ্যই অনেক বড় এমাউন্টই বটে। আর বড় এমাউন্ট না হলে, পয়সার বিনিময়ে কেউ এটা লিক করতে যেতনা।
এখন বলবেন, এইসবই তো স্রেফ অভিযোগ, তাইনা ? জ্বী, এসবই অভিযোগ। কিন্তু এইসব অভিযোগই মাথা পেতে স্বীকার করে নিয়েছেন রবার্ট লাস্টিক !! [২]
মানে সব অভিযোগই সত্য, অর্থাৎ ইন্ডাইটমেন্টের সব তথ্য সঠিক !!! মানে 'ইন্ডিভিজুয়াল ১' এর বিরুদ্ধে যে আসলেই ৩০০ মিলিয়নের ফাইল আছে, সাস্পিসিয়াস এক্টিভিটি রিপোর্ট আছে, আর সেইসব এফবিআই এর কাছে আছে, আর সেসব বিএনপি এর হাতেও পৌঁছেছে !!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই 'ইন্ডিভিজুয়াল ১' টা কে ? এর উত্তর পাবেন নীচের অংশেঃ
সব পড়ে তো আমার কাছে, এই নীচের আবালটার কথাই মনে হচ্ছে, যেকিনা বোমা হামলার খবর পড়ে হাঁদার মতো হাসছে, তাও যেই পত্রিকায় আজকে তার সর্বনাশের খবর দিচ্ছে, সেই পত্রিকাই !!
সেই হাঁদা টা নিজেই স্বীকার করেছে এইখানেঃ
https://www.facebook.com/sajeeb.a.wazed/posts/596278217175272
ইয়ে মানে সেটা যে জয়ই, এই ব্যাপারে আসলে কোনই সন্দেহ নাই ...
[১] http://www.justice.gov/usao/nys/pressreleases/December14/LustyikRobertPlea/Lustyik%20Et%20Al.Indictment.pdf
[২] http://www.justice.gov/usao/nys/pressreleases/December14/LustyikRobertPlea.php
Rage Ezekiel
0 comments: