১৯৪৭ ও ১৯৭১ সাল। উপমহাদেশের মানচিত্রে দু’টি বিশাল পরিবর্তন। যে ঘটনাগুলোর রেশ চলবে যেমন বহুদিন, সঠিক বিশ্লেষণে সময়ের অপেক্ষাও তেমনি অপরিহার্য উপাদান। এ সংক্ষিপ্ত সূচনাকথা এ জন্য রেখেছি যে, একজন বড় মাপের মানুষের দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ প্রসংগ।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভোর সাড়ে ৫টা। দীর্ঘ প্রায় চার বছর রোগশয্যায় কাটানোর পর কুষ্টিয়া উপজিলা সড়কের ১০০ নং হোল্ডিং-এ নিজ বাসায় ইন্তিকাল করলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এ্যাডভোকেট সা’দ আহমদ। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন।
যাঁর জন্ম ১৯২৭ সালের ১ মে জিলার ভেড়ামারার বাহিরচর ষোলদাগ গ্রামে। পিতা মরহুম ডা: মনিরউদ্দীন আহমদ, মাতা মরহুমা হালিমা বেগম। পরাধীন বৃটিশ যুগে যেখানে গন্ধ পোকাড় নাম নিয়ে মুসলমানদের পরিচিত হতে হত, সেখানে পিতা-মাতার নাম-পরিচয়েই বুঝা যায়, পরিবারটি ছিল সম্ভ্রান্ত। তাঁর লেখা মূল্যবান ইতিহাস গ্রন্থ- ‘আমার দেখা সমাজ ও রাজনীতির তিনকাল’ পড়লে সে সময়ের সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়।
ভেড়ামারা, কোলকাতা ও আলীগড় হয়ে তাঁর লেখাপড়ার ইতি ঘটে। আলীগড় হতে তিনি অর্থনীতিতে সম্মানসহ মাস্টার্স এবং আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন। এটি ছিল একজন সাধক ছাত্রের পরিচয়। কর্মজীবনেও তিনি ছিলেন অসাধারণ সাধক। যার শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপনা দিয়ে। পরে জগন্নাথ কলেজে রাত্রিকালীন শিক্ষক ও দিনের বেলায় কোর্ট প্রাকটিস। সেই সাথে পাকিস্তান অবজার্ভার পত্রিকায় লেখালেখি। তাঁর সহকর্মী আইনজীবীদের বক্তব্য ও উল্লেখিত বইটি হতে জানা যায় যে, পেশাদারিত্বের ময়দানেও তিনি ছিলেন এক অসাধারণ সাধক।
লেখালেখির জগতে তাঁর সাধনার ফসল হচ্ছে: হযরত মোহাম্মদ (স:) এর দাওয়াত ও আজকের মুসলমান, ইসলামের অর্থনীতি, সূরা আল আছরের আলোকে আমাদের সমাজ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মোহাম্মাদ (স:), ইসলামে মসজিদের ভূমিকা, আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মোহাম্মদুর রসূলুল্লাহ (স), কোরবানীর শিক্ষা, দারিদ্র বিমোচনে জাকাতের ভূমিকা ও মুজিবের কারাগারে পৌনে সাত শ দিন ইত্যাদি।
এ্যাডভোকেট সা’দ আহমদের সাধনা ও সংগ্রামের অপর ময়দানটি হ’ল সমাজসেবা ও রাজনীতি। রাজনীতির অংগালে প্রবেশকালীন ঘটনা প্রসংগে তিনি লিখেছেন- ...‘আমার মামা শ্বশুর চৌধুরী শামসুদ্দীন আহমদ বাদশা মিয়া’র সংগে শেখ সাহেবের (শেখ মুজিবুর রহমান) ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা ছিল। সেই সুবাদে আমিও আত্মীয়ের আত্মীয় হিসেবে তাদের নিকটবর্তী হলাম। শেখ সাহেবের কথাবার্তা, সৈয়দা’র (সা’দ আহমদের স্ত্রী) প্রতি তার অত্যধিক স্নেহ, আমার প্রতি তার স্নেহমাখা প্রশংসিত দৃষ্টি এবং তার অত্যন্ত খোলামেলা সহজ সরল ব্যবহার আমাদের উভয়ের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু আকর্ষণ সৃষ্টি করল। পরবর্তী আমলে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি, রাজনৈতিক ময়দানে ঐক্যবব্ধভাবে আন্দোলন করেছি। পরবর্তীতে অনৈক্য সৃষ্টি হয়ে দুই জনের পথ দুই দিক চলে গেছে... । (প্রাগুক্ত পৃ: ৪২)। ১৯৫২ সালে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে (যার নেতা ছিলেন শেখ সাহেব) যোগদান করেন এবং ৫৩ সালের এপ্রিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমীনের কুষ্টিয়া সফরকে কেন্দ্র করে ১৫ দিন কারাবাস করেন। ২য় বার কারাবরণ করেন ১৯৫৯ সালের অক্টোবর মাসে। আর কারামুক্ত হন ১৯৬০ সালের এপ্রিলে। ৩য় বার কারাবাসী হন ৩১ জানুয়ারি ১৯৬২ সালে, মুক্ত হন ৪ মাস পর। এ সময় তিনি আল কুরআনের পূর্ণ তরজমা পড়ার সুযোগ পান। এ পথেই তাঁর চিন্তায় ইসলাম সম্পর্কে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৬৬ সালে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীতে। ৪র্থ বার তিনি কারারুদ্ধ হন ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। মুক্ত হয়েছিলেন পৌনে সাত শ’ দিন পর। এ কারাবাসকালেই তিনি রচনা করেন ‘মুজিবের কারাগারে পৌনে সাত শ দিন’ বইটি।
তিনি মুসলিম ছাত্রলীগ, আওয়ামী মুসলিম লীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হোসেন সোহরাওয়ার্দীর আমলে পাকিস্তান আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ষাটের দশকে যাবতীয় আন্দোলন- কপ, পিডিএম, ডাক ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৬ হতে ৭৯ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর সাথে আন্দোলন করেছেন। পরে মরহুম মাওলানা আব্দুর রহীমের নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগের সাথে কাজ করছিলেন। মাওলানার মৃত্যুর পর তিনি ধীরে ধীরে রাজনীতি বা সাংগঠনিক দিক দিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন।
তাঁর সমাজকর্মমূলক কাজগুলোর সার সংক্ষেপ হল বৃহত্তর কুষ্টিয়া জিলা বোর্ডের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, পূর্ব পাকিস্তান সরকারের জুট কর্পোরেশনের ডিরেক্টর ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন। স্থানীয়ভাবে তিনি ছিলেন কয়েক দফা কুষ্টিয়া জামে মসজিদের সম্পাদক, অনেকবার কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সেক্রেটারিসহ নানা দায়িত্বে। এসব দায়িত্ব পালনে তাঁর সততা ছিল প্রশ্নাতীত। তাঁর চরম শত্রুও আমানতদারীর বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেনি। তিনি আফসার উদ্দিন ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন একাধিক টার্ম।
ব্যক্তিগত জীবনে এ্যাডভোকেট সা’দ আহমদের দানের হাত ছিল সীমাহীন উদার। জীবনের প্রথম ওকালতি আয়ের দিন হতে তিনি শতকরা বিশ ভাগ দান করতেন। এ দানের অর্ধেক একান্ত ব্যক্তি পর্যায়ে খরচ করতেন অর্থাৎ সরাসরি ব্যক্তিকে দিতেন। আর অর্ধেক দিতেন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। আল্লাহ চাইলে যে তিনটি প্রতিষ্ঠান যুগ যুগ ধরে তাঁর জন্য সদকায়ে জারিয়ার উৎস হিসাবে টিকে থাকবে সেগুলো হল: ভেড়ামারায় আলহাজ্ব ডা: মনির উদ্দিন ট্রাস্ট, হালিমা বেগম একাডেমি ও কুষ্টিয়া শহরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়। সবশেষে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নিজ বাস ভবনকেন্দ্রিক ‘রিজিয়া সা’দ ইসলামিক সেন্টার’। যেখানে ছিল পাঠাগার, সেমিনার কক্ষ, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন প্রকল্প।
জাতিগত দুর্ভাগ্যের অংশ হিসেবে ২০১২ সালের শেষের দিকে এর সবই লুন্ঠিত হয়। যদিও এর বছরখানেক আগেই তিনি পক্ষাঘাত রোগে বেহুঁশ হয়ে বিছানায় পড়েছিলেন। যে অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
এাডভোকেট সা’দ আহমদ ছিলেন প্রতিভাধর স্বাধীনচেতা এক ব্যক্তিত্ব। সংগঠন বা আন্দোলনের প্রয়োজনে তিনি সীমাহীন ত্যাগ করেছেন। বিশেষ করে আর্থিক কুরবানীতে তিনি ছিলেন সবচেয়ে অগ্রগামী। একই সাথে সাহস-হিম্মতেও তিনি ছিলেন পুরোধা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রতিপক্ষের সরাসরি হামলায় তাঁকে দেখেছি এক নির্ভীক সেনাপতি রূপে অটল-অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে। সেটা কার্পাসডাঙ্গা হোক বা মনোহরপুরে- কোন পরোয়া নেই। যে সাহসী নেতৃত্বের আজ বড়ই প্রয়োজন।
ষাটের দশকে কুষ্টিয়াসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জনাব সাদ আহমদকে নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ছেড়ে জামায়াতে ইসলামীতে শামিল হওয়ার বিষয় নিয়ে। ছয় দফাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগে তখন আদর্শিক বিভাজন তৈরে হয়। এ সময়ের আওয়মী লীগ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন- ‘আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে দুই ভাগ হয়েছে- পি.ডি.এম পন্থী ও ছয়দফা পন্থী। উভয় গ্রুপের কেন্দ্র থেকে জেলা পর্যন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। উভয় দলই নিজেকে সঠিক মনে করেছে। শেখ সাহেব কারাগারে- উভয় দলই তাঁর আশীর্বাদপুষ্ট। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগে থেকে যেমন কুষ্টিয়া জেলার পি.ডি.এম. ও ডাক-এর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি তেমনি পি.ডি.এম.পন্থী হয়েও নেতৃত্ব দিচ্ছি।
দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগের সদস্যরা এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের সমালোচনায় মুখর, কিন্তু শেখ সাহেবের মুক্তির আন্দোলনে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মোকদ্দমা প্রত্যাহারের আন্দোলনে সবার মুখে একই আওয়াজ। ঘন ঘন ঢাকায় যাচ্ছি কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আন্দোলনের নির্দেশনা পাওয়ার জন্য কিন্তু সর্বস্তরের নেতৃত্বের মধ্যে হতাশা আওয়ামী লীগের দ্বিমুখী নীতির কারণে। দেশ কোথায় যাবে- এ রাজনীতির সঠিক লক্ষ্য কি, ছয় দফা কি সত্যই স্বায়ত্বশাসন আদায়ের বিশ্বাসযোগ্য পরিকল্পনা না অন্য কিছু, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি সত্যই মিথ্যা ও বাস্তবতা বিবর্জিত, নাকি সামান্যতম সত্যতাও এর মধ্যে রয়েছে যা আমাদের সম্মিলিত কন্ঠের আওয়াজে চাপা পড়ে যাচ্ছে, আমরা দেশের পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধান চাই, আমরা কি সত্যই সে পথে চলছি- এসব চিন্তাধারা আমার মনমস্তিষ্কে ভরপুর হয়ে থাকত। আদর্শহীন নৌকায় মাঝি নয় শ্রমিক হয়েও বইঠা টানতে মন সায় দিচ্ছিল না। এমনি এক মেঘলা দিনে পি.ডি.এম.এর কেন্দ্রিয় মিটিং করে ঢাকা থেকে প্লেনে ইশ্বরদী হয়ে কুষ্টিয়ায় ফিরছিলাম। মেঘলা আহাওয়ার কারণে প্রায় দুই ঘন্টা প্লেন লেট হওয়ায় ইশ্বরদী স্টেশনে সংযোগকারী ট্রেন ধরতে ব্যর্থ হলাম। প্রায় ৩/৪ ঘন্টা প্ল্যাটফরমে কিভাবে কাটাব চিন্তা করছিলাম হঠাৎ মনে হল বই পড়ে সময় কাটানোই সব চাইতে ভাল হবে। বুক স্টলে গিয়ে প্রথমেই নজর পড়ল ‘ইসলামী রেঁনেসা আন্দোলন’- মওদুদী-এই শিরোনামে একটি বই এর উপর। মওলানা আবুল আলা মওদুদীর নাম শুনেছি পি.ডি.এম. এর রাজনীতি করার শুরুতেই কিন্তু তাঁর লিখিত বই কোনদিন পড়িনি।
উৎসুক্য জাগল- আমি রেঁনেসায় বিশ্বাসী, আলিগড় জীবনে আল্লামা ইকবালের Thoughts on Religious Reconstruction in Islam বই পড়েছি সমাজ সংস্কারের প্রয়োজনে এ বিশ্বাস করতেই হবে তবে তা কোন পথে- আদর্শ কি হবে- পদ্ধতি কি হবে- মানুষের রচিত মতবাদ কি এখানে প্রাধান্য পাবে নাকি বর্তমান বিশ্বে অহির পথে চলে মানবতা তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে- মনের মধ্যে পুঞ্জিভূত প্রশ্নগুলো আমাকে বইটি খরিদ করতে উদ্বুদ্ধ করল। ঈশ্বরদী স্টেশনের ওয়েটিং রুমে পুরো ৩ ঘন্টায় আমার বই পড়া শেষ হল- এক নুতন চিন্তা চেতনা আমার মনমস্তিষ্ককে দখল করে নিল।’ (প্রাগুক্ত পৃ: ৭২-৭৩)
এর পরের ঘটনা তাঁর জবানীতে- ‘কারাগারের জীবনে মাতৃভাষার মাধ্যমে আল কোরআনের সঙ্গে আমার পরিচিতি ঘটেছে। এরপর ইমাম গাজ্জালীসহ কিছু কিছু স্মরণীয় মনিষীদের রচিত ইসলামী সাহিত্যের রস আস্বাদন করেছি।
সমাজ সংস্কারের মূল লক্ষ্যে কোন আদর্শের অনুসারী হতে হবে তার একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র মওদুদীর এই বইতে খুঁজে পেলাম। জন্মসূত্রে অবশ্য আমি এই আদর্শের উত্তরাধিকার ছিলাম। কিন্তু এ কওমের পরাধীনতা, পাশ্চাত্য সভ্যতার বস্তুবাদী দর্শন ও শিক্ষাব্যবস্থা, বিজাতীয় সংস্কৃতি, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের রসম রেওয়াজ, সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মিটিয়ে দিয়ে শাসকদের মানবীয় প্রভূত্ব প্রতিষ্ঠার সীমাহীন ধৃষ্টতার কারণে ৩টি জাহেলী মতবাদের অনেক কিছুই ইসলামী জীবন ধারার মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে এই অনুপ্রবেশের কারণ সৃষ্ট র্শেক ও বিদায়াত আমাদের প্রায় সবার জীবনকেই কম বেশী স্পর্শ করেছে। সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি এমনকি ধর্মীয় পরিবেশও এ থেকে মুক্ত নয়। একজন মুসলিম এমন রাজনীতি করতে পারে না বা এমন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারে না যেখানে জীবনে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব স্বীকৃতি নয় ও রাসূল (দ:) এর নির্ভেজাল আনুগত্যে পথ চলার একমাত্র পন্থা নয়। তাইতো ১৯৬৬ সালের এক শুভ মুহুর্তে প্রচলিত রাজনীতির পথ পরিহার করে সমর্থক হিসাবে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করি। সংখ্যার হিসাব না করে সত্যের অনুসারী হবার কারণে আমার অনেক আত্মীয়স্বজন, ভক্তবৃন্দ, অতীত রাজনৈতিক জীবনের সহযাত্রীরা দূরে সরে গেলেন। সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে নিবেদিত কর্মী হিসাবে আমি এমন একটি পণ্য নিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হলাম যার ‘মান’ অত্যন্ত উচ্চ সম্পন্ন কিন্তু খরিদ্দার কম তবুও ইসলামী আদর্শের মধ্যেই মহা সত্যের সন্ধান পেলাম এবং ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই হলো আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।’ (প্রাগুক্ত পৃ: ৭৬-৭৭)।
একই সাথে তখন কুষ্টিয়ার বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর মধ্যে ইসলামী আদর্শের বিষয়ে বেশ আগ্রহ তৈরী হয়। চৌধুরী জালাল উদ্দীন আহমদ, মুন্সী সিরাজ উদ্দিন, নুরুল ইসলামসহ এক ঝাঁক আইনজীবী, সরকারী কলেজসহ বেশ কয়েকটি উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সক্রিয়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর কাজে অংশগ্রহণ করেন।
সা’দ আহমদ সাহেবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগের তীরটি আমৃত্যু উৎকটভাবে প্রচারিত হত, তা হ’ল ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার বিরোধিতা। এ বিষয়ে আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ পেশ হয়। (১) জগতি গ্রামের জনৈক আব্দুস সাত্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ ও চুয়াডাঙ্গা আর্মি ক্যাম্পে প্রেরণ দণ্ডবিধি ধারা ৩৬৪ ও দালাল আইন ধারা এ্যাক্ট ১১(খ)। (২) কুষ্টিয়া জেলা সদরে ও বিভিন্ন স্থানে নরহত্যা, অগ্নিসংযোগ, গৃহদাহ, নারী ধর্ষণ ইত্যাদিজনিত অপরাধ সংঘটন দালাল আইন এ্যাক্ট ১১(ঘ), অভিযোগ ৩ Ñদালাল আইন এ্যাক্ট ১১(ক) ধারা ১২১। অভিযোগ ৪Ñ দালাল আইন এ্যাক্ট ২(বি)(৫) যোগে সিডিউল-এর পার্ট (ফোর) (বি) এবং ৫ম অভিযোগÑউক্ত আইনের ২ (বি) (৫) যোগে সিডিউল-এর পার্ট (৪)(বি) এ্যাক্ট ২(ডি)। এসব অভিযোগের জবাবদানে তিনি অপর কোন আইনজীবির সহায়তা দেননি। মামলাগুলোর মধ্যে গুরুতর অভিযোগ প্রথম দু’টি, যা প্রমাণিত হয়নি। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগগুলো ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক । এসব অভিযোগে তাঁকে ৩০+৫+৫=৪০ বছর সাজা ঘোষণা, জরিমানা ঘোষণা করে রায় প্রদান করা হয়। আবার বলা হয় শাস্তিগুলো যুগপৎ চলবে। ফলে কম করে হলেও তাঁকে ২১ বছর জেল খাটতে হতো।
এ রায় ঘোষণা হয় ১৯৭৩ সালের ১২ মার্চ। বিশেষ ট্রাইবুনালের এ রায়ের মাত্র নয় মাস পর তৎকালীন সরকারের নির্বাহী নির্দেশে তিনি বেকসুর খালাস পান। যে আদেশে বলা হয়েছে দণ্ডবিধির ৩০২, ৪৩৬, ৩৬৪, ৩৭৬, ৩৯৬ ধারা ছাড়া অন্যান্য সমস্ত ধারায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত দালালদের মুক্তি দেবার সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ আদেশবলে তিনি ১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর কারাগার হতে মুক্তি পান। কিন্তু আইনবিদ সা’দ আহমদ এতে আত্মতৃপ্তি বোধ করে নিশ্চুপ ছিলেন না। এ প্রসংগে তিনি তাঁর স্মৃতিকথামূলক উক্ত বইটিতে উল্লেখ করেছেন- ‘....পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে কুষ্টিয়ার দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইবুনাল মি.আর.কে. বিশ্বাস আমাকে বিভিন্ন ধারায় ১২-৩-৭৩ তারিখে ৩০ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সালের ডিসেম্বর মাসে সরকার আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করে দিলেও হাইকোর্ট ডিভিশনে আমার দাখিলকৃত আপীল মোকদ্দমা আমি প্রত্যাহার করি নাই। যদিও মোকদ্দমাটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং শাস্তির মাত্র কয়েকমাস পর বাংলাদেশ সরকার আমাকে মুক্ত করে দেয় তবুও এই রায়কে আমি কখনও ন্যায়সঙ্গত বলে গ্রহণ করতে পারি নাই। এজন্য উচ্চ আদালতের দরজায় নাড়া দিয়ে আমি এই রায়ের যথার্থতা পরখ করতে চেয়েছিলাম। মহামান্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান ও বিচারপতি মোস্তফা কামালের আদালতে ১৯৮১ সালের ২৯ অক্টোবর ও ২রা নভেম্বর শুনানী হয় এবং ৩রা নভেম্বর রায় ঘোষণা হয়। হাইকোর্ট ডিভিশনে আমার আপীলের শুনানী আমি নিজেই করি এবং আমাকে সাহায্য করেন আমার ছোট ভাইতুল্য এটি চৌধুরী ও এ্যাডভোকেট আনসার আলি। ৩ দিনের একটানা শুনানীতে নি¤œ আদালতের রায়সহ যাবতীয় বিষয়াদি পুংখানুপুংখরূপে মহামান্য বিচারপতিদ্বয়ের সম্মুখে আমি তুলে ধরার সুযোগ পাই এবং রায়ের অন্তসারশূন্যতা প্রমাণের চেষ্টা করি। মহামান্য বিচারপতিদ্বয় ৩রা নভেম্বর তাঁদের সুচিন্তিত ও সুলিখিত রায় প্রদান করেন। তাঁরা এই সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, সা’দ আহমদ কোনদিন রাজাকার ছিলেন না। রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক ছিল না বা তিনি রাজাকার বাহিনী পরিচালনা করেন নাই। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ ঘোষণা করেন নাই বা প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন নাই, বা সহযোগিতা করেন নাই, পিস কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে কোন অন্যায় করেন নাই, বরং ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের মধ্যে ত্রাণ ও সাহায্য প্রদান করেছেন .. ..”। ৩৫ ডিএল আর ৪১, ৩ বি এল ডি ৭৫ এবং বি.সি. আর.৩৯৩ পৃষ্ঠায় এই রায় প্রকাশিত হয়েছে। (প্রাগুক্ত ২০৪-২০৫)।
এরপরও তিনি মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচারের মাধ্যমে অপমানিত হতে থেকেছেন। যা সভ্য সমাজে কাম্য ছিল না। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির দাবার গুঁটি হয়ে একশ্রেণীর সংবাদপত্র ও রাজনৈতিক নেতা পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে সম্মানিত ব্যক্তিদের চরিত্র হনন করেছেন, যা ভাবতেও অবাক লাগে। সা’দ আহমদ সাহেব সে অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছিলেন। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেন। যদিও এর কিছুদিন পরই তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থেকে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৮ বছর।
কাছ হতে দেখা একজন সা’দ আহমদ : ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর নিকটতম প্রতিবেশী একজন আইনজীবীর নিকট থেকে জানা যায়- সা’দ আহমদ আসলেই একজন ভাল প্রতিবেশী। যদিও তিনি রাজনৈতিক মতাদর্শে আমার থেকে ভিন্ন মতের। শিশুদের প্রতি তাঁর অপত্য স্নেহ ছিল অপরিসীম। সেটা নিজ বাসার ভাড়াটিয়ার সন্তানদের সাথে যেমন, ভেড়ামারাস্থ হালিমা বেগম একাডেমির দহলিজের ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের সাথেও তেমন। শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি শুধু জমি দান করে ক্ষান্ত হননি। এক অনুপম সৌধও গড়ে দিয়ে গেছেন। সেই সাথে মেধাবীদের উৎসাহিতকরণে দরাজ হস্তে বিতরণ করেছেন মেডেলসহ অনেক কিছু। জনকল্যাণে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেশ কিছু প্রকল্প। তাঁর বাড়িতে থেকে ও তাঁর ব্যক্তিগত দানে লেখাপড়া করে বড় হয়েছেন, এমন অনেককে আমি জানি। প্রকাশ্য দান ছাড়াও তাঁর ছিল গোপন দানের হাত। সমাজ সংস্কারে তিনি ছিলেন এক মহান ব্রতী। অনৈতিকতা ছিল তাঁর ঘোর শত্রু। এ ক্ষেত্রে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধু বা সাংগঠনিক সাথীকেও ছাড় দেননি। তাঁর প্রথমা স্ত্রী বেগম সৈয়দার জীবনাবসান ঘটে ১৯৮৩ সালের ৯ মার্চ। যা ছিল তাঁর জন্য চরম আঘাত। এ নিয়ে তিনি লিখেছেন উক্ত বইয়ের ২১২ পৃষ্ঠা হতে ২১৫ পর্যন্ত স্মৃতি দর্পণ। তারপরও বলতে হয়, সা’দ আহমদ মানুষের ঊর্ধে কিছু ছিলেন না। মানুষ মাত্রই ভুল করে। কাজেই তাঁরও ভুল ছিল। মরণোত্তর জীবনে কারও ভুল নিয়ে আলোচনা নয়। যদি কিছু নজরে থাকে, তা হতে নিজের সংশোধনের শিক্ষা নেয়াই বিবেকবানের কাজ। আল্লাহ সকলকে ক্ষমা করুন। সা’দ আহমদ-এর নেক কাজের উপযুক্ত প্রতিদান করুন।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র অইনজীবি এ্যাডভোকেট সা’দ আহমদ (৮৯) ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন) তিনি আজ সোমবার ভোর ৫ টায় কুষ্টিয়ায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। আজ বিকাল ৩ টায় কুষ্টিয়া জর্জ কোর্ট চত্বরে প্রথম নামাজে জানাজা ও বাদ আছর পৌর গোরস্থান মসজিদে ২য় জানাজা শেষে কুষ্টিয়া পৌর গোরস্থানে দাফন করা হয়। মরহুমের ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল শওকাত হোসেন, সেক্রেটারী জেনারেল ড. মওলানা এনামুল হক আজাদ, ও জয়েন্ট সেক্রেটারী মোস্তফা তারেকুল হাসান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এ্যাডভোকেট সাদ আহমদ দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে যে অবদান রেখেছেন জাতিন তা চিরদিন স্মরণে রাখবে। তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত থেকেও ইসলাম সম্পর্কে যে জ্ঞান রাখতেন ও তা বাস্তবায়নের জন্য জান-মাল দিয়ে যে চেষ্টা করেছেন তা বিরল। মওলানা আবদুর রহীম-এর ইন্তেকালের পর তিনি ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবার বর্গের প্রতি সমবেদনা জানান।
অ্যাডভোকেট সা’দ আহমেদ ১৯২৭ সালের ১ মে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম ডা: মনির উদ্দিন আহমেদ ও মা মরহুমা হালিমা বেগম। তিনি ১৯৪৭ সালে ভারতের আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং ১৯৪৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ (অর্থনীতি) প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় এবং একই বছর এলএলবিতে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। ১৯৪৯ সালে লèৌ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আইনবিষয়ক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান এবং ইংরেজি বিতর্কে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে সক্রিয় ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫০ থেকে ’৫২ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে আইনজীবী হিসেবে তিনি অবিভক্ত কুষ্টিয়া বারে যোগদান করেন। ১৯৫৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি অবিভক্ত কুষ্টিয়া জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান, পূর্ব পাকিস্তান সরকারের জুট অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সদস্য, পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশনের ডাইরেক্টর এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।
তিনি মুসলিম ছাত্রলীগ, আওয়ামী মুসলিম লীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আমলে পাকিস্তান আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ৬০-এর দশকে যাবতীয় আন্দোলন-কপ, পিডিএম, ডাক ইত্যাদির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৫৩, ১৯৫৯ ও ১৯৬২ সালে নিবর্তনমূলক আইনে বিভিন্ন মেয়াদে কারাবরণ করেন। ১৯৭৮ সালে করাচিতে রাবেতা আলম ইসলামীর বিশ্ব সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৭৯ সালে ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহর আমন্ত্রণে ইরান সফর করেন এবং ইমাম খোমেনির সাথে সাক্ষাৎ করেন। ১৯৮০ সাল থেকে বেশ কয়েক বছর ইরানে বিভিন্ন স্থানে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন।
এ ছাড়া সা’দ আহমেদ বেশ কয়েকটি গ্রন্থের প্রণেতা। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে হজরত মোহাম্মদ সা:-এর দাওয়াত ও আজকের মুসলমান, ইসলামের অর্থনীতি, সূরা আল আসরের আলোকে আমাদের সমাজ,আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহানবী সা:,আমার দেখা সমাজ ও রাজনীতির তিন কাল, ইসলামে মসজিদের ভূমিকা,আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মোহাম্মদ সা:, কোরবানীর শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচনে জাকাতের ভূমিকা। সা’দ আহমেদ কুষ্টিয়া অঞ্চলে ধর্মীয় ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি রিজিয়া সা’দ ইসলামিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা, ভেড়ামারায় নিজের বাবার নামে ‘আলহাজ ডা: মনির উদ্দিন ট্রাস্ট’ ও মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘হালিমা বেগম অ্যাকাডেমিরও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। গত চার বছর থেকে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে আইন পেশা থেকে দূরে ছিলেন। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী ছিলেন।
0 comments: