বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের দ্বারা মুসলিম নির্যাতন

http://a6.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-snc6/178950_10150841100532133_302832398_n.jpg
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অং-সান-সূচীর দেশ মিয়ানমার! হায়রে নিরীহ অহিংসার ধ্বজাধারী বৌদ্ধরা!! ইসলাম আর মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে সকল কাফির মুশরিক ই একই হিংস্র চেতনা লালন করে, তার প্রমান দিচ্ছে রাখাইন-মগ বৌদ্ধরা! জনাবা সূচী - এই দাঙ্গা বন্ধ করুন! আমার মুসলমান ভাই-মা-বোন আর নিষ্পাপ শিশুদের রক্তে আপনার মিয়ানমার ভিজে গেছে। বন্ধ করুন এই হত্যাযজ্ঞ!! আপনাদের বৌদ্ধদের অহিংসা নীতির আড়ালে লুকিয়ে থাকা হিংস্রতার দাঁতাল ভয়াল রূপটি বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচিত হয়ে গেছে! - বাংলাদেশের মুসলিমগন! যে যেখানে আছেন, বার্মাবাসী রোহিঙ্গা মুসলিম ভাই-বোনদের পাশে দাড়ান! আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এবং ইন্টারনেটের প্রতিটি সেক্টরে মিয়ানমারে মুসলিম হত্যাযজ্ঞের ঘটনাগুলো তুলে ধরুন!

http://a3.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-snc6/198283_10150883641384094_1190331485_n.jpg

মুসলিমরা শুধু মুসলিম প্রধান দেশে বাস করে না । অমুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে তারা বিপুল পরিমানে বাস করে ।তেমনি তারা মুহাম্মদ ( সালিল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এর সাহাবীদের সময় হতেই তারা বৌদ্ধ প্রধান দেশগুলোতে বাস করছে । বৌদ্ধ প্রধান দেশগুলোতে যেমন মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে, তেমনি তাদের জনসংখ্যাও হ্রাস পাচ্ছে। মুসলমানদের ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস ও বেদখল করা হচ্ছে এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে।

 মায়ানমার : দেশের প্রতিবেশী বৌদ্ধ প্রধান দেশ মায়ানমারে এ পর্যন্ত দু হাজারেরও অধিক মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ১৯৯৭ সালের মার্চ এপ্রিল মাসে মায়নমারের মুসলিম প্রধান আরাকান প্রদেশের ২৭টি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়। এর মধ্যে ৬শ বছরের প্রাচীন সানধি খান মসজিদও রয়েছে। আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমূলে উৎখাত করে বৌদ্ধ প্রধান আরোকান কায়েম করতে চায় মায়ানমারের বৌদ্ধ সরকার। এজন্য তারা আরাকানের নাম পরিবর্তন করে রাখাইন প্রে করেছে এবং তার রাজধানী শহর আকিয়াবের নাম পরিবর্তন করে সিত্তি রেখেছে। ১৯৭৮ সালেই ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। বিভিন্ন সময় বৌদ্ধদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানরা ঝাঁকে ঝাঁকে প্রবেশ করে।
https://p.twimg.com/Au9W5e0CMAIF-qa.jpg:large
 থাইল্যান্ড: বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থাইল্যান্ডে ১৯৯২ সালে মসজিদ ছিল ২ হাজার ৭৮টি। কিন্তু পূর্বে ছিল ২ হাজার ৫০০টি। বাকিগুলো মালয় ভাষাভাষী মুসলমানরা ১৯৩২ সাল থেকে নির্যাতিত হচ্ছে। থাইল্যান্ডের মুসলমানদের ইসলামী নাম রাখা নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুসলমানদের সংখ্যা কমানোর জন্য প্রত্যেক মুসলমান দম্পতিকে দুটি সন্তানের অধিক সন্তান জন্ম না দেয়ার জন্য বাধ্য করেছে। মুসলমান কোমলমতি শিশুদের স্কুলে বুদ্ধমূর্তি স্থাপন ও সে সম্পর্কিত শিক্ষার মাধ্যমে মুসলমানী চিন্তা চেতনাবিরোধী শিক্ষার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। কারণ, এতে বৌদ্ধ থাই সরকারের ধারনা, একক থাই ও বৌদ্ধ মতাদর্শভিত্তিক ঐক্যবন্ধ ও সুদৃঢ় থাইল্যান্ড গড়ে ওঠবে। মুসলমানদের ওপর দমন নিপীড়নের কারণে দক্ষিণ থাইল্যান্ডে পাত্তানী নামক স্বাধীন দেশ কায়েমের আন্দোলন ১৯৬০ সাল থেকে শুরু হয়েছে।

 কম্বোডিয়া: কম্বোডিয়ার মুসলমানরা খেমাররুজ গেরিলাদের দ্বারা সমূলে উৎখাত হয়েছে। মুসলমানদের জনসংখ্যার হার ৬% থেকে নেমে ২.৪% এ দাঁড়িয়েছে।

 শ্রীলংকা: শ্রীলংকায় ১৫২৬ ও ১৬৬২ সালে সরকারীভাবে মুসলমানরা উৎখাত হয়ে উত্তর পূর্ব উপকুলে আশ্রয় নেয়। পর্তুগীজ ও ডাচ উপনিবেশিক শক্তির দ্বারাও মুসলমানরা নির্যাতিত হয়। এরপরও ১৯৮১ সালে মুসলমানদের হার ৭.৬% এ দাঁড়ায়। এই ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী তামিল টাইগারদের টার্গেটে পরিণতি হয়েছে। প্রায় দু’লাখ মুসলমান নিজ দেশেই উদ্বাস্তু জীবনযাপন করছে। কিন্তু শ্রীলংকার বৌদ্ধ সরকার তাদের অবস্থার পরিবর্তনে আন্তরিক নয়।

 তিব্বত: তিব্বতের মুসলমানরা ১৯৫৪ সালে সমূলে উৎখাত হয়েছেন। চীনা সরকারের কমিইনস্টপন্থী চিন্তা চেতনার কারনে মুসলমানরা নির্যাতিত হয়ে আসছেন।

 সিঙ্গাপুর:সিঙ্গাপুরে মালয় ভাষা ভাষী মুসলমানদের সন্দেহের চোখে দেখা হয়। তাদের বিভিন্ন সরকারী সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের নামে চারটি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু অন্যত্র মসজিদ বানিয়ে দেয়ার প্রতিশ্র“তি রক্ষিত হয়নি। বিভিন্ন সময় পার্শ্ববর্তি মুসলমান প্রধান দেশগুলোর শাসকগোষ্ঠীর প্রতি উসকানিমূলক বক্তব্য ছুঁড়ে মারে সরকারের কর্তব্যক্তিরা।

 ভিয়েতনাম: ভিয়েতনামে চাম জনগোষ্ঠীভুক্ত মুসলমানরা প্রভাবশালী অবস্থান থাকলেও তারা আজ সমূলে উৎখাত হয়েছেন। হো-চিন-মিনের সময় থেকে মুসলমানদের অবস্থা রহস্যাকৃত রয়েছে। অনেক মুসলমানকে বাহাই ও খ্রিস্টান বানানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভিয়েতনাম সরকারের সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে।

 চীন:চীনে ১৯৫২ সালের হিসাবে ৫ কোটি মুসলমান বসবাস করত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এক পরিসংখ্যানে মোট জনসংখ্যার এক সপ্তমাংশ ছিল মুসলমান। কিন্তু চীন সরকার মুসলমানদের পরিসংখ্যান নিয়ে বরাবরই লুকোচুরির আশ্রয় নিচ্ছে। মাও জে দং এর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর অধিকাংশ সালের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ন মসজিদ ধ্বংস করা হয়। কোরআন ছাপানো, পড়া ও সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৯১ সালের পরিসংখ্যানে মোট জনসংখ্যার ১.৪% মুসলমান দেখানো হয়েছে। কিন্তু ১৯৯০ সালে মাসিক ম্যাগাজিন তাই হোষার রিপোর্ট অনুযায়ী মুসলমানদের সংখ্যা আঠারো কোটি যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫.৫%। চীন ১৯৭৩ সালৈ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউনান প্রদেশ দখল করে নেয় এবং এই সময় সমগ্র চীনে এক কোটি মুসলমানকে হত্যা করা হয়। বর্তমানে নির্যাতন পূর্বের মুসলমানদের ওপর নির্যাতন পূর্বের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। চীনের  মুসলিমপ্রধান সিংকিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলমান গনহত্যাকান্ড নিয়ে হারুন ইয়াহিয়ার বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টারী ভিডিও রয়েছে।

 ভুটান : মুসলিমদের জন্য জন্য মসজিদ নির্মান অনুমোদনযোগ্য নয় ।

 বাংলাদেশ : বাংলাদেশ যদি মুসলিম প্রধান দেশ তাতেও বৌদ্ধরা অনেক এলাকায় মুসলিমদের বাসস্হান এবং ধর্মীয় স্হাপনা (কবরস্হান,মসজিদ,ঈদগাহ) দখলসহ মুসলিমদের আহত ও নিহত করছে । এসব ঘটছে আমাদের রাজনৈতিক ভূগোলের মধ্যেই ।

 রাশিয়া : রাশিয়ার কালমিকিয়া প্রজাতন্ত্রে মুসলিমদের বসবাস অগ্রহণযোগ্য মনে করা হয় । বলা হয় এভুখন্ড শুধুমাত্র বৌদ্ধদের । অথচ রাশিয়ায় মুসলিমরা ১৮ % আর বৌদ্ধরা যৎ সামান্য ।

বৌদ্ধদের জীবনবোধ :বৌদ্ধ প্রধান অস্তিত্বের ব্যাপারে সহনশীল নয়। অসহিষ্ণুতাপ্রসূত কাজকর্মের মাধ্যমে মসুলমানদের প্রতি বৌদ্ধরা প্ররোচনায় সৃষ্টি করেছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন ইশয়ান বুদ্ধিষ্ট কনফারেন্স ফর পিস (ABPC)-এর ১৯৮৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা বিষয় ছিল:ন্যায় বিচারের মাধ্যমে শান্তি। আলোচিত বৌদ্ধ প্রধান দেশগুলো কোন ধ্বংসের শান্তি ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে সংখ্যালঘু মুসলমানদের জন্য?

 নওগাঁ জেলার পাহাপুরের সোমপুর বৌদ্ধ বিহার পোড়ামাটির ফলকের নিচে ৬৩টি পাথরের মূর্তি আবিস্কৃত হয়। এসব মূতির মধ্যে হিন্দু দেবদেবীরও মূর্তি রয়েছে। গবেষকদের মন্তব্য এগুলো বৌদ্ধ বিহারের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য হিন্দু মন্দির থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। অর্থাৎ এ থেকে ধারণা করা যায়, বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা কোনকালেই পর ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু ছিল না। সোমপুর হিবারের হেবজ্র মূর্তির বৈশিষ্ট্য উল্লেখযোগ্য। মূর্তিটি ছয় মাথা ও ষোল হাতবিশিস্ট। এই ষোল হাতের মধ্যে কেন্দ্রীয় জোড়া দিয়ে হেবজ শক্তিকে অশালীন ভঙ্গিতে আলিঙ্গনাবদ্ধ করে রেখেছে। অপর সাত জোড়া থেকে কিছু অস্পষ্ট তলল পদার্থ ধারণ করে মানুষের মাথার খুলি ধারণ করেছে। মূর্তি দুটির প্রত্যেকের কপালে একটা করে চোখ এবং গলায় নরমন্ডের মালা রয়েছে।
 (উৎস :১.পাহাড়পুর- ডঃ নাজিমুদ্দীন আহমেদ; ২.Bangladesh Archaeology 1979 Vol 1. No. 1; প্রকাশনায় :গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়) সোমপুর বিহারের হেব্রজ্ মূর্তি নৃত্য গীতরত বিভিন্ন মূর্তির অশালীন ভঙ্গি ও অর্ধনগ্ন আপত্তিকর ভঙ্গিমার রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তিসহ অন্যসব মূর্তি কোন সুস্থ সভ্যতার নিদর্শন বহন করে? মুসলিমদের হতে সভ্যতা মুক্তি পাওয়ার শ্লোগান দিয়ে আমাদের কোন সভ্যতায় ফিরিয়ে নিতে যেতে চান?

 নব্বইয়ের দশকে বিশ্বখ্যাত ইংরেজি অভিধান প্রকাশকারী LONGMAN COMPANY তাদের প্রকাশিত এক অভিধানে বৌদ্ধ প্রধান থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিল, ব্যাংকক বিশ্বের মধ্যে পতিতালয়ের জন্য বিখ্যাত। পরে প্রতিবাদের কারণে LONGMAN COMPANY কর্তৃপক্ষ সংশোধন করে লেখে ব্যাংককের প্রতিতালয়ের সুনাম বিশ্বজোড়া।

 থাইল্যান্ডে এইডস রোগে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মৃত্যুর খবর অহরহ শোনা যায়। এ ধরনের অসুস্থ সংস্কৃতি সভ্যতার ধারক ও বাহক অন্যাসব বৌদ্ধ দেশও। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের যৌনতা উপভোগ ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ । অথচ মানুষের জন্য যৌনতা উপভোগ সহজাত এবং অপরিহার্য । এর বিপরীত কোন শুভফল বয়ে আনে না তা এর বড় প্রমান ।


 উপসংহার : ন্যায় সংগত দাবিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য মুসলিমরা কাজ করার প্রচেষ্টা চালায় তখনই মুসলিম ও মুসলিম শাসকদের মৌলবাদী বলে গাল দেয়া হয় এবং মৌলবাদের বিকাশ ঘটেছে বলে বলা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রাশিয়ায় অন্যতম মুসলমান প্রাধান্য অঙ্গরাজ্য আদিগেইয়া (  http://en.wikipedia.org/wiki/Republic_of_Adygea  )এর সাবেক প্রেসিডেন্ট (আসলাম জারিমভ) - এর মন্তব্য:ধর্মীয় এতিহ্য এবং কর্মকান্ডের পুররুজীবনের অর্থ মৌলবাদের বিকাশ নয়। অনত্র তিনি বলেন, হাজার বছর ব্যাপী ইসলাম এই অঞ্চলে যে ঐতিহ্য, আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক মূল্যবোধের প্রসার ঘটিয়েছে ।

 বৌদ্ধপ্রধান দেশগুলোতে নিরবে নিবৃত্তে যে মুসলিম নির্যাতন হচ্ছে এব্যাপারে জনমত গঠন করতে হবে এবং এব্যাপারে জোড়ালো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে । এবং নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে হবে । তাদের যার যার অবস্হান থেকে নৈতিক সমর্থন দিতে হবে ।



 [ অহিংসা পরম ধর্ম , জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক, .....মুখরোচক স্লোগান আমরা বৌদ্ধদের মুখে শুনি । কিণ্তু তারা বাস্তবে তা পালন করে না । তারা জীবিত প্রাণী হত্যা করে খেয়ে থাকে । আর মানুষ হত্যা তো করেই । ]

 কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ন্যাশনাল আর্কাইভস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্হাগার, পুলো ডট কম, এআরএনও সাইট, ইসলাম অনলাইন, দৈনিক ইনকিলাব স্বদেশ- বিদেশ বিভাগ, ফেসবুক, উদয়ন: প্রগতি প্রকাশন, চট্টগ্রাম ইসলামি ফাউন্ডেশন গ্রন্হাগার, আল আরাফা লাইব্রেরী, সামহোয়ার ইন ব্লগ, শেখ দরবার আলম : সহসম্পাদক ইনকিলাব ]



https://p.twimg.com/AvKbPMdCIAA1_Sf.jpg:large
►মিয়ানমারে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার রোহিঙ্গা মুসলমানেরা◄ : মিয়ানমারে মানবিক বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে রোহিঙ্গরা। গুলিবিদ্ধরা চিকিৎসাহীন অবস্থায় মৃত্যুপথের যাত্রী। কোথাও চিকিৎসা নিতে পারছে না। অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। এদিকে গুলিবিদ্ধ কয়েক...জন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। গুলিবিদ্ধ কয়েকজন হল- মংড়– জামতলী পাড়ার আহমদ হোছনের পুত্র কালা হোছেন (৬০), নাপিতের ডেইল এলাকার মকুতল হোছনের পুত্র হাফিজুর রহমান(২০), বাসুরপাড়া দুদুমিয়া পুত্র ছৈয়দি (৩৫), কাহারীপাড়া হাফেজ আহমদের পুত্র রিদুয়ান (১৭), মংডু নয়াপাড়া এলাকার আবু জমিলের পুত্র মোঃ তৈয়ুব (১৮)। গুলিবিদ্ধরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা গুলিবিদ্ধ কালা হোছন(৬০) জানান- মিয়ানমারে চিকিৎসা নিতে না পারায় মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে এসেছি। এছাড়া সরকারী বাহিনীর ইন্ধনে রাখাইনদের অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে ১১ জুন ৮টি ট্রলার যোগে প্রায় ৫০৪ রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ অপোয় নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ভাসছে। কিন্তু বিজিবি ও কোস্টগার্ডের বাধার মুখে তারা বাংলাদেশে ঢুকতে পারছে না। সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাবেক মেম্বার নুর মোহাম্মদ জানান- এসব ট্রলারে গুরুতর অসুস্থ, আহত, গুলিবিদ্ধ, সন্তানসম্ভাবা মহিলারা আছে। তাছাড়া অনাহারে জনিত কারনে তাদের অবস্থা ছিল অত্যান্ত কাহিল। দ্বীপের লোকজন রান্না করা ভাত ও পিপাসা মিটানোর জন্য পানি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাধার মুখে তা দেয়া সম্ভব হয়নি। ব্যাপক অনুপ্রবেশের জন্য মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম নাফনদীতে নৌকা নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে সাগরে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে । খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে ভাসমান ট্রলারে ৮জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ১১ জুন ভোর রাতে নাসাকাবাহিনীর ধাওয়া হয়ে ৪টি রোহিঙ্গা বোঝাই বোট ডুবির ঘটনাও ঘটেছে। প্রত্যদর্শী জেলেরা সাগরে ৫/৬টি লাশ ভাসতে দেখেছে বলে জানায়। মিয়ানমারের রাখাইন সম্প্রদায় আরাকান রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর দমন-নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। আর প্রত্য ও পরোভাবে পে রয়েছে সেদেশের সামরিক জান্তা ও সীমান্ত রী নাসাকা বাহিনী। গত ৮ জুন শুরু হওয়া দাঙ্গায় কমপে ৩০ জন নিহত ও কয়েকশত মুসলিম রোহিঙ্গা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা চিরস্থায়ী করে রাখা এবং এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর চলছে নতুন করে এ চরম নির্যাতন।

https://p.twimg.com/AvF71FHCAAAtPgg.jpg:large
গত ৩ জুন রোববার মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনের তোয়ানগোকিতে কট্টরপন্থি বৌদ্ধদের হামলায় ১০ জন মুসলিম নিহত হওয়ার খবরে আরকান রাজ্যের মংডুসহ বিভিন্ন শহরে ৮ জুন বিােভরত মুসলিম নাগরিকদের উপর নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ও অসংখ্য মুসলিম আহত হয়ে চিকিৎসাবিহীন মৃত্যু পথের যাত্রী। রাখাইন সম্প্রদায় ইতিমধ্যে জ্বালিয়ে দিয়েছে মসজিদ, মুসলিম পল্লি, লুটপাট করছে মুসলিমদের দোকানে। অনাহারে, অর্ধহারে দিনাতিপাত করছে মুসলমানরা। নিহতদের জানাযা তো দূরের কথা তাদের লাশ নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ বাহিনী। চিকিৎসা নিতে পারছে না গুলিবিদ্ধরা। মানবতার লেশ মাত্র নেই সেখানে। মিডিয়াকর্মীদের অবাধ তথ্য সরবরাহের স্বীধানীতা না থাকায় প্রচার হচ্ছেনা নির্যাতনের বাস্তব চিত্র ও সঠিক খবর। অসংখ্য সেনা বাহিনী শহরে ও গ্রামে টহল দিচ্ছে। সেনাবাহিনী টহল দিলেও রাখাইন সম্প্রদায় লুটপাট ও পল্লীতে অগ্নি সংযোগ অব্যাহত রয়েছে। অবাধে রাখাইন সম্প্রদায় বিচরন করলেও মুসলিম সম্প্রদায় বাড়ী-ঘর হতে বের হতে দিচ্ছেনা ফলে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

https://p.twimg.com/AvF7LS0CMAAuhL2.jpg:large
এদিকে মিয়ানমারের অনুপ্রবেশকারী গুলিবিদ্ধ একজন রোহিঙ্গাকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গতকাল সকালে পুলিশ আটক করেছে। আটক ব্যক্তির নাম তৈয়ব (২৫)। তিনি মংডুর বাসিন্দা। অন্যদিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কালা হোসেন (৫০) নামের আরো একজন গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গাকে পুলিশ আটক করেছে । সূত্র জানায়-১১জুন সকাল ৯টারদিকে দাঙ্গারোধে নিয়োজিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রসদ বোঝাই ২টি হেলিকপ্টার মংন্ডুটাউনশীপে অবতরনের পর চলে যাওয়ার সাথে সাথে একদল উচ্ছৃখল রাখাইন পাশ্ববর্তী রাসিদং, বুমেপাড়া,খাইরীপাড়ায় মুসলিমদের ১৪/১৫টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুসলিম যুবকেরা নেভাতে গেলে নাসাকাবাহিনী কারফিউ ভঙ্গ করায় এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এসব অঞ্চলে খাদ্য,চিকিৎসা সংকট ও নিরাপত্তাহীনতায় মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিমদের বিভিন্ন গ্রামে থেমে থেমে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও চোরাগুপ্তা হামলা অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমারের মুসলিম ও রাজনৈতিক নেতবৃন্দ রাখাইনদের চোরাগুপ্তা হামলা-লাশ গুম করা বন্ধ, জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ বিতরণ, মানবিক বিপর্যযরোধে আর্ন্তজাতিক হস্তপে ও সহায়তা কামনা করেছে।

https://p.twimg.com/AvF7Yi_CAAAJVzQ.jpg:large
রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা (আরআরসি) ও সরকারের যুগ্ম সচিব ফিরোজ সালাহ উদ্দিন এই প্রতিবেদককে জানান, মিয়ানমার থেকে নতুন করে কোনো অনুপ্রবেশকারী যাতে টেকনাফ ও উখিয়ার দুটি রোহিঙ্গা শিবিরে ঢুকতে না পারে, সেজন্য শিবিরের পুলিশ ও আনসারদের সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। ফিরোজ সালাহউদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে শিবির দুটি থেকে শরণার্থীদের বাইরে যাওয়া-আসায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান- মানবিক কারনে আইনি বিবেচনায় যতটুকু সহযোগীতা করা প্রয়োজন তা করার চেষ্টা করা হবে। এ ব্যাপারে টেকনাফ ৪২ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল জাহিদ হাসান বলেন দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের আটক করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার পর পুশব্যাক করা হবে এবং সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি টহলদল জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত ৮ জুন শুরু হওয়া সহিংসতা এখনো অব্যহত রয়েছে।


http://a3.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-prn1/s720x720/556591_383286221728118_1992817850_n.jpg 
http://a7.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash3/537493_383326615057412_1649241945_n.jpg 
http://a2.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-prn1/542117_383304041726336_412935609_n.jpg 
http://a2.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash3/537556_366594370063970_1568451379_n.jpg

1 comments:

mdhasan16 বলেছেন...

"Dossu bonohur" By Romena Afaz, ar boiti dewa jabe?

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম