নামাজের উদ্দেশ্য এবং পুস্তিকার নামকরণের যথার্থতা
শ্রদ্ধেয় পাঠকবৃন্দ, ‘নামাজ ব্যর্থ হচ্ছে’ কথাটি লেখার জন্যে কেউ কেউ হয়তো আমার উপর রাগ করতে পারেন। তাই প্রথমে এ বিষয়ে আলোচনা করা দরকার। কোন কাজ ব্যর্থ হচ্ছে কিনা, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হলে সর্বপ্রথম জানা দরকার ঐ কাজটির উদ্দেশ্য। যদি দেখা যায়, ঐ কাজটি করা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু তার উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে এমন লণ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে না, তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যাবে যে, ঐ কাজটি ব্যর্থ হচ্ছে। আশা করি এ ব্যাপারে আপনারা কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না।
তাহলে নামাজ ব্যর্থ হচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হলে প্রথমে আমাদের নামাজের উদ্দেশ্যটি জানতে হবে। চলুন, এ ব্যাপারে আল-কুরআন কী বলছে দেখা যাক।
পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা আন-কাবুতের ৪৫ নং আয়াতে নামাজের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আল্লাহ বলছেন
إِنَّ الصَّلَوةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ.
অর্থ: নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত রাখে।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ এখানে বলেছেন : নিশ্চয়ই নামাজ, নামাজী ব্যক্তি এবং নামাজীদের সমাজ (যেহেতু ব্যক্তির সমষ্টিই সমাজ) থেকে ইসলামের দৃষ্টিতে অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ দূর করে। লণীয় বিষয় হচ্ছে, আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়তা দিয়েই কথাটি বলছেন।
তাহলে এই আয়াতের মাধ্যমে, যে উদ্দেশ্যে আল্লাহ নামাজ ফরজ করেছেন, তা নিশ্চিতভাবে জানা গেল। নামাজের সেই উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদের ব্যক্তি ও সমাজ থেকে ইসলামের দৃষ্টিতে অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ নিশ্চিতভাবে দূর করা।
এবার চলুন দেখা যাক, নামাজের এই উদ্দেশ্য কতটুকু সাধিত হচ্ছে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যত দিন যাচ্ছে আমাদের সমাজে নামাজীর সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি গুণ বাড়ছে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজের সংখ্যা। আপনাদের অভিজ্ঞতাও নিশ্চয়ই এর থেকে ভিন্ন হবে না। প্রায় সকল মুসলিম দেশে এই একই অবস্থা।
তাহলে এখন সবাই নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, যে উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে আল্লাহ নামাজ ফরজ করেছেন, মুসলমানদের ব্যক্তি ও সমাজে বর্তমানে নামাজ সে উদ্দেশ্য সাধনে ব্যর্থ হচ্ছে। অবশ্য দোষ এখানে নামাজের নয়। দোষ নামাজির।
নামাজের গুরুত্ব
ইসলামী জীবন বিধানে নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল বা কাজ। আর নামাজ যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝা যায় নিম্নের তথ্যগুলো থেকে
১. নামাজ ধনী, গরীব সকলের জন্যে ফরজ। কিন্তু ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল আছে যা সকলের জন্যে ফরজ নয়। যেমন যাকাত ও হজ্জ শুধু ধনীদের জন্যে ফরজ।
২. ছফরে নামাজ মাফ নাই কিন্তু রোজা মাফ আছে।
৩. অজ্ঞান অবস্থা ছাড়া নামাজ মাফ নাই কিন্তু অজ্ঞানসহ অন্য অসুস্থ অবস্থায় রোজা মাফ আছে।
৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আদেশ মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীকে আরশে আজীমে ডেকে নিয়ে সরাসরি দিয়েছিলেন। কিন্তু অন্য সকল কাজের আদেশ জিব্রাইল আ. এর মাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
৫. নামাজকে রাসূল সা. বেহেশতের চাবি বলে উল্লেখ করেছেন।
অধ্যায় ০৩ : নামাজের উদ্দেশ্য ও নামাজের গুরুত্ব
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: