নৈরাশ্যের অন্ধকার
মানুষের জীবন ব্যবস্থা রচনা করার জন্য অপরিহার্য মানবীয় উপাদানগুলো সম্পর্কে আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আমার বিশ্বাস এ আলোচনা ও বিশ্লেষণের ব্যাপারে আমি বিজ্ঞান বা যুক্তি প্রয়োগের দিক দিয়ে কোনো ভুল করিনি। মানুষের জ্ঞান লাভের উপায়সমূহের যে বিশ্লেষণ আমি করলাম, তা যদি সত্য হয়, তাহলে এখন আমি আমার সিদ্ধান্ত স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করতে পারি। উপরোক্ত কারণে আমার দৃঢ় ও সন্দেহাতীত বিশ্বাস জন্মেছে (এবং এ বিশ্বাস নষ্ট করার কোনো কারণই থাকতে পারে না) যে, মানুষ নিজের জন্য এসব উপায়ের সাহায্যে অসম্পূর্ণ অবাস্তব, ভুল-ত্রুটিতে পরিপূর্ণ আঞ্চলিক কিংবা সাময়িক কোনো ব্যবস্থা রচনা করতে সমর্থ হতেও পারে ; কিন্তু মানুষের পক্ষে এ উপায়ে কোনো পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা (الدين) রচনা করা একেবারেই অসম্ভব পূর্বেও তা সম্ভব ছিলো না, আজও সম্ভব নয় এবং অনাগত ভবিষ্যতের জন্যও এর সম্ভবনা সম্পর্কে নিরাশ হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই।
এখন মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য যদি সত্যই কোনো ‘রব’ বর্তমান না থাকে আল্লাহদ্রোহী কাফেরদের যেমন ধারণা তবে তার আত্মহত্যা করা ভিন্ন অন্য কোনো উপায়ই থাকে না। যে পথিকের কোনো পথপ্রদর্শক নেই, যে নিজে পথ চেনে না, পথ চিনার কোনো উপায়ও যার জানা নেই, তার পক্ষে চরম ও চূড়ান্তভাবে নিরাশ হওয়া ছাড়া উপায় থাকতে পারে না। এমতাবস্থায় তার একজন হিতাকাংখী ব্যক্তি তাকে প্রকাশ্য রাজপথে পাথরের সাথে মাথা ঠুকে সকল মুশকিল আসান করার উপদেশ দেয়া ছাড়া তার আর কিই বা উপকার করতে পারে! আর ‘আল্লাহ’ বলতে যদি সত্যিই কেউ থাকে, কিংবা থেকেও যদি সে মানুষের কর্মজীবনের পথ বাতলিয়ে দিতে সমর্থ না হয় কোনো কোনো দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকের যেমন বিশ্বাস তবে এটা আরো অধিকতর দুঃখের বিষয়।
যে আল্লাহ দুনিয়ার প্রত্যেকটি বস্তুর স্থিতি, পরিবর্ধন ও ক্রমবিকাশ লাভের জন্য নিখুঁত ব্যবস্থা করে রেখেছেন, সেই আল্লাহ-ই যদি মানুষের সর্বাপেক্ষা বেশি প্রয়োজনীয় জিনিসটি না দিয়ে থাকেন যা না হলে মানুষের জীবন একেবারে অর্থহীন, সেই জিনিসের কোনো ব্যবস্থাই যদি তিনি না করে থাকেন, তবে তাঁর সৃষ্ট এ দুনিয়ায় জীবন যাপন করা মানুষের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। তাহলে মানুষের এ জীবন একটি দুরূহ জীবন এবং একটি মস্তবড় বিপদ বিশেষ হয়ে পড়ে, এমনি বিপদ যা অপেক্ষা বড় বিপদ আর কিছু ধারণা করাও যায় না। এমতাবস্থায় গরীব, দুঃখী, সর্বহারা, রুগ্ন, আহত, মজলুম ও শোষিত জনতার দুঃখের জন্য কেঁদে কি হবে, একান্তই যদি কাঁদতে হয়, তবে এই গোটা মানবতার সীমাহীন দুঃখের জন্য কাঁদুন। এমতাবস্থায় বলতে হবে যে, মানুষকে এক অন্তহীন দুঃখ সাগরে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার অবস্থা এই হয়েছে যে, সে বারবার ভুল অভিজ্ঞতা লাভ করে ব্যর্থ হয়। আঘাতের পর আঘাত খেয়ে পড়ে যায়, চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়, আবার উঠে চলতে শুরু করে ; কিন্তু পুণরায় সে আঘাত খেয়ে ধুলোয় লুণ্ঠিত হয়ে পড়ে। প্রত্যেক আঘাতে দেশের পর দেশ, জাতির পর জাতি তাবাহ ও বরবাদ হয়ে যায়। বড়ই দুঃখের বিষয় এ অর্বাচীন মানুষ এতোটুকুও জানে না যে, তার জীবন ও জন্মের উদ্দেশ্য কি? সে কিসের উদ্দেশ্যে চেষ্টা করবে, সাধনা করবে, শ্রম ও কষ্ট স্বীকার করবে আর তা সে করবেই বা কোন্ প্রণালী ও পদ্ধতি অনুসারে এতোটুকু পর্যন্ত তার জানা নেই। কিন্তু মানবতার এ মর্মান্তিক দূরবস্থা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন সেই আল্লাহ যিনি মানুষকে এ দুনিয়াতে সৃষ্টি করেই কি ক্ষান্ত হয়েছে, তাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার কোনো দায়িত্বই কি তাঁর নেই।
এখন মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য যদি সত্যই কোনো ‘রব’ বর্তমান না থাকে আল্লাহদ্রোহী কাফেরদের যেমন ধারণা তবে তার আত্মহত্যা করা ভিন্ন অন্য কোনো উপায়ই থাকে না। যে পথিকের কোনো পথপ্রদর্শক নেই, যে নিজে পথ চেনে না, পথ চিনার কোনো উপায়ও যার জানা নেই, তার পক্ষে চরম ও চূড়ান্তভাবে নিরাশ হওয়া ছাড়া উপায় থাকতে পারে না। এমতাবস্থায় তার একজন হিতাকাংখী ব্যক্তি তাকে প্রকাশ্য রাজপথে পাথরের সাথে মাথা ঠুকে সকল মুশকিল আসান করার উপদেশ দেয়া ছাড়া তার আর কিই বা উপকার করতে পারে! আর ‘আল্লাহ’ বলতে যদি সত্যিই কেউ থাকে, কিংবা থেকেও যদি সে মানুষের কর্মজীবনের পথ বাতলিয়ে দিতে সমর্থ না হয় কোনো কোনো দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকের যেমন বিশ্বাস তবে এটা আরো অধিকতর দুঃখের বিষয়।
যে আল্লাহ দুনিয়ার প্রত্যেকটি বস্তুর স্থিতি, পরিবর্ধন ও ক্রমবিকাশ লাভের জন্য নিখুঁত ব্যবস্থা করে রেখেছেন, সেই আল্লাহ-ই যদি মানুষের সর্বাপেক্ষা বেশি প্রয়োজনীয় জিনিসটি না দিয়ে থাকেন যা না হলে মানুষের জীবন একেবারে অর্থহীন, সেই জিনিসের কোনো ব্যবস্থাই যদি তিনি না করে থাকেন, তবে তাঁর সৃষ্ট এ দুনিয়ায় জীবন যাপন করা মানুষের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। তাহলে মানুষের এ জীবন একটি দুরূহ জীবন এবং একটি মস্তবড় বিপদ বিশেষ হয়ে পড়ে, এমনি বিপদ যা অপেক্ষা বড় বিপদ আর কিছু ধারণা করাও যায় না। এমতাবস্থায় গরীব, দুঃখী, সর্বহারা, রুগ্ন, আহত, মজলুম ও শোষিত জনতার দুঃখের জন্য কেঁদে কি হবে, একান্তই যদি কাঁদতে হয়, তবে এই গোটা মানবতার সীমাহীন দুঃখের জন্য কাঁদুন। এমতাবস্থায় বলতে হবে যে, মানুষকে এক অন্তহীন দুঃখ সাগরে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার অবস্থা এই হয়েছে যে, সে বারবার ভুল অভিজ্ঞতা লাভ করে ব্যর্থ হয়। আঘাতের পর আঘাত খেয়ে পড়ে যায়, চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়, আবার উঠে চলতে শুরু করে ; কিন্তু পুণরায় সে আঘাত খেয়ে ধুলোয় লুণ্ঠিত হয়ে পড়ে। প্রত্যেক আঘাতে দেশের পর দেশ, জাতির পর জাতি তাবাহ ও বরবাদ হয়ে যায়। বড়ই দুঃখের বিষয় এ অর্বাচীন মানুষ এতোটুকুও জানে না যে, তার জীবন ও জন্মের উদ্দেশ্য কি? সে কিসের উদ্দেশ্যে চেষ্টা করবে, সাধনা করবে, শ্রম ও কষ্ট স্বীকার করবে আর তা সে করবেই বা কোন্ প্রণালী ও পদ্ধতি অনুসারে এতোটুকু পর্যন্ত তার জানা নেই। কিন্তু মানবতার এ মর্মান্তিক দূরবস্থা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন সেই আল্লাহ যিনি মানুষকে এ দুনিয়াতে সৃষ্টি করেই কি ক্ষান্ত হয়েছে, তাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার কোনো দায়িত্বই কি তাঁর নেই।
আশার একটি আলোক রেখা
কুরআন শরীফ এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। উপরে মানুষের যে চরম দূরবস্থার কথা বলা হয়েছে, কুরআন শরীফ তার সম্পূর্ণ বিপরীত এক নুতন তত্ত্বের দ্বার উদঘাটিত করেছে। কুরআন বলছেঃ আল্লাহ তাআলা শুধু সৃষ্টিকর্তাই নন, মানুষকে সৎপথের সন্ধানদাতাও তিনি। তিনি বস্তুজগতের প্রত্যেকটি জিনিসকে তার প্রকৃতির প্রয়োজনকে লক্ষ্য করে হেদায়াত দান করেছেনঃ
الذى اعطى كل شئ خلقه ثم هدى
এ হেদায়াত দান যে কতখানি সত্য, যে কোনো পিপীলিকা, মধুমক্ষিকা কিংবা মাকড়সা ধরে দেখলেই তার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যাবে। আল্লাহ তাআলা এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীকে যেরূপ জন্মগতভাবেই পথের সন্ধান জানিয়ে দিয়েছেন শিখিয়ে দিয়েছেন তাদের কাজ এবং কাজের পন্থা, সেরূপ তিনি মানুষের কর্মজীবনের জন্য পথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন কাজেই নিজের সর্বপ্রথম অহমিকা ভুলে গিয়ে সে আল্লাহর সম্মুখে আত্মসমর্পণ করা এবং তার পয়গাম্বরদের মারফত যে ব্যাপক জীবন ব্যবস্থা (الدين) তিনি নাযিল করেছেন, তা অনুসরণ করাই মানুষের পক্ষে একান্তভাবে কর্তব্য।
এখন দু’টি সিদ্ধান্ত আমাদের সামনে উপস্থিতঃ একটি মানুষের যাবতীয় শক্তি সামর্থ এবং তার জ্ঞান লাভের সমগ্র উপায়-উপাদানের বিশ্লেষণ করার পর লাভ হয়েছে আর অন্যটি পাচ্ছে কুরআনের সিদ্ধান্ত। এখন দুনিয়ার মানুষের পক্ষে হয় কুরআনের বাণী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, নতুবা তাকে এমন এক নৈরাশ্যের অন্ধকারাচ্ছন্ন গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হতে হবে, যেখানে আশার কোনো আলোক রেখাই বিচ্ছুরিত হয় না। ‘আদ্-দীন’ বা জীবন ব্যবস্থা লাভের জন্য মানুষের সামনে যদি দু’টি উপায় থাকতো এবং যদি প্রশ্ন করা হতো যে, মানুষ এ দু’টির কোন্টিকে গ্রহণ করবে তবে অবশ্য অনেক সুবিধা ছিলো। মূলত এখানে মোটেই সেই ব্যাপার নয় সে প্রশ্নও এখানে নয়।
এখানে আসল ব্যাপার এই যে, পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা (الدين) মানুষ কেবল একটি উপায়েই লাভ করতে পারে। এখন মানুষের সামনে এ প্রশ্ন মাথা জাগিয়ে উঠেছে যে, মানুষ এই একমাত্র উপায়ের সাহায্যে প্রাপ্ত জীবন গ্রহণ করবে, না এই একমাত্র পন্থার আশ্রয় অস্বীকার করে জাহেলিয়াত ও নিরুদ্দেশের অন্ধকারে জীবন-যাপনের সিদ্ধান্ত করবে? এ দু’টি পথের যে কোনো একটিকে মানুষ অনায়াসেই গ্রহণ করতে পারে তাকে এতোটুকু স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে মাত্র।
الذى اعطى كل شئ خلقه ثم هدى
এ হেদায়াত দান যে কতখানি সত্য, যে কোনো পিপীলিকা, মধুমক্ষিকা কিংবা মাকড়সা ধরে দেখলেই তার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যাবে। আল্লাহ তাআলা এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীকে যেরূপ জন্মগতভাবেই পথের সন্ধান জানিয়ে দিয়েছেন শিখিয়ে দিয়েছেন তাদের কাজ এবং কাজের পন্থা, সেরূপ তিনি মানুষের কর্মজীবনের জন্য পথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন কাজেই নিজের সর্বপ্রথম অহমিকা ভুলে গিয়ে সে আল্লাহর সম্মুখে আত্মসমর্পণ করা এবং তার পয়গাম্বরদের মারফত যে ব্যাপক জীবন ব্যবস্থা (الدين) তিনি নাযিল করেছেন, তা অনুসরণ করাই মানুষের পক্ষে একান্তভাবে কর্তব্য।
এখন দু’টি সিদ্ধান্ত আমাদের সামনে উপস্থিতঃ একটি মানুষের যাবতীয় শক্তি সামর্থ এবং তার জ্ঞান লাভের সমগ্র উপায়-উপাদানের বিশ্লেষণ করার পর লাভ হয়েছে আর অন্যটি পাচ্ছে কুরআনের সিদ্ধান্ত। এখন দুনিয়ার মানুষের পক্ষে হয় কুরআনের বাণী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, নতুবা তাকে এমন এক নৈরাশ্যের অন্ধকারাচ্ছন্ন গহ্বরে নিক্ষিপ্ত হতে হবে, যেখানে আশার কোনো আলোক রেখাই বিচ্ছুরিত হয় না। ‘আদ্-দীন’ বা জীবন ব্যবস্থা লাভের জন্য মানুষের সামনে যদি দু’টি উপায় থাকতো এবং যদি প্রশ্ন করা হতো যে, মানুষ এ দু’টির কোন্টিকে গ্রহণ করবে তবে অবশ্য অনেক সুবিধা ছিলো। মূলত এখানে মোটেই সেই ব্যাপার নয় সে প্রশ্নও এখানে নয়।
এখানে আসল ব্যাপার এই যে, পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা (الدين) মানুষ কেবল একটি উপায়েই লাভ করতে পারে। এখন মানুষের সামনে এ প্রশ্ন মাথা জাগিয়ে উঠেছে যে, মানুষ এই একমাত্র উপায়ের সাহায্যে প্রাপ্ত জীবন গ্রহণ করবে, না এই একমাত্র পন্থার আশ্রয় অস্বীকার করে জাহেলিয়াত ও নিরুদ্দেশের অন্ধকারে জীবন-যাপনের সিদ্ধান্ত করবে? এ দু’টি পথের যে কোনো একটিকে মানুষ অনায়াসেই গ্রহণ করতে পারে তাকে এতোটুকু স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে মাত্র।
কুরআনের যুক্তি
এই পর্যন্ত যতোকিছু আলোচনা করা হয়েছে, তা হতে আমরা শুধু এ সিদ্ধান্তই লাভ করতে পারি যে, কুরআনের দাবি এবং তার প্রদর্শিত পথ গ্রহণ না করে মানুষের সর্বকালীন কল্যাণ লাভের জন্য কোনো উপায় নেই। অন্য কথায় বলা যায়, “কাফের হওয়ার তো উপায় নেই, কাজেই বাধ্য হয়ে মুসলমান হও।” কিন্তু কুরআন নিজের দাবির সত্যতা সম্পর্কে যেসব যুক্তি প্রমাণ উপস্থিত করেছে, তা এ বাধ্যতামুলক পরিস্থিতির অনেক উর্ধ্বে তা অনেক সারগর্ভ ও অকাট্য। কুরআন মানুষকে ঠেকে মুসলমান হতে বলেনি। তার পরিবর্তে সে মানুষকে নিজ ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় মুসলমান হবার উৎসাহ দিয়েছে। কুরআনের যুক্তিগুলোই মানুষের মনে এ আগ্রহের সঞ্চার করে। কুরআনের এ সম্পর্কীয় প্রমাণগুলোর মধ্যে নিম্নলিখিত চারটি অত্যন্ত বলিষ্ঠ যুক্তি। এজন্য চারটিকেই বারবার উল্লেখ করা হয়েছে।
একঃ মানুষের জন্য ইসলামই একমাত্র সঠিক জীবন ব্যবস্থা। কারণ এটাই প্রকৃত তত্ত্ব এবং আসল সত্যের অনুরূপ। এছাড়া অন্য সব পন্থা প্রকৃত সত্যের সম্পূর্ণ বিরোধী।
اَفَغَيۡرَ دِيۡنِ اللّٰهِ يَبۡغُوۡنَ وَلَهٗۤ اَسۡلَمَ مَنۡ فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّكَرۡهًا وَّاِلَيۡهِ يُرۡجَعُوۡنَ.
“এরা কি আল্লাহ তাআলার দীন (জীবন ব্যবস্থা) ছাড়া অন্য কোনো পন্থা পেতে চায়? অথচ আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা সবই ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, সেই এক আল্লাহরই সামনে নত হয়ে আছে এবং শেষকালে সকলকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে ।” (সূরা আলে ইমরানঃ ৮৩)।
দুইঃ মানুষের জন্য এটাই একমাত্র সঠিক এবং নির্ভুল জীবন ব্যবস্থা, কারণ এটাই একমাত্র সত্য। সূক্ষ্নভাবে বিচার করে দেখলে এছাড়া কোনো পন্থাই নির্ভুল ও খাঁটি হতে পারে না।
اِنَّ رَبَّكُمُ اللّٰهُ الَّذِىۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ فِىۡ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰى عَلَى الۡعَرۡشِ يُغۡشِىۡ الَّيۡلَ النَّهَارَ يَطۡلُبُهٗ حَثِيۡثًاۙ وَّالشَّمۡسَ وَالۡقَمَرَ وَالنُّجُوۡمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمۡرِهٖۤؕ اَلَا لَهُ الۡخَلۡقُ وَالۡاَمۡرُؕ تَبَارَكَ اللّٰهُ رَبُّ الۡعٰلَمِيۡنَ.
“প্রকৃতপক্ষে তোমাদের ‘রব’ মালিক ও বাদশাহ হচ্ছেন আল্লাহ তাআলা, যিনি আকাশ ও পৃথিবীকে কালের দু’টি অধ্যায়ে সৃষ্টি করেছেন এবং তার পর তিনি নিজ ‘সিংহাসনে’ আরোহন করেন। তিনি দিনকে রাতের পোশাক পরিয়ে দেন এবং তার পর রাতের পশ্চাতে দিন খুব দ্রুত গতিতে চলে আসে। সূর্য, চন্দ্র এবং নক্ষত্র সবকিছুই তাঁর অধীন ও অনুগত। শুনে রাখ, সৃষ্টি তাঁরই এবং আইন শাসনও কেবল তাঁরই চলবে। সারা জাহানের ‘রব’ আল্লাহ বড়ই মহান।” (সূরা আল আরাফঃ ৫৪)।
তিনঃ মানুষের পক্ষে এ পন্থাই ঠিক পন্থা, এটাই খাঁটি পথ। সমগ্র সত্য সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞান কেবল আল্লাহ তাআলারই থাকতে পারে এবং নির্ভুল বিধানও কেবল তিনিই দিতে পারেন।
اِنَّ اللّٰهَ لَا يَخۡفٰى عَلَيۡهِ شَىۡءٌ فِىۡ الۡاَرۡضِ وَلَا فِىۡ السَّمَآءِؕ.
“বস্তুত আকাশ ও পৃথিবীর কোনো জিনিসই আল্লাহর অগোচরে নয়।” (সূরা আলে ইমরানঃ ৫)
يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ اَيۡدِيۡهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۚ وَلَا يُحِيۡطُوۡنَ بِشَىۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَۚ
“তিনি মানুষের সম্মুখে যা আছে তাও জানেন, আর যা তাদের অগোচরে ও অজ্ঞাত তাও তিনি জানেন। মানুষ তার জ্ঞানকে কোনোক্রমেই আয়ত্ত করতে পারে না। অবশ্য আল্লাহ নিজেই যদি কোনো জ্ঞান মানুষকে দান করেন, তবে সেই কথা স্বতন্ত্র।” (সূরা আল বাকারাঃ ২২৫)।
قُلْ إِنَّ هُدَى اللّهِ هُوَ الْهُدَىَ.
“হে নবী! বলে দাও যে, আল্লাহর হেদায়াতই মানুষের জন্য একমাত্র সত্য পথ নির্দেশকারী বিধান।” (সূরা আল আনআমঃ ৭১)।
চারঃ মানুষের জন্য এটাই একমাত্র সঠিক পথ। যেহেতু এ পথ ছাড়া প্রকৃত সুবিচার স্থাপন সম্ভব নয়। এটা ছাড়া অন্য যে পথেই মানুষ চলবে একদিন না একদিন তা যুলুমেই রূপান্তরিত হবে।
ومن يتعد حدود الله فاولئك هم الظلمون .
“যারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমালংঘন করে, তারাই যালেম।”
وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ .
“যারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসারে নিজেদের যাবতীয় কাজ-কর্মের ফায়সালা করে না, তারাই যালেম।” (সূরা আল মায়েদাঃ ৪৫)।
কুরআনের এসব যুক্তি-প্রমাণের ভিত্তিতে আল্লাহর সম্মুখে মাথা নত করা এবং তাঁর নিকট প্রাপ্ত বিধান অনুসারে জীবন-যাপন করাই প্রত্যেকটি জ্ঞানী লোকের কতর্ব্য।
একঃ মানুষের জন্য ইসলামই একমাত্র সঠিক জীবন ব্যবস্থা। কারণ এটাই প্রকৃত তত্ত্ব এবং আসল সত্যের অনুরূপ। এছাড়া অন্য সব পন্থা প্রকৃত সত্যের সম্পূর্ণ বিরোধী।
اَفَغَيۡرَ دِيۡنِ اللّٰهِ يَبۡغُوۡنَ وَلَهٗۤ اَسۡلَمَ مَنۡ فِىۡ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّكَرۡهًا وَّاِلَيۡهِ يُرۡجَعُوۡنَ.
“এরা কি আল্লাহ তাআলার দীন (জীবন ব্যবস্থা) ছাড়া অন্য কোনো পন্থা পেতে চায়? অথচ আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা সবই ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, সেই এক আল্লাহরই সামনে নত হয়ে আছে এবং শেষকালে সকলকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে ।” (সূরা আলে ইমরানঃ ৮৩)।
দুইঃ মানুষের জন্য এটাই একমাত্র সঠিক এবং নির্ভুল জীবন ব্যবস্থা, কারণ এটাই একমাত্র সত্য। সূক্ষ্নভাবে বিচার করে দেখলে এছাড়া কোনো পন্থাই নির্ভুল ও খাঁটি হতে পারে না।
اِنَّ رَبَّكُمُ اللّٰهُ الَّذِىۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ فِىۡ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰى عَلَى الۡعَرۡشِ يُغۡشِىۡ الَّيۡلَ النَّهَارَ يَطۡلُبُهٗ حَثِيۡثًاۙ وَّالشَّمۡسَ وَالۡقَمَرَ وَالنُّجُوۡمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمۡرِهٖۤؕ اَلَا لَهُ الۡخَلۡقُ وَالۡاَمۡرُؕ تَبَارَكَ اللّٰهُ رَبُّ الۡعٰلَمِيۡنَ.
“প্রকৃতপক্ষে তোমাদের ‘রব’ মালিক ও বাদশাহ হচ্ছেন আল্লাহ তাআলা, যিনি আকাশ ও পৃথিবীকে কালের দু’টি অধ্যায়ে সৃষ্টি করেছেন এবং তার পর তিনি নিজ ‘সিংহাসনে’ আরোহন করেন। তিনি দিনকে রাতের পোশাক পরিয়ে দেন এবং তার পর রাতের পশ্চাতে দিন খুব দ্রুত গতিতে চলে আসে। সূর্য, চন্দ্র এবং নক্ষত্র সবকিছুই তাঁর অধীন ও অনুগত। শুনে রাখ, সৃষ্টি তাঁরই এবং আইন শাসনও কেবল তাঁরই চলবে। সারা জাহানের ‘রব’ আল্লাহ বড়ই মহান।” (সূরা আল আরাফঃ ৫৪)।
তিনঃ মানুষের পক্ষে এ পন্থাই ঠিক পন্থা, এটাই খাঁটি পথ। সমগ্র সত্য সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞান কেবল আল্লাহ তাআলারই থাকতে পারে এবং নির্ভুল বিধানও কেবল তিনিই দিতে পারেন।
اِنَّ اللّٰهَ لَا يَخۡفٰى عَلَيۡهِ شَىۡءٌ فِىۡ الۡاَرۡضِ وَلَا فِىۡ السَّمَآءِؕ.
“বস্তুত আকাশ ও পৃথিবীর কোনো জিনিসই আল্লাহর অগোচরে নয়।” (সূরা আলে ইমরানঃ ৫)
يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ اَيۡدِيۡهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۚ وَلَا يُحِيۡطُوۡنَ بِشَىۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَۚ
“তিনি মানুষের সম্মুখে যা আছে তাও জানেন, আর যা তাদের অগোচরে ও অজ্ঞাত তাও তিনি জানেন। মানুষ তার জ্ঞানকে কোনোক্রমেই আয়ত্ত করতে পারে না। অবশ্য আল্লাহ নিজেই যদি কোনো জ্ঞান মানুষকে দান করেন, তবে সেই কথা স্বতন্ত্র।” (সূরা আল বাকারাঃ ২২৫)।
قُلْ إِنَّ هُدَى اللّهِ هُوَ الْهُدَىَ.
“হে নবী! বলে দাও যে, আল্লাহর হেদায়াতই মানুষের জন্য একমাত্র সত্য পথ নির্দেশকারী বিধান।” (সূরা আল আনআমঃ ৭১)।
চারঃ মানুষের জন্য এটাই একমাত্র সঠিক পথ। যেহেতু এ পথ ছাড়া প্রকৃত সুবিচার স্থাপন সম্ভব নয়। এটা ছাড়া অন্য যে পথেই মানুষ চলবে একদিন না একদিন তা যুলুমেই রূপান্তরিত হবে।
ومن يتعد حدود الله فاولئك هم الظلمون .
“যারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমালংঘন করে, তারাই যালেম।”
وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ .
“যারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসারে নিজেদের যাবতীয় কাজ-কর্মের ফায়সালা করে না, তারাই যালেম।” (সূরা আল মায়েদাঃ ৪৫)।
কুরআনের এসব যুক্তি-প্রমাণের ভিত্তিতে আল্লাহর সম্মুখে মাথা নত করা এবং তাঁর নিকট প্রাপ্ত বিধান অনুসারে জীবন-যাপন করাই প্রত্যেকটি জ্ঞানী লোকের কতর্ব্য।
0 comments: