আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন ছুটি চলছে । সব সাথী-কর্মীরা নিজ নিজ বাড়িতে । এমন সময় শিশির ভাই সদস্য বৈঠকে বললেন , দেশের কয়েকটি এলাকায় দায়িত্বশীলেরা সফরে যাবেন । এতে কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারনে যে দূরত্বটুকু তৈরী হয়েছে তা ঘুচে যাবে । সেই হিসেবে তখনকার সভাপতি যুবায়ের ভাইয়ের সাথে আমিও গেলাম রাজশাহীতে ।
রাজশাহীতে যাব, ভেবেই অদ্ভূত আনন্দ লাগছিলো । আমার সাংগঠনিক জীবনের প্রথম আলোড়ন তুলেছিলো রাবি শিবিরের রক্তাক্ত মতিহার বইটি । রক্তাক্ত মতিহারের প্রতিটি শিবির কর্মীর শাহাদাতের ইতিহাস সেই যে স্কুল জীবনে মনের গভীরে গেঁথে গেছে আর মুছতে পারিনি ।
রাতে কলাবাগান থেকে গাড়িতে উঠলাম । খুব ভোরে যেখানে নামলাম, যায়গাটা আমার অতি অতি পরিচিত বিনোদপুর । কত যে শুনেছি এর নাম !
ঘোরের মধ্যে তখন অনেকটা । কে যে আমাদের এগিয়ে নিতে এসেছিলেন, এখন মনে পড়ছেনা । যতদূর মনে হয় , নোমানী ভাই আর ফরহাদ আলম ভাই । আমরা ......(কি নামের যেন একটা স্কলার ফাউন্ডেশন আছে) এসে পৌছুলাম ২ মিনিটেই । যুবায়ের ভাই বললেন বিশ্রাম নিতে । আমি বাসে ঘুমিয়েছি , ঘুমাতে ইচ্ছা করছিলোনা, তবুও ঘুমিয়ে পড়লাম ।
৯ টার দিকে ফ্রেশ হয়ে রেডী হতেই বুঝতে পারলাম , সেক্রেটারী নোমানী ভাই যুবায়ের ভাইকে সঙ্গ দেবেন আর তখনকার বায়তুলমা'ল সম্পাদক ফরহাদ ভাই আমাকে নিয়ে শহরে ঘুরবেন বলে সাইদী ভাই ঠিক করে দিয়েছেন ।
আমরা সবাই মিলে প্রথমে গেলাম কোর্টে । সেদিন মিথ্যা মামলার আসামী সালেহী ভাইকে কোর্টে হাজির করা হবে । সালেহী ভাইকে দেখলাম কোর্টে গিয়ে । কোর্ট থেকে ফেরার পথে গেলাম হারিয়ে । যাই হোক, ফরহাদ ভাই আমাকে খুজে বের করলেন ।
এরপর রাজশাহী মহানগরী অফিসে । দুপুরের খাওয়া আমাদের এক সাথী সোহেলদের বাসায় । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার রাজশাহী এলাকার প্রায় সবাই এসেছে ।
বিকেলবেলায় আমরা নিজেরা নিজেরা গেলাম পদ্মার তীরে ।
সন্ধ্যার পর শুরু হলো রাবি ক্যাম্পাস ভ্রমণ ।
হ্যা...................................
নোমানী ভাইয়ের শরীরের ঘ্রান এ নাকে এসেছিলো তখন । হোন্ডায় আমরা তিনজন পুরো ক্যাম্পাস ঘুরলাম । নোমানী ভাই একে একে পরিচয় করিয়ে দিলেন ছাত্রশিবিরের রক্তাক্ত ইতিহাসের সাথে জড়িত ঐতিহাসিক স্থানগুলো । একে একে কয়েকটা হলে গিয়ে হলের ভাইয়াদের সাথে পরিচিত হলাম ।
নোমানী ভাই যেখানেই যাচ্ছেন , হলের দারোয়ান নোমানী ভাইকে এগিয়ে দিচ্ছেন সঙ্গে করে । আর গর্বভরে আমাদের দুজনকে শুনানোর চেষ্টা করছেন রাবি শিবিরের প্রতি তাদের আস্থা আর ভালোবাসার কথা । কে কত বছর ধরে এখানে শিবির দেখে আসছেন, সেই ফিরিস্তিও দিচ্ছেন কেউ কেউ ।
বেশ কয়েকজন ভাইয়া লিচু খাওয়ালেন । জানলাম , এখানের লিচু পেড়ে সমান ভাগ করে প্রতিটি ছাত্রদেরকে দেয়া হয় ।
আমরা ফিরলাম রাত নটার দিকে । হল থেকে বেরিয়ে নোমানী ভাই হোন্ডায় স্ট্যার্ট দিয়ে ঘুরাতেই তিনজনই পড়ে গেলাম । মাত্র স্টার্ট হয়েছে তাই তেমন কিছু হলোনা । নোমানীভাই নীচে, তার গায়ের ওপরে হোন্ডা । বোকা আমি হোন্ডাটা সরিয়ে দিলেই উনি উঠতে পারেন । তা না করে নোমানী ভাইয়ের দুহাত ধরে টানতে লাগলাম । আহা ... ঘন দাড়িওয়ালা আমার প্রিয় ভাইয়াটা । তুমি শহীদ হয়ে গেছো !
ঢাকার মেহমানদের জন্য স্কলারস ফাউন্ডেশনে ব্যাপক খাবারের আয়োজন । আমি , যুবায়ের ভাই, ফরহাদ ভাই , নোমানী ভাই , সাইদী ভাই ..খেলাম । এরপর পাশের রুমে বসে নানা গল্প করতে করতে সাড়ে এগারোটার মত বেজে গেলো । নোমানী ভাই ই ফোন করে টিকেটের ব্যবস্থা করে রেখেছেন । রাত ১২ টার দিকে আমাদেরকে বিনোদপুর বাস স্টেশনে নিয়ে এলেন নোমানী ভাই । দুমিনিটের মধ্যে বাস চলে এলো ।
আমার চোখের সামনে ভাসছে এখনো নোমানী ভাইয়ের সাথে সেই সময়টা । বাস সামনে সাঁই করে চলে গেলো আর উনি তাকিয়ে রইলেন আমাদের গতির দিকে ....
শহীদ নোমানী ভাইয়া , আল্লাহর কসম , জান্নাতের সিঁড়িতে বসে তুমি খুব শিঘ্রী দেখতে পাবে, তোমার রক্তের সুগন্ধি কত দ্রুত এই বাংলার ছাত্রদেরকে ইসলামের আলোকিত রাজপথে তুলে নিয়ে আসছে পরম মমতায় .....! তোমার প্রতিফোঁটা রক্তের বদলায় বাংলার সবুজ জমীনে তোমার সাথীরা আরো দৃঢ় পদক্ষেপে দ্বীন কায়েমের পথে এগিয়ে যাবে নির্ভিকভাবে ! ...
ভিডিও : চেতনার সেনানী (শহীদ শরীফুজ্জামান নোমানী) Part-1
ভিডিও : চেতনার সেনানী (শহীদ শরীফুজ্জামান নোমানী) Part-2
ভিডিও : Speech of C.P before Janajah Of Shaheed Shorifuzzaman Nomani
যেমন ছিলেন তিনি.....সহকর্মীদের ভাষ্যে...
লেখক : http://www.somewhereinblog.net/blog/shundorblog/28923950
7 comments:
ওমর হাসান আল জাহিদ বলেছেন: হল দখলের রাজনীতি করে কোন ধরনের শান্তির ধর্ম ইসলাম কায়েম করছে শিবির? হল দখল করতে গিয়ে যদি কেউ মারা যায়, তাহলে তাকে যে শহীদ বলে, তা জানতাম না। আপনাদের কাছ থেকে শিখলাম।
ব্রেন ওয়াশ কাহাকে বলে, আপনি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
লেখক বলেছেন: শহীদ শরিফুজ্জামান নোমানী ভাই কিভাবে শহীদ হলেন , আশা করি এতক্ষণে জানতে পেরেছেন । হল দখলের রাজনীতি ইসলামী ছাত্রশিবির কখনো করেনাই , করবেও না । একটা ঘরের ৪ জন সদস্য, সবাই যদি শিবির হয়ে যায় , সবাই যদি শিবিরের অনুপম আদর্শ আর চরিত্র মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে শিবিরের শুভাকাংখী হয়ে যায়, তাহলে ওই ঘরটা শিবিরের ঘর বলেই পরিচিত হয় । লক্ষ্য করুন , ওই ঘরটা ঘরের মালিকদের ই আছে , শুধু ঘরের মালিকদের মন-মানসিকতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন চলে এসেছে । শিবিরের কোন নেতা বা কর্মী বাইরে থেকে কাউকে ওই ঘরে ঢুকায়নি । ওই ঘরের বাসিন্দাদেরকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে নিজেদের আত্মীয়-বন্ধু কাউকে নিয়ে আসেনি , খুব সিম্পল যে কাজটা করেছে, তা হলো, ওই ঘরের বাসিন্দাদেরকেই শিবির বানিয়ে ফেলেছে । এটা হল দখল না, মানুষের মন দখল । সাধ্য থাকে, করে দেখান এটা !!
১১ মার্চ ছিলো ইসলামী ছাত্রশিবিরের জন্য শহীদ দিবস । ৮২-র এই দিনে ছাত্রশিবিরের চারজন কে শহীদ করা হয় । এ উপলক্ষ্যে রাবিতে শিবির আয়োজিত সমাবেশে ছাত্রলীগ তাদের মিছিল নিয়ে হামলা করে ।
সব হিসাব বাদ দিলাম , একটা সংগঠন তাদের "নিহত" কর্মীদের স্মরণে সমাবেশ করছে । সেই সমাবেশে অন্য সংগঠন থেকে মিছিল নিয়ে আক্রমন করাটা কি সন্ত্রাস না ?
এই ঘটনার পরদিন শিবিরের রাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সহ বেশ কয়েকজনকে আটকে রেখে মারপিট করে ছাত্রলীগ । একটা দলের শীর্ষ পর্যায়ে নেতা এই খবর শুনে ভাইয়ের চাইতে প্রিয় কর্মীদের- সহচরদের উদ্ধার করতে যাবে না ?
নোমানী ভাই প্রথমে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেন "বন্দী" কর্মীদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে । কিন্তু আওয়ামী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের নির্দেশে পুলিশ কিছুই করতে পারেনি । ভাইদেরকে মেরে ফেলতেছে, প্রসাশন তাদের উদ্ধার করতে অপারগ, এই অবস্থায় নেতা ছুটে যাবেন না , তাদেরকে উদ্ধার করতে ?
নোমানী ভাইয়ের শেষ সময়টা কেমন ছিলো ? পুলিশ, ছাত্রলীগের স্বশস্ত্র আক্রমনের মুখে শিবির কর্মীরা যখন পিছু হটছিলো, প্রত্যেকটা কর্মী নিরাপদে চলে গেছে - আর তাদের নেতা তখনো অপেক্ষা করছেন, সবশেষ কর্মীটিকে দেয়াল পার করিয়ে দিতে ?
এই সময় ছাত্রলীগের খুনীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ।
ভাবতে পারেন এটা কিভাবে সম্ভব ? কর্মীদের প্রতি কতটা দায়িত্বশীলতা , কতটা ভালোবাসা থাকলে এমন অবস্থায় নিজে সরে না গিয়ে প্রত্যেককে সরানোর জন্য সবটুকু সময় ব্যয় করতে পারেন !
ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রঅঙ্গনে ইসলামের দাওয়াতের কাজ করে । শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতা-মুল্যবোধ ও চরিত্রগঠনের উপাদান সংযোজন করার আন্দোলন করে । ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে ।
নোমানী ভাইএর অসাধারন কুরআন তেলাওয়াত শুনে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ ভাই তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছিলেন । নোমানী ভাই নিয়মিত নামাজের ইমামতি করতেন ।
ইসলামী আন্দোলনের পথে থাকা অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সা অনেক সাহাবীর অসুস্স্থতাজনিত মৃত্যুতেও শাহাদাতের সুসংবাদ দিয়েছেন, আর ইসলামী আন্দোলনের এমন অসাধারন একজন নেতা, একজন ক্বারী, একজন মেধাবী ছাত্র, সবস্তরের মানুষের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয় একজন নোমানী ভাই যিনি নিহত হয়েছেন পুরোপুরি ইসলাম-বিরোধী শক্তি ছাত্রলীগের খুনীদের হাতে , যিনি সুনিশ্চিতভাবে পার্থিক-ব্যক্তিগত কোন স্বার্থের জন্য নিহত হন নি, তাকে শহীদ বলার যৌক্তিকতা না বুঝে থাকলে কুরআন থেকে শাহাদাত সম্পর্কিত আয়াত আর হাদীসে রাসুল থেকে সাহাবাগনের শাহাদাতে ঘটনাগুলো আরেকবার জেনে নেবেন ।
হাসান তারেক বলেছেন: উনি শহীদ কেম্নে হলেন????দেশের জন্নে হল দখল করে মারা গেশেন নাকি?? কথায় কথায় শহীদ বলা বন্ধ করেন.।।পুরাই ফাউল.।.।.।.।।।
লেখক বলেছেন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটা অন্ধকার সময় ছিলো, আপনি যদি তখন সেখানে থাকতেন, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারতেন না । তাবলীগের ভাইদের কাজ ও নিরাপদ ছিলোনা । তখন ছিলো ছাত্রমৈত্রীর দাপট । নামাজী যেকোন ছাত্র নির্যাতিত হত । অনেক ছাত্র ভয়ে মসজিদে না গিয়ে রুমের ভেতরে নামাজ পড়তো ।
আপনি হয়তো একজন সাধারন মুসলমান হিসেবে আপত্তি তুলেছেন, এজন্য মুসলমানদের সাধারন পরিচয়, বেসিক পরিচয় যা যেকোন মানুষ ই জানে, সেই নামাজের উদাহরন দিলাম ।
কিন্তু সত্যি কথা হলো, মুসলমানদেরকে আল্লাহ শুধু নামাজ পড়ার দায়িত্ব দেন নি । মুসলমানদের দায়িত্ব হচ্ছে, আমল বিল মা'রূফ, নেহি আনিল মুনকার- সৎ কাজের আদেশ দেয়া, অসৎ কাজ হতে সবাইকে দূরে রাখা । এটা আল্লাহর সরাসরি নির্দেশ- সুরা আল ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াত পড়ে নেবেন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ কায়েমের প্রাথমিক দায়িত্বটুকুর কথা বাদ দিলাম, আপনি জাবি আর রাবির পরিবেশের একটু তুলনা করেন প্লিজ !!!!!! খোলামনে ভাবুন, এই দুটো জায়গার আকাশ-পাতাল পার্থক্য ।
কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ তুলনামুলক স্বস্তিকর ? কোনখানে অন্যায়-অশালীনতার চর্চা কম হয় ? কোনখানে সৎ কাজ (ছাত্রদের বিনামুল্যে বই, নোট দেয়া, বৃত্তি দেয়া, ভালো আচরন করা ,............) বেশি হয় ? কোনখানে অসৎ (টেন্ডারবাজী , নিরীহ ছাত্রদের নির্যাতন , ছেলে-মেয়েদের অশালীন উদ্ধ্যত মেলামেশা....................)কাজ হতে বাধা দেয়া বেশি হয় ?
ভাবতে পারছেন ? নাকি মনটা মানা করছে ভাবতে ????
প্লিজ ভাবুন ।
এগুলো কি ইসলামের শিক্ষা না ??????????
ইসলামের সপক্ষে এই যে অর্জন, রাবিকে আবার এক অসভ্য জাবিতে পরিনত করার চেষ্টাকে বাধা দিতে গিয়ে যদি কেউ জীবন দিয়ে দেয়, সে কি এই অর্জনগুলো, এই ইসলামী পরিবেশ রক্ষার চেষ্টায় তার জীবন দিলোনা ? সে কি খুব মোটা দাগে হল দখল রাখতে জীবন দিলো ? খোলা মনে ভাবুন, আবারো বলি । রাবি আর জাবির পার্থক্য, শুধু একটা ব্যাপার ভাবুন ।
মদীনায় একবার যখন ইসলামের বিধান আর নিয়মভিত্তিক পরিবেশ আল্লাহর নবী সা: প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছিলেন, কুরাইশদের শত চেষ্টায়ও সেই মদীনা আর মক্কার কুফরী পরিবেশে পরিনত হতে পারেনি , যত সাহাবী এজন্য জীবন দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকে শহীদ । ইসলামী ছাত্রশিবির রাসুল সা: এর সাহাবীদের অনুসারী । এজন্য যে যা বলে বলুক, উই ডোন্ট কেয়ার । আল্লাহ জানেন আমাদের নিয়্যত । সামান্যতম পার্থিব ব্যক্তি স্বার্থেও আমরা এই আন্দোলনে জড়াইনি !
নোমানী ভাই অবশ্যই শহীদদের সব গুনাবলী অর্জন করছিলেন । তার সাথীরা স্বাক্ষী ! বাকিটুকু আল্লাহ জানেন । দোয়া করছি, আল্লাহ নোমানী ভাইয়ের শাহাদাত কবুল করে নেন ।
আপনার জন্য পরামর্শ : এই পোষ্টের কয়েকটা কমেন্টে শাহাদাত সম্পর্কিত কিছু কথা বলেছি , সেগুলো মন দিয়ে পড়বেন এবং অবশ্যই কুরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করবেন, অন্তত একবারের জন্য হলেও ।
মাহমুদ রহমান বলেছেন: আল্লাহর পথে যারা দিয়েছে জীবন
তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না, বলো না মৃত।
ওরা তো চায় নিকো আয়েশি জীবন, ওরা তো চায় নিকো জুলুম শোষণ।
আল্লাহর এই পৃথিবীতে তারা চেয়েছিল এক আল্লাহরই শাষণ।
তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না।
লেখক বলেছেন: যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে , তাদেরকে কোন অবস্থাতেই মৃত বলোনা , বরং তারা জীবিত, তাদের মালিকের পক্ষ হতে রিযিকপ্রাপ্ত হয় ।
আল্লাহতায়ালা নিজ অনুগ্রহ দিয়ে তাদের যা কিছু দান করেছেন , তাতেই তারা পরিতৃপ্ত এবং যারা এখনো তাদের পেছনে রয়ে গেছে , যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হতে পারেনি , তাদের ব্যাপারেও এরা খুশি, কেননা এমন ধরনের লোকদের জন্য কোনো ভয় নেই এবং তারা উৎকণ্ঠিতও হবেনা - আল ইমরান : ১৬৯-১৭০
যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত বলোনা, বরং তারা জীবিত, যদিও এ ব্যাপারে তোমরা কিছু জানোনা - বাকারা:১৫৪
ভাঙ্গা পেন্সিল বলেছেন: রাজনীতি করতে গিয়ে আর পিটাপিটি করতে গিয়ে মারা গেলে কি শহীদ হয়?
লেখক বলেছেন: ইসলামী রাজনীতি (ইসলামী আন্দোলন-আরবী: জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ) করার কারনে যখন কাউকে হত্যা করা হয়, তাদেরকে শহীদ বলা হয় । অকারনে খুব ভালো একজন সাধারন মুসলমানকে-ও যদি হত্যা করা হয়, শাহাদাতের ক্রাইটেরিয়ায় তিনিও শহীদ । নোমানী ভাই নিজ এলাকা এবং রাবিতে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন । খুব কম মানুষ ই ছিলো যারা তাকে পছন্দ করতে পারত না । খুব ভদ্র আর নম্র স্বভাবের ছিলেন । সুন্দর কন্ঠের ক্বারী ছিলেন.... সবচেয়ে বড় ব্যাপার, তিনি এই জনপদে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের "কর্মী" ছিলেন ।
...তাদের রব তাদের আহবানে সাড়া দিলেন যে , আমি তোমাদের কোন আমল কখনো বিনষ্ট করবো না, পুরুষ হোক -মহিলা হোক নির্বিশেষে তোমরা তো একে অপরের ই অংশ , অতএব যারা নিজেদের মাতৃভূমি ছেড়ে হিজরত করেছে, এবং যারা নিজেদের জন্মভূমি থেকে বিতারিত হয়েছে , আমার ই পথে যারা নির্যাতিত হয়েছে, যারা লড়াই করেছে এবং জীবন দিয়েছে- আমি এদের গুনাহসমূহ মাফ করে দেব । অবশ্যই আমি এদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবো, যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত থাকবে । এ হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার দেয়া পুরস্কার । আর আল্লার কাছেই তো রয়েছে উত্তম পুরস্কার । - আল ইমরান : ১৯৫
নুরুল আফছার বলেছেন: ঘটনাটা দুঃখজনক।আমি সমব্যথি।কিন্তু শহিদ হওয়ার ব্যপারটা অত সোজা না।ইসলাম আর জামাত এক কথা না।ইসলামের তরে জামাত না, জামাতের তরে ইসলাম।
লেখক বলেছেন: হ্যা, শহীদ হবার ব্যাপারটা আল্লাহ ই নির্ধারন করে দিয়েছেন । দ্বীন কায়েমের পথে যারা নিহত হয়, তারাই শহীদ । শাহাদাতের মৃত্যু সবচেয়ে সৌভাগ্যের-সবচেয়ে মর্যাদার ।
ইসলামের তরে "জামাত" কিনা, সে তর্কে যাওয়ার ইচ্ছা নাই, তবে ইসলামের জন্য জামাতবদ্ধ (..জামাত নামের দলটি নয় , জামাত= সংঘবদ্ধ হওয়া) হওয়া আল্লাহর সরাসরি নির্দেশ ।
তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে শক্তকরে আকড়ে ধরো এবং পরস্পর কখনো বিচ্ছিন্ন হয়োনা । - আল ইমরান: ১০৩
আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে পছন্দ করেন, যারা তার পথে এমনভাবে সারিবদ্ধ হয়ে লড়াই করে, যেন তারা সীসা-ঢালা প্রাচীর । - আস-সফ : ০৪
হারেসুল আশয়ারী রা: থেকে বর্নিত হাদীসে রাসুল সা: পাচটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন
১. জামায়াতবদ্ধ হবে (..সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া..)
২. নেতার আদেশ মনোযোগ দিয়ে শুনবে
৩. তার আদেশ মেনে চলবে
৪. আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ বর্জন করবে
৫. আল্লাহর পথে লড়াই করবে ।
................যে ব্যক্তি ইসলামী সঙ্গঠন থেকে এক বিঘৎ দূরে সরে গেলো, সে নিজের গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলল ।
....যে ব্যক্তি জাহেলিয়াতের নিয়ম-নীতির দিকে লোকদেরকে ডাকবে, সে জাহান্নামের জ্বালানী হবে - যদিও সে রোযা রাখে, নামাজ পড়ে এবং নিজেকে মুসলমান বলে মনে করে । আহমদ-তিরমীজী ।
[এই পুরোটা এক ই হাদীস । ভেবে দেখুন, সঙ্ঘবদ্ধ জীবনযাপন ইসলামে কতটা গুরুত্বপূর্ণ । নামাজ পড়ে -রোজা রেখে মুসলমান বলে মনে করার পরেও কি জাহান্নামের জ্বালানী হতে চায় কেউ ? এই হাদীসের জামাত মানে হলো ইসলামী সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হওয়া , ছাত্রশিবিরকে বহুদিন ধরে চিনি-জানি, এই সংগঠন ই এইদেশে ইসলামী আন্দোলনের সবচেয়ে সক্রিয় এবং কুরআন ও রাসুল-জীবনী মেনে চলা সংগঠন , আমাদের ভালো না লাগলে অন্য কোন ইসলামী সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হন, তবুও একাকী থাকতে পারবেন না, পারবেন না কোন সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের দলভুক্ত হতে - এই হাদীস অনুযায়ী ]
তিথী ও টাটা বলেছেন: ভাইরে এখানে কোরানের আয়াতগুলো যা দিয়েছের তা সবই ঠিক আছে কিন্তু শিবির আপনাদের ব্রেনটা এমন ভাবে ওয়াশ করে দিচ্ছে যে,আপনাদের মনে হচ্ছে,শিবিরের রাজনীতিই একমাত্র আল্লাহর পথ!! আমি জানি আপনারা আমার সাথে একমত হবেন না কারন, ব্রেন ওয়াশ!! আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের ভন্ডামির কারনে আপনাদের মত হাজার ছেলে,ছাত্ররা শিবিরকে ভাল মনে করে ওদের ফাদে পা দিচ্ছে। এর কারন দেশে ভাল রাজনীতিবিদ বা, ভাল লিডারশিপের আভাবে আপনাদের মত হাজারো ছেলে শিবির হয়ে যাছ্ছে । এটা আমাদেরই ব্যর্থতা। তর্কের খাতিরে তর্ক করা যাবে কিন্তু একদিন সময়ই বলে দিবে শিবের রাজনীতি ইসলামের নামে একটা ভন্ডামি ছিল।
কোন দলকে ভাল না লাগলে কেন শিবির করতে হবে?? যে ছেলেটা আজ মারা গেল আপনাদের দল কি তাকে ফিরিয়ে দেতে পারবে? কেন আমরা আজ আমরা ভাই হেয়ে ভাইকে মারছি??
ছাত্ররা যদি রাজনীতি করতে চায় করুক কিন্তু কেন এটা শিক্ষাঙ্গনে করতে হবে?? বিশ্ববিদ্যালয়তো শুধু পড়ালেখার জায়গা,তাই না ??
লেখক বলেছেন:
ব্রেনওয়াশ ?
- আমাদের ব্রেনওয়াশ যেভাবে করা হয়
শিবিরের রাজনীতিই একমাত্র আল্লাহর পথ!! ?
- আপাতত । কারন , শিবির ছাড়া আল্লাহর পথ আর কেউ দেখাতে পারেনি । আপনি-ই বলেন, পেরেছে কেউ ? পারলে সেটা কেমন ? কে পেরেছে ?
এর কারন দেশে ভাল রাজনীতিবিদ বা, ভাল লিডারশিপের অভাবে আপনাদের মত হাজারো ছেলে শিবির হয়ে যাছ্ছে
- তার মানে, দেশের অন্য সব রাজনীতিবিদ বা লিডারের চাইতে তুলনামূলক হলেও শিবির ভালো ! এটুকুই এনাফ !
কোন দলকে ভাল না লাগলে কেন শিবির করতে হবে??
৬ নাম্বার মন্তব্যের জবাবে , লেখক বলেছেন: "------কিন্তু সত্যি কথা হলো, মুসলমানদেরকে আল্লাহ শুধু নামাজ পড়ার দায়িত্ব দেন নি । মুসলমানদের দায়িত্ব হচ্ছে, আমল বিল মা'রূফ, নেহি আনিল মুনকার- সৎ কাজের আদেশ দেয়া, অসৎ কাজ হতে সবাইকে দূরে রাখা । এটা আল্লাহর সরাসরি নির্দেশ-------"
এবং ১৩ নাম্বার মন্তব্যের জবাবে লেখক বলেছেন: ................যে ব্যক্তি ইসলামী সঙ্গঠন থেকে এক বিঘৎ দূরে সরে গেলো, সে নিজের গলা থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলল ।
....যে ব্যক্তি জাহেলিয়াতের নিয়ম-নীতির দিকে লোকদেরকে ডাকবে, সে জাহান্নামের জ্বালানী হবে - যদিও সে রোযা রাখে, নামাজ পড়ে এবং নিজেকে মুসলমান বলে মনে করে । আহমদ-তিরমীজী ।
- বিশ্ববিদ্যালয়তো শুধু পড়ালেখার জায়গা,তাই না ??
হ্যাঁ, ছাত্রদের মূল কাজ পড়াশোনা, কিন্তু দেখেন, পড়াশোনা করে আমরা কি শিখছি ? বেশি বিস্তারিত বলতে ইচ্ছা হচ্ছেনা, সংক্ষেপে বলে রাখি, আমাদের দেশে শিক্ষিত দুর্নিতীবাজ আর শিক্ষিত অসৎ লোক বেশি নাকি যারা অশিক্ষিত, তারা দুর্নিতীবাজ হয় ? -ভাবেন এটুকু শুধু ।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতার কোন পাঠ নাই , ইসলামী ছাত্রশিবির যতটা না মিছিল-মিটিং এর রাজনীতি করে, তার চেয়ে বহুগুন বেশি করে পড়াশোনার রাজনীতি । ছাত্রশিবিরের সুবিন্যস্ত সিলেবাস - প্রতিদিনকার রিপোর্ট বই মেইনটেইনিং , কুরআন শুদ্ধ করে পড়া আর বুঝা , পাঠ্য বই পড়ার পাশাপাশি শত শত নৈতিকতার গাইডলাইন খুজে পাবার বই পড়ার যে কর্মসূচী, সে সম্পর্কে কেউ একটু খোজ নিলেই বুঝবে, দেশের শ্রেষ্ঠ নাগরিকগুলো এই শিবির থেকেই তৈরী হচ্ছে প্রতিদিন, যারা কর্মজীবনে এতটুকু অবৈধ পন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করলেও শিবির তার যে বিবেক গড়ে দিয়েছে সেটা উদ্যত হয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে !
যে ছেলেটা আজ মারা গেল আপনাদের দল কি তাকে ফিরিয়ে দেতে পারবে? কেন আমরা আজ আমরা ভাই হয়ে ভাইকে মারছি??
- এই প্রশ্নের জবাব দেবার সাধ্য পৃথিবীর কারো নাই । কোন দোষ তো ছিলোনা নোমানী ভাইয়ের ! জীবনে কাউকে কষ্ট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ করার মত একটা লোক ও পাওয়া যাবেনা । ...........ছাত্রলীগ !! কী করলে তোমরা !! কত বড় অপরাধ করলে ! বিশ্বাস করো, আমরা কখনো কারো এতটুকু অমঙ্গল চাইনা । আমরা শিখেছি, এ পৃথিবীর চাইতে মৃত্যু পরবর্তী পৃথিবীর জীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই তোমাদেরকে ডাকছিলাম অন্ধকারের পথ ছেড়ে ইসলামের আলোর দিকে, ইসলামের শিক্ষা ও সেই শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগের দিকে , কিন্তু সেটা তোমাদের ক্ষণস্থায়ী দুদিনের দুনিয়ার স্বার্থবিরোধী হয়ে গেলো, আর আমাদের এত ভালো ভাইটাকে সরিয়ে দিলে ! তবুও তোমাদের ওপর আক্রোশ নাই, কায়মনে দোয়া করি, আল্লাহ যেন তোমাদের সবাইকে ইসলামের আলোকিত রাজপথে নিয়ে আসেন ইকরিমা ইবনে আবু জেহেল কিংবা আবু সুফিয়ানের মত করে হলেও !
লেখক বলেছেন: আমি আপনার কথা হেসে উড়িয়ে দেবো , এমন ধারনা হলো কেন ? :-( আমি কি আপনার প্রতিটা কথার গুরুত্ব সহকারে জবাব দেইনি ? আপনার এই অভিযোগটা থেকেই কি পরিস্কার হয়না, মানুষেরা অহেতুক বিনা কারনে আমাদের ওপর ভুল অভিযোগ চাপিয়ে দেয় !! যেসব শব্দ আমাদের ওপর আরোপ করলেন আপনার মন্তব্যে, প্রতিটা শব্দই এরকম আরোপিত শব্দ , ভিত্তিহীন । কতল/বাতেল... এধরনের শব্দ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোন কর্মী রসিকতা করেও কখনো উচ্চারন করেনা । শিবির যে কত কি হিংস্রতা দেখাতে পারে, তার শুধু নমুনার কথাই সারা জীবন শুনিয়ে গেলেন , একটা প্রমান ও দিতে পারলেন না । অভিযোগ করেন শিবির রগ কাটে, আর প্রমান হয় ছাত্রলীগ রগ কাটে , সমাজতন্ত্রী-নাস্তিকেরা লাল পতাকা উড়িয়ে গলা কাটে !
'তোমাদের মাঝে এমন একটি দল থাকতেই হবে যারা মানুষকে কল্যানের পথে ডাকবে, সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে'-আল-ইমরান :১০৪
এই আয়াতের নির্দেশ কি প্রতিটি মুসলমানের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য না ? ধরে নেই আমরা শিবিরের সমাপ্তি ঘটিয়ে দিলাম । এরপর কি হবে ? আল্লাহর কাছে কি জবাবদিহী দেবো ? নিশ্চয়তা দিতে পারবেন ? এরকম একটি দলের ? যারা আয়াতে উল্লেখিত তিনটি কাজ করবে !
আর, যদি সেটা হয়েই যায়, অবস্যম্ভাবীভাবে, সেই দলও তো শিবির হয়ে যাবে ! কারন, লক্ষ্য করুন, আয়াতে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশ আছে । আর , কুরআনের অন্য আয়াতে বলা আছে, কুরআনকে খন্ডভাবে মানা যাবেনা ! এখন, আপনি (দলবদ্ধ হয়ে) আয়াতে উল্লেখিত কাজগুলি একে একে করতে শুরু করেন । দেখবেন, প্রথম দুটি নির্দেশ মোটামুটি ইজিলি পালন করতে পারছেন, কিন্তু যখনি আপনি তৃতীয় নির্দেশটা পালন করতে যাবেন, হাজারো বাঁধার তীর আপনাকে ধ্বংস করে দিতে উদ্যত হবে সঙ্গে সঙ্গে ! কারন, ওই মুহুর্তে তাদের স্বার্থে বাধা পড়বে । ওরা তখন আর আপনার প্রথম দুটো মোটামুটি নিরীহ ভালোকাজের কথা মনে রাখবে না । যেমনটা হয়েছিলো, মক্কাবাসী প্রিয় রাসুল আলামীন ( সা: ) এর ক্ষেত্রে !
বাবা-মা - আত্মীয়-স্বজনের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে ইসলামে সুনিদৃষ্ট নির্দেশনা আছে ! আপনি হয়তো অবাক হবেন বা অবিশ্বাস করতে চাইবেন যে, একটা পরিবারে যদি পাঁচ সন্তানের একজন শিবির কর্মী হয়, অদ্ভূতভাবে সেই ছেলেটি বাবা-মায়ের সবচেয়ে প্রিয় সন্তান হয়, আত্মীদের সবচেয়ে আদরের হয় ! এটা এমনি এমনি হযনা ! ইসলাম নির্দেশিত ব্যবহার ওই শিবিরকর্মীটিই সবচেয়ে ভালো করতে পারে, কারন তাকে শেখানো হয় ইসলামের এই শিক্ষা । যেটা শেখানো উচিত ছিলো শিক্ষাব্যবস্থার সেটা শিবির শেখাচ্ছে তাকে !
রাসুল সা: এর হাদীস অনুযায়ী, ।ঈমানদার হবার অন্যতম শর্ত হলো, আল্লাহ ও তার রাসুলকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে ! অর্থাৎ আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ মেনে চলার পর অন্য হিসাব । এই নির্দেশ পালন করতে গিয়ে মক্কার সবচেয়ে সম্ভান্ত আর ব্যক্তিত্ব-সম্পন্না মায়ের সন্তান মুসাওয়াব রা: মাকে ছেড়ে মদীনায় হিজরত করে হয়ে যান ছিন্ন কাপর পড়া সবচেয়ে গরীব । আমরা কি রাসুলের সাহাবীদের এই আদর্শের কথা জানিনা !!
আলহামদুলিল্লাহ, অধিকাংশক্ষেত্রেই আমাদের বাবা-মায়েরা জানেন, ইসলামী আন্দোলনের মর্ম । তারা জানেন, কেন তার শিবিরকর্মী সন্তানটি সবচেয়ে সুন্দর ব্যবহার তার সাথে করতে পারে ! এই লিঙ্কটা থেকে কয়েকজন মায়ের মন্তব্য দেখতে পারেন, তাদের কলিজার টুকরা সন্তানের শাহাদাতের ব্যাপারে ।
গরীব ছেলেরা শিবির করে, বলতে চাচ্ছেন ? হতে পারে, এ নিয়ে আমাদের বিন্দুমাত্র হীনমন্যতা নেই । যদি নবী মুহাম্মাদ সা: এর আন্দোলনের কথা জানেন, তাহলে জানার কথা, ইসলামের আবির্ভাবের পরে যারা ইসলামকে প্রথমে গ্রহণ করেছিলেন, সেই অগ্রগামী সাহাবাদের অধিকাংশই ছিলেন মক্কার সবচেয়ে গরীব-দাস আর নি:স্ব মানুষেরা । আটাশে অক্টোবরের ঘটনা জানেন ? ঈদের ছুটি ছিলো তখন । ঢাকার বাইরে থেকে পড়তে আসা ভাইগুলো বাড়িতে চলে গেছে । সেই সময়ে পল্টনের মোরে শাহাদাতের রক্ত যাদের ঝরলো তারা সবাই ছিলো ঢাকা শহরের উচ্চবিত্ত ঘরের ভাইগুলো ! যাদের ঈদের ছুটিতে গ্রামে যেতে হয়না ! কারন স্বজনেরা রাজধানীতেই থাকেন !
এরপরও ইসলামী আন্দোলনের অনন্য সংগঠন, ছাত্রশিবিরে বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবেই ! এটা স্বাভাবিকতা ! সব যুগে ছিলো !
এব্যাপারে একটা গল্প আছে, অনেকটা এরকম , ভাতিজাকে চাচা কোন কারনে পছন্দ করেন না । ছেলেটা ইস্কুলে ভর্তি হলে চাচা বলেন, ভর্তি হয়েছে ঠিক, কিন্তু পাশ করতে পারবেনা ! ছেলেটা পাশ করে । স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় । চাচা বলেন, পাশ করেছে ঠিক, কিন্তু চাকরী পাবেনা ! এবার ছেলেটি চাকরীও পেয়ে যায় ! চাচা বলেন, চাকরী পেয়েছে ঠিক, কিন্তু বেতন হবেনা ও চাকরীর ! ছেলেটি মাসশেষে বেতন ও পেলো । বেতন পেয়ে মিষ্টি নিয়ে এলো চাচার সাথে দেখা করতে । চাচা খেপে গিয়ে বললেন , বেতন পেয়েছো ভাল কথা, মিষ্টি এনেছো কেন ? জানোনা আমি মিষ্টি খাইনা । কাজটা তুমি ভালো করলা না !